এবার AI এর সাহায্যে ছাগলের গর্ভধারণ করা হবে, জেনে নিন কীভাবে কাজ করবে এই প্রযুক্তি শীতকালে মাছ চাষ: জল ব্যবস্থাপনা এবং মাছের সঠিক যত্ন নেওয়া শিখুন! বাগমাল গুর্জরের সাফল্যের গল্প
Updated on: 28 April, 2021 12:47 PM IST
Fig plant (Image Credit - Google)

ভারত, আমেরিকা ও আফ্রিকা সহ অনেক দেশে ডুমুরের চাষ হয়। এই ফলটি সতেজ এবং শুকনো উভয় রূপেই ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও, পাকা ডুমুর মোরব্বা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। সাধারণত শীতকালীন এবং শুষ্ক জলবায়ুতে ডুমুর চাষ হয়ে থাকে। ভারতে তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, গুজরাট এবং উত্তর প্রদেশের কয়েকটি অঞ্চলে এর চাষ হয়।  

ভারতে ডুমুরের বেশ কয়েকটি জাত চাষ হয়। এর মধ্যে প্রধান জাতগুলি নিম্নরূপ যেমন,  ইন্ডিয়ান রোক, এলিফ্যান্ট ইয়ার, কৃষ্ণা, ওয়েপিং ফিগ, হোয়াইট ফিগ। অন্যান্য দেশের জাতের মধ্যে ব্রাউন টার্কি, ব্রান্সউইক এবং ওসবার্ন প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।

কোন মরসুমে চাষের উপযোগী -

অনেক জাতের বহু ডুমুর সারা বছরই বাজারে পাওয়া যায়। কিছু ডুমুর বেগুনি রঙের, কিছু সবুজ বা বাদামী। উষ্ণ আবহাওয়া ডুমুর চাষের পক্ষে অনুকূল বলে বিবেচিত হয়। মরুভূমির জলবায়ু এটির চাষের জন্য উপযুক্ত বলে মনে করা হয়। এর চাষের জন্য আদর্শ তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই উদ্ভিদ সাধারণত বসন্তে বপন করা উচিত। সাধারণত ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে উদ্ভিদ ফলধারণে প্রস্তুত হয়ে যায়। গ্রীষ্মের শেষার্ধে অথবা শরতে এই উদ্ভিদে ফল ধরতে শুরু করে।

এই ডুমুর ফলের উপরের আবরণ খুব পাতলা ও নরম এবং খেতে খুবই সুস্বাদু ও মিষ্টি। পাকা ফল সরাসরি খাওয়া যায়। তাছাড়াও পাকা ডুমুর দিয়ে জ্যাম, জেলি, চাটনি ইত্যাদি তৈরি করে খাওয়া যায়। পাকা ডুমুর শুকিয়ে বিভিন্ন রকমের খাবারে ব্যবহার করা যায়। কাঁচা ডুমুর সবজি হিসেবেও খাওয়া যায়। কার্বোহাইড্রেট, সুগার, ফ্যাট, প্রোটিন, থায়ামিন, রিবোফ্লাবিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন ছাড়াও বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ডুমুর। পুষ্টিগুণের পাশাপাশি ডুমুরের অনেক ঔষধী গুণও রয়েছে।

