ভারত তথা সমগ্র বিশ্বে খাদ্যে, ঔষুধ তৈরিতে, মশলা হিসেবে লঙ্কা তার মৌলিক স্থান ধরে রেখেছে৷ এর বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে৷ দেশ, স্থান, জলবায়ু এসবের ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরণের লঙ্কার চাষ হয়ে থাকে৷ শুধু তাই নয়, যারা বাড়ির বাগানে, ছাদে, বারান্দায়, ব্যালকনিতে, ছোট ছোট ফুল, ফল, সবজি ফলাতে পছন্দ করেন তাঁদের কাছেও লঙ্কা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি গাছ৷
লঙ্কা এমন একটা ফসল যার মধ্যে ভিটামিন এ, বি, সি, ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফসফরাস এবং ক্যালসিয়াম থাকে। তাই স্যালাডে কাঁচা লঙ্কা বা তরকারিতে দেওয়া লঙ্কা খেলে বিশেষ উপকার হয়।
একসময় নাকি দক্ষিণ আমেরিকা থেকে ভারতবর্ষে লঙ্কার আমদানি হয়েছিল। দ্রুত তা জনপ্রিয়তা লাভ করে। আর মুর্শিদাবাদের বিখ্যাত বেলডাঙার লঙ্কার পর ভাঙড়ের লঙ্কা এখন দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কাতেও পাড়ি দিচ্ছে।
এটি এমন একটি গাছ যার চাষ সারাবছরই হয়ে থাকে৷ তবে মে-জুলাই বা শীতের সময়ে লঙ্কার চাষ করলে তার ফলন ভালো পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে৷ এই গাছ খুব বেশি বড় হয় না, তাই ছোট বা মাঝারি সাইজের টবে এটি আপনার বাড়ির বাগান, ছাদ যেখানে ইচ্ছে করতে পারেন৷ লঙ্কার ভালো ফলনের জন্য দোআঁশ মাটি নেওয়া যেতে পারে৷ এর সঙ্গে জৈব সার (Organic Manure), গোবর সার, এক চামচ পরিমাণ ইউরিয়া সার মেশানো যেতে পারে৷
টবে লঙ্কা চাষ (Chilli Cultivation) -
মাটি তৈরির প্রায় এক সপ্তাহ পর নার্সারি থেকে কিনে আনা ভালো চারাগাছে বা বীজ এতে লাগাতে পারেন৷ অথবা শুকনো লঙ্কার বীজ প্রায় ৬ ঘন্টা ভিজিয়ে ভালো করে শুকিয়ে বপন করা যেতে পারে৷ এতে অঙ্কুরোদ্গমে প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়৷ টবটির নীচে অবশ্যই একটি ছিদ্র করে দিতে হবে যাতে অতিরিক্ত জল নির্গত হয়ে যায় এবং এমন স্থানে রাখতে হবে যাতে তা পর্যাপ্ত আলো-বাতাস পায়৷ কিছুদিন পরে চারা বের হবে লঙ্কার৷
বাড়িতে টবেই যেহেতু লঙ্কার গাছ করছেন তাই নিজের মতো করে পরিচর্যা করতে পারবেন৷ রাসায়নিক সার বা কীটনাশক মুক্তও হবে এই গাছ৷ আপনি চাইলে বাড়িতে রান্নার সবজি কাটা হলে যে উচ্ছিষ্ট থাকে সেই সব খোসা পচিয়েও তা জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন৷ তবে নিয়ম করে জল দিতে হবে এবং তা যেন না জমে যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে৷
একটা লঙ্কা গাছের সঠিক পরিচর্যা করা হলে তা দু দফায় প্রায় ৫০-৮০টি লঙ্কা দিতে সক্ষম৷ জমিতে যারা বড় স্তরে লঙ্কার চাষ (Chilli Cultivation) করেন সেইসব লঙ্কা গাছকে বিভিন্ন রোগের সম্মুখীন হতে হয়, যেমন মূল পচা, পাতা পচা, ক্ষত বা ফল পচা, পাতা কুঁকড়ে যাওয়া, ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ প্রভৃতি৷
তবে বাড়ির টবে লঙ্কা গাছে তেমন রোগের প্রাদুর্ভাব না হলেও পিঁপড়ের আক্রমণ হতে পারে৷ এদের ঠেকাতে সাবান গুঁড়ো কম করে ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে৷ এভাবেই সহজেই বাড়িতে টবে লঙ্কা চাষ করতে পারেন৷
আরও পড়ুন - জানুন শীতকালীন পালংশাকের জাত এবং পালং শাক চাষের পদ্ধতি (Spinach Cultivation Methods)