অ্যালোভেরা বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচার জন্য নিয়ম করে খান কেউ কেউ। এ ছাড়া রূপচর্চার জন্যও এটি ব্যবহার করা হয়। বাজারে এখন সারা বছরই অ্যালোভেরা কিনতে পাওয়া যায়। তবে যারা নিয়মিত অ্যালোভেরা ব্যবহার করেন, তারা চাইলে এটি বাড়ির ছাদে টবে চাষ করতে পারেন। অ্যালোভেরার একটি পাতা থেকেই হবে গাছ। এটি চাষে খুব বেশি যত্ন নেওয়ারও প্রয়োজন নেই। এই নিবন্ধে টবে অ্যালোভেরা চাষ করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,
মাটি(Soil):
প্রায় সব ধরনের মাটিতেই অ্যালোভেরা চাষ করা যায়। তবে বেলে দোআঁশ মাটিতে অ্যালোভেরার চাষ সব থেকে ভালো হয়ে থাকে। তাই টবে চাষ করার ক্ষেত্রে বেলে দোআঁশ মাটি নির্বাচন করাই সব থেকে ভালো হবে।
টব নির্বাচন:
বাড়ির বারান্দা বা ছাদে অ্যালোভেরা চাষ করতে হলে মাঝারি আকারের টব বা ড্রাম নির্বাচন করতে হবে। এখন বাজারে প্লাস্টিকের টব পাওয়া যায়। এই ধরনের টব ব্যবহার করাই উত্তম হবে।
রোপনের সময়:
সারা বছর এলোভেরার চারা রোপন করা যায়। তবে ভালো ফলন পেতে আষাঢ় মাসের শুরুতে রোপন করাই ভালো।
আরও পড়ুন - Mixed Fish farming: জেনে নিন পুকুরে একইসাথে মলা ও তেলাপিয়া মাছের চাষ পদ্ধতি
বংশবিস্তার:
প্রথমে চাষের জন্য কয়েকটি অ্যালোভেরার পাতা সংগ্রহ করুন। খেয়াল রাখবেন যেন নিচের দিকের সাদা অংশটি থাকে পাতার সঙ্গে। এবার সাধারণ মাটির মাঝে গর্ত করে বসিয়ে দিন অ্যালোভেরার পাতা। জল দিয়ে ভিজিয়ে দিন মাটি। শেকড় গজাতে শুরু করলে বড় পাত্রে সরিয়ে দিতে পারেন পাতা। চাইলে একবারেও বড় টবে লাগাতে পারেন।
অন্য আরেকটি উপায়ে অ্যালোভেরার পাতা থেকে গাছ গজাবে। অ্যালোভেরার পাতা মাঝখান থেকে কেটে নিন ধারালো ছুরির সাহায্যে। দুই সপ্তাহ উষ্ণ স্থানে রেখে দিন পাতা। বাদামি রঙ হয়ে আসলে টবে লাগান। তবে নিচে যেন ছিদ্র থাকে সেদিকে লক্ষ রাখবেন।
ঝরঝরে মাটি দিয়ে দিন টবে। মাটির মাঝে অ্যালোভেরার পাতা গুঁজে পানি দিয়ে দিন। এমন জায়গায় রাখবেন যেখানে সরাসরি রোদ পড়ে। জল দিতে হবে প্রতিদিন। ৪ সপ্তাহের মধ্যেই বাড়তে শুরু করবে অ্যালোভেরা গাছ।
সার প্রয়োগ(Fertilizer):
টবের অ্যালোভেরা গাছ দ্রুত বৃদ্ধির জন্য প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করতে পারেন। সার তৈরির জন্য ৪ থেকে ৫টি ডিমের খোসা চূর্ণ করে নিন। মুঠোভর্তি আলুর খোসা, কয়েকটি কলার খোসা ও ডিমের খোসা দেড় লিটার জলে ভিজিয়ে রাখুন। পাত্র ঢেকে রাখবেন। ৩ দিন পর ফেনা উঠে গেলে মিশ্রণটি ছেঁকে জল আলাদা করুন। অ্যালোভেরা গাছে প্রতি ১৫ দিন পর পর এই জল দিন। দেখবেন আপনার অ্যালোভেরা গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
রোগবালাই ও দমন(Disease management system):
এই গাছের একটি প্রধান রোগ হচ্ছে পাতায় দাগ পড়া। এটা সাধারনত ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ। এই রোগ শীতকালে দেখা না গেলেও ফাল্গুন মাসে বেশি পরিলক্ষিত হয়। এতে পাতার ব্যপক ক্ষতি হয়। পাতার চেহারা নষ্ট হয়ে যাহ। এই রোগের আক্রমনে পাতার অগ্রভাগে আলপিনের মাথার মতন ক্ষুরদ দাগ পড়ে। সেখান থেকে আঠার মতো কষ বের হয়। ওই আঠা শুকিয়ে বাদামি দাগের সৃষ্টি করে। এভাবে আক্রান্ত গাছের পাতায় ধীরে ধীরে দাগ বড় হতে থাকে ও দাগের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। ছত্রাকনাশক প্রয়োগে তেমন ফল পাওয়া যায় না। ১৫ দিন পরপর চুন জলে গুলে স্প্রে করে এর থেকে পরিত্রান পাওয়া যেতে পারে।
এছাড়াও গাছের গোড়া পচা রোগের কারনেও গাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে থাকে। গাছের গোড়ায় জল জমে থাকলেও বা ভেজা থাকলে গোড়া পচা রোগ হয়। ছত্রাকনাশক স্প্রে করে এই রোগের থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন - Flower Farming: ফুল চাষে এই বিষয়গুলি না মানলে, লাভের বদলে হবে ক্ষতি