মিষ্টি ডুমুরের চাষ পদ্ধতিঃ

ছাদে মিষ্টি ডুমুরের চারা লাগানোর জন্য ১২-২০ ইঞ্চি মাটির টব বা কালার ড্রাম সংগ্রহ করতে হবে। ড্রামের তলায় ৩-৫ টি ছিদ্র করে নিতে হবে। যাতে গাছের গোড়ায় জল জমে না থাকে। টব বা ড্রামের তলার ছিদ্রগুলো ইটের ছোট ছোট টুকরা দিয়ে বন্ধ করে দিতে হবে। টব বা ড্রামের গাছটিকে ছাদের এমন জায়গায় রাখতে হবে যেখানে সবসময় রোদ থাকে। এবার ২ ভাগ বেলে দোআঁশ মাটি, ১ ভাগ গোবর, ২০-৪০ গ্রাম এসএসপি সার, ২০-৪০ গ্রাম পটাশ সার,এবং ২০০ গ্রাম হাড়ের গুড়ো একত্রে মিশিয়ে ড্রাম বা টবে জল দিয়ে রেখে দিতে হবে ১০-১২ দিন । অতঃপর মাটি কিছুটা খুচিয়ে দিয়ে আবার ৪-৫ দিন একইভাবে রেখে দিতে হবে । মাটি যখন ঝুরঝুরে হবে তখন একটি সবল সুস্থ মিশরীয় মিষ্টি ডুমুরের কাটিং চারা ঐ টব বা ড্রামে রোপন করতে হবে ।

চারা গাছটিকে সোজা করে লাগাতে হবে । সেই সাথে গাছের গোড়ায় মাটি কিছুটা উচু করে দিতে হবে এবং মাটি হাত দিয়ে চেপে চেপে দিতে হবে । যাতে গাছের গোড়া দিয়ে বেশী জল না ঢুকতে পারে । একটি সোজা কাঠি দিয়ে গাছটিকে বেধে দিতে হবে । চারা লাগানোর পর প্রথমদিকে জল কম দিতে হবে । আস্তে আস্তে জল বাড়াতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন গাছের গোড়ায় জল জমে না থাকে আবার বেশী শুকিয়েও না যায়।

ডুমুর গাছ অত্যন্ত তাড়াতাড়ি ফল দেয় । একটি ডুমুরের কাটিং চারা লাগানোর ৪/৫ মাস পর থেকেই ফল দিতে শুরু করে । তাই গাছ লাগানোর ২-৩ মাস পর থেকেই টবের গাছকে নিয়মিত অল্প অল্প খাবার দেওয়া প্রয়োজন। ১০-১৫ দিন অন্তর অন্তর সর্ষে খোল পঁচা জল প্রয়োগ করতে হবে। সর্ষের খোল গাছে দেওয়ার কমপক্ষে ১০ দিন আগে জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর সেই পঁচা খোলের জল পাতলা করে গাছের গোড়ায় দিতে হবে।

১ বছর পর টবের আংশিক মাটি পরিবর্তন করে দিতে হবে। ২ ইঞ্চি প্রস্থে এবং ৬ ইঞ্চি গভীরে শিকরসহ মাটি ফেলে দিয়ে নতুন সার মিশ্রিত মাটি দিয়ে তা ভরে দিতে হবে। মাটি পরিবর্তনের এই কাজটি সাধারণতঃ বর্ষার শেষ এবং শীতের আগে করলেই ভাল হয়। ১০-১৫ দিন অন্তর অন্তর টব বা ড্রামের মাটি কিছুটা খুঁচিয়ে দিতে হবে ।

আরও পড়ুন - Onion Farming - কন্দ পেঁয়াজের এই প্রজাতির চাষ করে আয় করুন অতিরিক্ত অর্থ

মিশরীয় মিষ্টি ডুমুরের বংশবিস্তার করার অনেক পদ্ধতি থাকলেও সবচেয়ে সহজ ও ভাল পদ্ধতি হল কাটিং । কাটিং পদ্ধতিতে বংশবিস্তারে শতকরা প্রায় ৯৮% চারাই টিকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে । কাটিং করার এক মাসের মধ্যেই চারা মূল টবে লাগানোর উপযুক্ত হয়। টবে কাটিং লাগানোর ৪-৫ মাসের মধ্যেই ডুমুর ফল পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন - জানুন উন্নত পদ্ধতিতে মাসকলাই এর চাষ কৌশল

English Summary: Earn extra money by cultivating figs at home
Published on: 28 April 2021, 12:47 IST