অনুখাদ্যের অভাব জনিত কারণে ফসলে শারীরবৃত্তীয় বিঘ্ন ঘটে, ফলে গাছে এমন কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়, যেগুলি রোগের মত দেখতে হয়। এই সমস্যাগুলি দূরীকরণে অণুখাদ্য প্রয়োগ দরকার।
বোরনের অভাব জনিত লক্ষণ –
বাঁধাকপি ও ফুলকপির ফাঁপা কাণ্ড, ফুলকপির গোলাপী রঙ, আলু, বেগুন, মুলো, কপি ফেটে যাওয়া, টমাটো ও পেয়ারার ফলের গায়ে উঁচু দাগ, গাছের ডগা কালো হয়ে শুকিয়ে যাওয়া, মূলো ও বীটের ভিতরে কালো পচন, কুমড়ো জাতীয় ফসলে কান্ড ফাটা, সূর্যমুখীর চিটে দানা ইত্যাদি ।
প্রতিকার - অভাবী জমিতে জমি তৈরির সময় ৪ কেজি বোরক্স জৈব সারের সঙ্গে মিশিয়ে প্রয়োগ করা যেতে পারে। অন্যভাবে প্রতি লিটার জলে ২ গ্রাম বোরক্স বা ১ গ্রাম বোরিক অ্যাসিড গুলে ফসলের ১ ও ১.৫ মাস বয়সে যথাক্রমে ১০০ লিটার ও ২০০ লিটার মিশ্রণ/একর জমিতে পাতায় স্প্রে করতে হবে। লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া ফসলে এই মিশ্রণ ১৫ দিনের ব্যবধানে ২ বার প্রয়োগ করতে হবে।
জিঙ্কের অভাব জনিত লক্ষণ-
ধান গাছের মরচে রোগ, গমের হলদে সাদা পাতা, ভুট্টার সাদা পাতা, সর্ষের নীলচে বেগুনি পাতা, আলুর ব্রোঞ্জ রঙের পাতা, টমাটোর মোটা, ছোট ও কোঁচকানো পাতা, লেবুর ছোট ও বিকৃত ফল ইত্যাদি।
প্রতিকার - অভাবী জমিতে জমি তৈরির সময় একর প্রতি ১০ কেজি জিঙ্ক সালফেট জৈব সারের সাথে মিশিয়ে প্রয়োগ করা হয়। অথবা প্রতি লিটার জলে ০.৫ গ্রাম চিকলেটেড জিঙ্ক গুলে ১ ও ১.৫ মাস বয়সে যথাক্রমে ১০০ লিটার ও ২০০ লিটার মিশ্রণ/একর জমিতে পাতায় স্প্রে করতে হবে। লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া ফসলে এই মিশ্রণ ১৫ দিনের ব্যবধানে ২ বার প্রয়োগ করতে হবে।
মলিবডেনামের অভাবজনিত লক্ষণ –
ফুলকপির কাস্তের মত সরু পাতা, বাঁধাকপির পাতা মুড়ে কাপের মত আকৃতি, টমাটোর পাতা বেঁকে কাপের মত আকৃতি, আলুর পাতায় ফ্যাকাসে ছোপ, বেগুন, সূর্যমুখী, পেঁপের পাতার অংশ কমে যাওয়া ইত্যাদি।
প্রতিকার - অ্যামোনিয়াম মলিবডেট জৈব সারের সাথে মিশিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। অথবা প্রতি লিটার জলে ০.৫ গ্রাম অ্যামোনিয়াম মলিবডেট, ১ ও ১.৫ মাস বয়সে যথাক্রমে ১০০ লিটার ও ২০০ লিটার মিশ্রণ/একর জমীতে পাতায় স্প্রে করতে হবে। লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া ফসলে এই মিশ্রণ ১৫ দিনের ব্যবধানে ২ বার প্রয়োগ করতে হবে।
তথ্যসূত্র – রুনা নাথ
স্বপ্নম সেন (swapnam@krishijagran.com)