এই 20টি ব্যবস্থা পোল্ট্রি খামারকে বার্ড ফ্লু থেকে নিরাপদ রাখবে! ভার্মি কম্পোস্ট ইউনিটের জন্য ৫০% পর্যন্ত ভর্তুকি পাওয়া যাবে, শীঘ্রই আবেদন করুন এই হাইব্রিড জাতের টমেটো 900 কুইন্টাল প্রতি হেক্টর ফলন দেবে দুধের সঠিক সময় বেছে নিলে উৎপাদন বাড়বে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
Updated on: 20 April, 2021 10:21 AM IST
Mulberry (Image Credit - Google)

তুঁতের (Mulberry) বৈজ্ঞানিক নাম Morusnigra/Morus rubra. Moras indika. তুঁত গাছ আমাদের রেশম শিল্পের জন্য অপরিহার্য। এর আদিবাস চীনে। ভারত, বাংলাদেশ, এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন স্থানে তুঁতফলের চাষ হয়ে থাকে। তুঁতফলের জুস, জ্যাম জেলি হয়। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতন আমাদের দেশের  মাটিতে ও সুস্বাদু তুঁতফলের চাষ হয়।তুঁত ফল দেখতে অসম্ভব সুন্দর।  বসন্তের শুরুতে গাছে নতুন পাতা আসে। যে কোন ছোট টব বা পাত্র এমন কি পলিব্যাগে লাগালেও গাছ সুন্দর বেড়ে উঠে, যেন শুধু ফল দেয়ার জন্যই তার জন্ম। সারা বছরই ফল দেয়। অল্প দিনের মধ্যেই ফল পাকে। পাকা ফল রসালো এবং টক-মিষ্টি ।

গাছের বৈশিষ্ট্য -

  • তুঁত গাছের কাণ্ড থেকে উৎপন্ন মঞ্জরী দণ্ডের ছোট ছোট ফুলগুলি ঘন হয়ে ফুটে থাকে। 

  • পুরুষ ও স্ত্রী ফুল আলাদা। 

  • তুঁত গাছের পাতা ডিম্বাকার, চমৎকার খাঁজযুক্ত এবং অগ্রভাগ সুঁচালো।

  • ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে ফুল আসে এবং মার্চ-এপ্রিলেই ফল পাকে।

  • তুঁত ফল প্রথম অবস্থায় সবুজ, পরে লাল এবং সম্পূর্ণ পাকলে কালো রং ধারণ করে।

এক সময় গ্রামে প্রচুর তুঁত গাছ দেখা যেতো। তুঁত গাছের পাতা রেশম পোকার মথকে খাওয়ানো হয়, যার লালা থেকে রেশম তৈরি হয়। রেশম পোকার তৈরি বাসা বা গুটি নানাভাবে প্রক্রিয়া শেষে তা থেকে তৈরি হয় রেশমি সুতা। এই সুতায় তৈরি হয় সিল্ক বা রেশমি কাপড়।  তুঁত কখনও ফলের জন্য চাষ করা হয় না। রেশম পোকার খাদ্যের জন্যই তুঁত গাছের চাষ হয়ে থাকে। 

এই তুঁত বা মালবেরিকে ‘ব্ল্যাক বেরি’ বলে চড়া দামে চারা বিক্রি করা হয়। এখন অনেক বাসার ছাদেও শোভা পাচ্ছে তুঁত গাছ। শালিক, টিয়া, বুলবুলি, টুনটুনি ও অনেক পাখিরই খুব প্রিয় ফল তুঁত।

ঔষধি গুন-

এই ফলের বেশ কিছু ঔষধি গুণও রয়েছে। 

যেমন- পাকা ফলের রস বায়ু, পিত্ত, কফ ও জ্বরনাশক। তুঁত গাছের ছাল ও শেকড়ের রস কৃমিনাশক। এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য পাকা তুঁতফল বেশ উপকারী। অবশ্য বেশি খেলে ডায়রিয়া হতে পারে।

