আমন্ড বাদাম। অত্যন্ত পুষ্টিকর এই বাদাম, খেলোয়াড় থেকে শুরু করে ব্যায়ামবিদ--সবারই অত্যন্ত প্রিয়। সকালে উঠেই এই বাদাম অনেকে মুখে পোড়েন স্বাস্থ্যোন্নতির আশায়। এছাড়াও আমন্ড বাদাম বিভিন্ন খাদ্য তৈরী করতেও ব্যবহার হয়। কেক, বিস্কিটের মতন খাদ্য বানানোর থেকে শুরু করে, বিভিন্ন হেলথিড্রিঙ্কস বানাতেও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলি এই আমন্ড বাদাম ব্যবহার করে। দোকানে আমন্ড বাদাম বিক্রি করে বেশ ভালো দাম পাওয়া যায়। এছাড়াও বাজারে এই বাদামের উর্দ্ধমুখী চাহিদা বাণিজ্যিক ভাবে বহু কৃষককে আমন্ড চাষ করতে আগ্রহান্বিত করে তুলেছে। এই বাদাম যেমন আমাদের ত্বক ও চুলের পুষ্টি যোগায় তেমনই স্বাস্থ্য উদ্ধারেও এই বাদামের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আমন্ড বাদামের ভূমিকা অপরিসীম।
বাড়িতে সহজেই আমন্ড বাদামের বীজ থেকে ছাড়া উৎপন্ন করা যায়। বাড়িতে বসেই যদি নিজের হাতে আমন্ড উৎপাদন করা যায়, তাহলে বাজার থেকে আমন্ড কেনার পয়সাও বাঁচবে, সাথে সাথে নিজ উদ্যোগে আমন্ডের ব্যবসাও শুরু করা যাবে। তাহলে জেনে নেওয়া যাক আমন্ডের বীজ থেকে চারা তৈরির নিয়মাবলী
আমন্ডের চারা তৈরির পদ্ধতি: (Method of making Seedlings)
প্রথমে একটা পাত্রে জল নিয়ে ১০-১২ টি আমন্ড প্রায় ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। সময় করে পাত্রের জল একবার বদলে দিতে হবে, যাতে বাদামে ফাঙ্গাস না পড়ে যায়।
১২ ঘন্টা পর লক্ষ্য করলে দেখা যাবে বাদামগুলি ফুলে উঠেছে। এবার কোকোপিট জলে ভিজিয়ে নিংড়ে বাক্সে রাখতে হবে। তার উপর বাদামগুলি ছড়িয়ে দিতে হবে। বাদামগুলির উপরে কোকোপিট স্তর আরেকবার দিয়ে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে আমন্ড চারা উৎপাদনের জন্য শীতল আবহাওয়া দরকার। কোকোপিটে রাখা বাদাম সমেত বাক্সটি তাই ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখতে হবে। সবসময় মাথায় রাখা উচিত, আমন্ডের বাক্সটি যাতে ডিপ ফ্রিজে না ঢোকানো হয়।
আমন্ডের অঙ্কুরোদ্গম হওয়ার জন্য কম করে ২০ থেকে ২২ দিন সময় লাগে। তবুও ফ্রিজ খুলে ১০-১২ দিন বাদে বাদামের তখনকার অবস্থা পরখ করে নেওয়া ভালো। বাদামগুলি মোটামুটি ২২-২৩ দিন বাদেই বপন যোগ্য হয়ে ওঠে।
বীজ রোপনের নিয়মাবলী: (Planting Process)
আমন্ডের বীজ রোপন করতে গেলে প্রথমে ৫০% এর মতো কোকোপিট নিতে হবে। এবার বাগানের মাটি, পারলাইট, বালি এবং কিছুটা কম্পোস্ট একসাথে মিশিয়ে বাকি ৫০% মিশ্রণ বানিয়ে নিতে হবে। মাটি, পারলাইট দিয়ে বানানো মিক্সচারে এবার বাকি কোকোপিটের মিশ্রণ মিশিয়ে নিতে
হবে। মনে রাখতে হবে প্রত্যেক টবে একটা করে বীজ পুঁততে হবে। টবে প্রথমে মাটির মিশ্রণ দিয়ে নিতে হবে, এবার একটা আমন্ডের বীজ নিয়ে সেই মাটিতে পুঁতে দিতে হবে, এবার সেই বীজের উপর এক ইঞ্চির মতন মাটির স্তর তৈরী করে টব বোজাতে হবে। এবার টব ছায়াতে রেখে তাতে জল দিতে হবে। মনে রাখতে হবে কখনোই যাতে আমন্ডের টব কড়া সূর্যালোকের নিচে না রাখা হয়।
আরও পড়ুন: Vegetable Planting Calendar: ১২ মাসে কোন ফসল কোন সময়ে চাষ করবেন?
আমন্ড গাছের দেখভাল: (Plant caring)
প্রত্যেক গাছের যেমন পরিচর্যায় সময় দিতে হয়, তেমনই আমন্ড গাছের দেখভালেও বিশেষ ভাবে সময় দেওয়া উচিত। এই গাছ ভালো রাখতে গেলে পর্যাপ্ত পরিমাণে নিমখোল এবং কম্পোস্ট সার প্রয়োগ করা উচিত। গাছকে সবসময় ছায়ায় রাখতে হবে। ছত্রাক যাতে না আক্রমণ করতে পারে তারজন্য নিমতেল ব্যবহার করা যেতে পারে। লক্ষ্য রাখতে হবে টবে যাতে আগাছা না জন্মায়। আগাছা জন্মালে সাথে সাথে সেগুলি যত্নের সঙ্গে হাত দিয়ে পরিষ্কার করে দিতে হবে।
আরও পড়ুন:Bio flock Fish Farming:বায়োফ্লক মাছ চাষে সাড়া জাগালেন ভাঙড়ের গৃহবধূ