এই সার ১০০ শতাংশ জলে দ্রবনীয় হওয়ায় ধুয়ে মুছে বা উবে কোন প্রকারে অপচয় হয় না এবং ফসল পায় ১০০ শতাংশ খাদ্য। স্প্রের মাধ্যমে প্রয়োগ করা এই সার কিউটিকল ও পত্ররন্ধ্রের মধ্য দিয়ে পাতার কোষে কোষে পৌঁছে ফসলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দশার যথা – ফুল আসা, ফল ধরায় যথার্থ পুষ্টির যোগান দেয় ও ফসলের বিভিন্ন বিকাশ পর্যায়ে সাহায্য করে যা কৃষককে ফসলের উচ্চ ফলন পাওয়াকে নিশ্চিত করে। এই সার ফসলকে অনুর্বর মাটিতেও যথার্থ পুষ্টি দানের মাধ্যমে বাড়তি ফলন দিতে সাহায্য করে। ধান, ফুল, ডালশস্য, তৈলবীজ প্রভৃতি চাষে ইউরিয়া ফসফেট অত্যন্ত কার্যকরী, পক্ষান্তরে উচ্চলাভ যুক্ত ফসল ও পটাশ পছন্দকারি ফসল যথা সবজি, আলু, কচু, আদা, ওল, বাদাম, ফল ও অন্যান্য বাগিচা ফসলে এন পি কে ১৮ : ১৮ : ১৮ ফসলের ফলন ও গুণমান বৃদ্ধিতে বিশেষ কার্যকরী।
পশ্চিমবঙ্গে অনুসেচ ব্যবস্থার প্রচলন এখনো জনপ্রিয় হয়নি। স্বল্পমূল্যের অনুসেচ ব্যবস্থার প্রসার বিশেষত সবজি ও ফল চাষে একান্ত জরুরী। অনুসেচ বা বিন্দু সেচ ব্যবস্থার পরিকাঠামো গড়ে তুলে ১০০ শতাংশ জলে দ্রবণীয় সার গাছের গোড়ায় গোড়ায় শিকড়ের কাছে জলসেচের সাথে প্রয়োগ করতে পারলে জল ব্যবহারের কার্যকারিতা বৃদ্ধির সাথে সাথে সার ব্যবহারের উৎকর্ষতা অত্যন্ত উচ্চ মানের হবে, তাতে কমবে খরচ ও বাড়বে উৎপাদনশীলতা ও কৃষকের আয়।
১০০ শতাংশ জলে দ্রবনীয় সারের সংরক্ষণ ও প্রয়োগ বার্তা -
এই সার প্যাক করা ব্যাগে অনেক বছর মজুদ করা যায়, তবে খোলা ব্যাগ ব্যবহার করে ফেলতে হবে বা ব্যাগের মুখ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে অন্যথা সারের উপাদান নষ্ট হতে পারে বা আর্দ্রতা বৃদ্ধি পেতে পারে। দীর্ঘদিনের মজুতে সার জমে গেলেও এর মিশ্রণ যোগ্যতা, মৌল কণা উপাদানের পরিমাণ ও কার্যকারিতা অপরিবর্তিত থাকে। এই সার সকাল ১০ টার আগে ও বিকাল ৪ টের পরে স্প্রে করা বাঞ্ছনীয়। ঝোড়ো হাওয়া বা বৃষ্টির দিনে স্প্রে করা উচিত নয়। সারের সর্বোচ্চ শোষণ ও আত্তিকরণের জন্য স্প্রে-র সময় পাতার নীচের পৃষ্ঠতল সম্পূর্ণ ভিজানো দরকার। সঠিক মাত্রায় স্প্রে করা উচিত কারণ মাত্রা বেশি হলে ফসলের যেমন ক্ষতি হতে পারে তেমনি মাত্রা বা ঘনত্ব কম হলে স্প্রে অকার্যকর হবে। উপযুক্ত মাত্রা হল প্রতি লিটার জলে ১০ গ্রাম অর্থাৎ ১ শতাংশ।
ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও গুণমান উন্নত করার পাশাপাশি ১০০ শতাংশ জলে দ্রবণীয় সার পরিবেশবান্ধব ও অতি সহজে পাতায় স্প্রের মাধ্যমে প্রয়োগ করা যায় বলে এই সারের ব্যবহার কৃষকদের কাছে শীগ্ঘ্রই আবশ্যিক হয়ে দাঁড়াবে। পাতার মাধ্যমে শোষিত বা অনুসেচ সহযোগে ব্যবহৃত এই সার পাতার ক্লোরোফিল সংশ্লেষণ ও শর্করা উৎপাদন বাড়িয়ে উদ্ভিদের জল শোষণ ক্ষমতা বাড়ায় ফলে ফসলের পরিবহন তন্ত্রের মাধ্যমে পুষ্টি মৌল কণার আত্তিকরণের বৃদ্ধি ঘটে, ফসল পায় উপযুক্ত পুষ্টি।
রুনা নাথ(runa@krishijagran.com)