তুঁত ফল - 

ক্যানসার প্রতিরোধী ফল তুঁত। এই ফল এবং গাছের পাতা ও শেকড়ের স্যাকারাইড মানবদেহে রক্তে শর্করা কমিয়ে স্বাভাবিক মাত্রায় আনতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। আমাদের দেশে তুঁতের নতুন যে জাত আনা হয়েছে তাতে ছোট অবস্থাতেই ফল ধরে এবং সারাবছর ফলন হয়।

তুঁত গাছের বাকল দিয়ে প্রাচীনকালে কাগজ তৈরি হতো। পাতা, ফল ও কাঠের বিবেচনায় তিনটি ভ্যারাইটি আছে তুঁতের। রেশম পোকার খাদ্য হিসেবে পাতার জন্য যে গাছের চাষ হয় তার কাণ্ড খুবই নরম। বাংলাদেশের আবহাওয়া অনুযায়ী আশ্বিন-কার্তিক মাস তুঁত গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময়।

তুঁত চাষ-

দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটিতে তুঁত গাছ খুব ভালো জন্মে। এছাড়া উঁচু ও সমতল জমিতেও তুঁত চাষ ভালো হয়। আবহাওয়া ও উর্বর মাটির জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় সবচেয়ে বেশি তুঁত চাষ হয়। আমাদের দেশের বিভিন্ন জেলায় সাদা তুঁত, কালো তুঁত ও লাল তুঁত- এই তিন প্রজাতির গাছের ওপর নির্ভর করে রেশম পোকার চাষ করা হয়।

সাদা তুঁত গাছই রেশম পোকার সবচেয়ে পছন্দের। তুঁত গাছ একবার লাগালে ২০-২৫ বছর ধরে পাতা দেয়। গাছের উচ্চতা ৬ ফুট হলেই কেটে দিতে হয় যেন গাছে পাতা বেশি হয়। বিভিন্ন উচ্চতায় ছেঁটে দিয়ে তুঁত গাছকে ‘ঝুপি’, ‘ঝাড়’ ও ‘গাছ তুঁত’ আকার দেয়া যায়।

বীজ থেকে তুঁত গাছের চারা হয়। তবে আমাদের দেশে কলম করে এবং কাটিং করে তুঁত গাছের চারা তৈরি করা হয়। প্রতি বিঘা ‘ঝুপি’ তুঁত থেকে ১০০-১২০ মণ পাতা পাওয়া যায় এবং এই পাতা থেকে বছরে ১৪৯-১৮৬ কেজি রেশম গুটি উৎপন্ন করা যায়। সাধারণত একটি তুঁত গাছের জন্য একটি ডিম প্রয়োজন।

ডিম হতে পুল রেশম পোকা বের হওয়ার ২৫ দিনের মধ্যে গুটি তৈরি করে এবং ২৫ দিন পর্যন্ত পুল পাতা খেতে থাকে। একটি রেশম মথ থেকে ৫০০ রেশম পোকা জন্ম নিয়ে গুটি তৈরি করে। ফলে ১ কেজি ভালো মানের গুটি পেতে হলে ৬০০-৭০০টি ভালো মানের রেশম পোকার প্রয়োজন। প্রতি কেজি গুটি ২৩০-২৪০ টাকা দরে বর্তমানে সূতা কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হয়।

আরও পড়ুন - চাষের জমিতে পেঁয়াজ চাষের মৌপালনের মাধ্যমে কৃষক বন্ধুরা করুন দ্বিগুণ আয়

তুঁত ফল সংগ্রহ-

তুঁত গাছ থেকে উন্নত মানের রেশম গুটি সংগ্রহ করতে চাইলে এই গাছের সেচ ব্যবস্থার দিকে নজর দিতে হবে। বর্ষা মৌসুমে উপযুক্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা এবং শুষ্ক মৌসুমে পর্যাপ্ত পরিমাণে সঠিক উপায়ে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে।

আরও পড়ুন - মালটা ফসলে রোগ পোকা ও তার নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

English Summary: Know the properties of mulberry and its cultivation method
Published on: 20 April 2021, 10:21 IST