যদি কৃষক ফসল চাষের পাশাপাশি সর্পগন্ধা চাষ করেন, তবে তিনি চাষে ১লাখ টাকা পর্যন্ত লাভ করতে পারেন। সর্পগন্ধা ১৮ মাসের মধ্যে প্রস্তুত হয় এবং এটি একটি কার্যকরী ঔষুধ। সর্পগন্ধার ফল, বাঁশ, রুট সব কিছুই ব্যবহার করা যায়। বিহারের পূর্নিয়া জেলার জালালগড়-এর কৃষক জিতেন্দ্র কুশওয়াহা জানিয়েছেন যে, সেখানকার স্থানীয় কৃষকেরা জালালগড়-এর কে.ভি.কে কৃষি বিজ্ঞানীদের পরামর্শে চাষ করেন, যা তাদের আরও লাভজনক হয়। সর্পগন্ধা এক একর জমিতে প্রায় ২৫-৩০ কুইন্ট্যাল উৎপাদিত হয় এবং প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকা মূল্যে বিক্রি হয়। সর্পগন্ধার অনেক প্রজাতি রয়েছে এগুলির মধ্যে রাববোলফিয়া সারপেন্টিনা প্রধান। রাববোলফিয়া টিট্রাফিলাস আর একটি প্রজাতি যা প্রধানত ঔষধি উদ্ভিদ রূপে ব্যবহৃত হয়। সর্পগন্ধার মূল ঔষধ রূপে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া রেসরপিন, সরপেজিন, রোলভেনিন, আদি অ্যালকালাইড ইত্যাদি প্রজাতিও দেখা যায়।
চারা তৈরির পদ্ধতি-
এই উদ্ভিদটির বীজ তৈরি করতে হবে নার্সারিতে । মে এবং জুন মাস থেকে বীজ তৈরি করে রেখে পরে আগস্ট মাসে সেই বীজ বপন করতে হবে। এক হেক্টর জমির জন্য ৮-১০ কেজি বীজ প্রয়োজন। বীজ বপন করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অঙ্কুরোদগম হয়ে যায়। ২০-২৫ সে.মি. দূরত্বে ২ সে.মি গভীরে বীজগুলি বপন করতে হবে। ২ মাস পরে রোপণ পদ্ধতি শুরু করতে হবে।
কলম তৈরির পদ্ধতি-
সর্পগন্ধার কলমের জন্য কাণ্ডটি ২.৫ – ৫ সে.মি পুরু হতে হবে। ছোটো ছোটো টুকরো করে ৫ সে.মি গভীরে রেখে দিতে হবে। এর তিন সপ্তাহ পরে কাণ্ড বড় হয়ে গেলে সেটিকে ক্ষেতে রোপন করতে হবে। গাছটি তৈরির জন্য কাণ্ডটি ১৫-২০ সে.মি পুরু হতে হবে, ৪-৬ সপ্তাহের মধ্যে স্থায়ীভাবে এটি প্রস্তুত হয়ে যাবে এরপর এটিকে ক্ষেতে রোপন করতে হবে।
চাষের জন্য তাপমাত্রা-
১০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড – ৩৮ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত তাপমাত্রা সর্পগন্ধা চাষের জন্য উপযোগী। পর্যাপ্ত সময়কাল জুন থেকে আগস্ট মাস, সঠিকভাবে চাষের জন্য ১২০০-১৮০০ মিটার এলাকা প্রয়োজন। বীজ, কলম এবং রুটের দ্বারা সহজেই সর্পগন্ধার চাষ করা যেতে পারে। কৃষিক্ষেত্রে এটির চাষ করে খুব সহজেই কৃষকেরা লাভ করতে পারেন।
স্বপ্নম সেন (swapnam@krishijagran.com)