ধনিয়া বীজ জাতীয় মশলাগুলির মধ্যে অন্যতম। ধনিয়া বীজ যেমন মশলা হিসাবে ব্যবহৃত হয়, তেমন এর পাতা বিভিন্ন রন্ধনে ও পদে সুগন্ধিকারক হিসাবে এবং স্যালাডেও ব্যবহার করা হয়। ধনিয়া বীজ ও পাতা ভেষজগুন সম্পন্ন, এছাড়াও ধনিয়া পাতাতে ভিটামিন-সি বিদ্যমান। এই ফসলটি পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র চাষ হতে দেখা যায়। প্রধান ফসল হিসাবে চাষ করার পাশাপাশি এটি অন্যান্য ফসলের সঙ্গে মিশ্র পদ্ধতিতে চাষ করেও অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।
অন্তর্বর্তী পরিচর্যা (Crop Care) -
প্রথম সার প্রয়োগের আগে বা চারা বেরোনোর পর ১০-১২ দিনের মাথায় লাইন থেকে অতিরিক্ত চারাগুলিকে কমিয়ে দিতে হবে, যাতে ডালপালা ও পাতার বৃদ্ধি ভালো হয়। বীজ-এর ক্ষেত্রে সারি-সারি বা চারা-চারার দূরত্ব ১০-১৫ সেমি রাখা প্রয়োজন।
প্রয়োজন অনুসারে জলসেচ দিতে হবে অন্তত ৩০-৬০ দিনের মাথায় এবং বীজ পূরষ্ঠ হওয়ার সময়। ফসলের সাথে আগাছার (Weed) প্রতিযোগিতা রোধ করার জন্য প্রয়োজনমত আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
পাতা সংগ্রহঃ
চারার বয়স ৩০-৩৫ দিন হলে পাতা সংগ্রহের উপযুক্ত হয়। সংগ্রহের সময় গাছের গোড়া থেকে ৫-৭ সেমি উপরে কাটতে হবে। প্রতিবার পাতা কেটে নেওয়ার পর জমিতে ৬-৭ কেজি ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়াও ১৯:১৯:১৯ @ ৫ গ্রাম/লিটার জলে গুলে স্প্রে করলেও ভাল ফল পাওয়া যায়। মোটামুটি ২-৩ বার পাতা সংগ্রহ করা যায়।
ফসল সংগ্রহঃ
ফসল বোনার ১০০-১২০ দিন পর বীজ ভালোভাবে পুরশ্তহি হলে এবং বীজের রং সবুজ থেকে হলদে হতে শুরু করলে ফসল কেটে নিতে হবে, না হলে বীজ ফেটে মাটিতে পড়ে যাবে। ছায়ায় রেখে শুকিয়ে নিয়ে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে বীজ আলাদা করতে হবে।
রোগ-পোকা নিয়ন্ত্রণঃ
গুঁড়ো রোগঃ
কপার-অক্সি-ক্লোরাইড @ ৪ গ্রাম/লিটার, সালফার @ ৩ গ্রাম/ লিটার ইত্যাদি জলে গুলে স্প্রে করতে হবে।
গোড়া পচাঃ
কপার-অক্সি-ক্লোরাইড @ ৪ গ্রাম/লিটার, স্ট্রেপটোসাইক্লিন @ ৪ গ্রাম/ ১০ লিটার বা ভালিডামাইসিন @ ২ মিলি/লিটার, অ্যাজাক্সিস্ট্রবিন ও টেবুকোনাজল @ ২ গ্রাম/ লিটার, ইত্যাদি জলে গুলে ব্যবহার করতে হবে।
পাতা কাটা পোকাঃ
ইমিডাক্লপ্রিড @ ০.২৫ মিলি/ লিটার, অ্যাসিটাপ্রিমিড @ ০.৫ মিলি/ লিটার, অ্যাসিফেট @ ০.৭৫ গ্রাম/লিটার, কার্বোসালফান @ ২ মিলি/লিটার একক বা মিশ্রন জলে গুলে প্রয়োগ করতে হবে।
জাবপোকাঃ
ডাইফেনথিউরন @ ০.৫ গ্রাম/ লিটার, থায়মিথস্কাম @ ০.৫ গ্রাম/ লিটার, ফিপ্রনিল @ ১ মিলি/ লিটার, স্পাইরোমেসিফেন @ ০.৫ মিলি/ লিটার জলে গুলে প্রয়োগ করতে হবে।
ফলনঃ
বিঘা প্রতি ২০০-২৫০ কেজি পাতা এবং ১৫০-২৫০ কেজি বীজ পাওয়া যায়।