সামান্য সর্দি কাশি অথবা কাটা ছেড়া হলেই আমরা ওষুধের পেছনে ছুটি। আবার অনেকেই এরকম আছেন ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়ায় ওষুধের দোকানে গিয়ে ওষুধ কিনে খেয়ে নেন। এইভাবে ওষুধ কিনে খেলে হয়ত সেইসময় শরীর ঠিক হয়ে যায় কিন্তু পরবর্তী ক্ষেত্রে শরীরে অজান্তেই সৃষ্টি হচ্ছে জটিল রোগ।
কিন্তু আমরা যদি আমাদের বাড়ির বাগানের এদিক ওদিকে চোখ ঘোরায় তাহলে হাতের সামনেই রয়েছে এমন কিছু ওষধি গাছ যেগুলি প্রচুর গুনে সমৃদ্ধ। থানকুনি আমাদের দেশের খুব পরিচিত একটি ভেষজ গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ। এর ল্যাটিন নাম সেন্টালা আকিয়াটিকা। থানকুনি পাতা দেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। রোগ চিকিৎসার অঙ্গনে থানকুনি পাতার অবদান অপরিসীম। প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে বহু রোগের উপশম হয় এর ভেষজ গুণ থেকে। খাদ্য হিসাবে এই পাতা সরাসরি খেলে রোগ নিরাময়ে যথার্থ ভূমিকা রাখতে পারে। অঞ্চলভেদে থানকুনি পাতাকে টেয়া, মানকি, তিতুরা, থানকুনি, আদামনি, ঢোলামানি, থুলকুড়ি, মানামানি, ধূলাবেগুন, আদাগুনগুনি নামে ডাকা হয়।
আরও পড়ুনঃ বিভিন্ন রোগের মহৌষধ! জেনে নিন এই বিশেষ জাতের হলুদের গুনাগুন
এই পাতার রয়েছে বিভিন্ন গুন। সকালে খালি পেটে যদি এই পাতা দু একটাও খায় তাহলেও বিভিন্ন রোগ আপনার শরীর থেকে ১০ হাত দূরে থাকবে।
আরও পড়ুনঃ রহস্যময়ী লজ্জাবতী গাছের অবাক করা এই গুনগুলি জানেন?
উপকারিতা
থানকুনি পাতার রস ১ চামচ ও শিউলি পাতার রস ১ চামচ মিশিয়ে প্রতি দিন সকালে খেলে জ্বর সারে। অল্প পরিমাণ আমগাছের ছাল, আনারসের কচি পাতা ১টি, কাঁচা হলুদের রস, ৪/৫ টি থানকুনি গাছ শিকড়সহ ভালো করে ধুয়ে একত্রে বেটে রস করে খালি পেটে খেলে পেটের পীড়া ভালো হয়। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটা আরও বেশি কার্যকর।
আধ কেজি থানকুনি পাতার রস একত্রে মিশিয়ে প্রতি দিন সকালে ১ সপ্তাহ খেলে গ্যাস্ট্রিক ভালো হয়।বেগুন পেঁপের সাথে থানকুনি পাতা মিশিয়ে শুক্তো রান্না করে প্রতি দিন ১ মাস খেলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়। প্রতি দিন সকালে খালি পেটে ৪ চা চামচ থানকুনি পাতার রস ও ১ চা চামচ মধু/ মিশিয়ে ৭ দিন খেলে রক্ত দূষণ ভালো হয়।
যে সব বাচ্চা কথা বলতে দেরি করে অথবা অস্পষ্ট, সে ক্ষেত্রে ১ চামচ করে থানকুনি পাতার রস গরম করে ঠান্ডা হলে ২০/২৫ ফোঁটা মধু মিশিয়ে ঠান্ডা দুধের সাথে কিছু দিন খাওয়ালে সমস্যার সমাধান হয়। ২ চামচ থানকুনির রস সামান্য চিনিসহ খেলে সঙ্গে সঙ্গে খুসখুসে কাশিতে উপকার পাওয়া যায়। ১ সপ্তাহ খেলে পুরোপুরি ভালো হয়ে যাবে। প্রতি দিন সকালে ৫/৭ টি থানকুনি পাতা চিবিয়ে ৭ দিন খেলে আমাশয় ভালো হয়। অথবা, থানকুনি পাতা বেঁটে পাতার রসের সাথে চিনি মিশিয়ে দু’ চামচ দিনে দু’ বার খেলে আমাশয় ভালো হয়।