Fabaceae পরিবারের অন্তর্ভুক্ত মেথি (Trigonella faenum-graecum) উদ্ভিদটি উচ্চ পুষ্টিগুণে ভরপুর। পটাসিয়ামে সমৃদ্ধ এই মেথিতে ২০ শতাংশেরও বেশি ক্রুড প্রোটিন রয়েছে, এমনটা বহু উদ্ভিদের ক্ষেত্রেই খুব একটা দেখা যায় না। বলা বাহুল্য, আমাদের খাদ্যে এ জাতীয় প্রোটিন উপাদান অনুপস্থিত থাকে। কারণ ঘটনাচক্রে আমাদের খাদ্যতালিকায় খুব কম পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার মেলে।
প্রাচীনকাল থেকেই শরীর সুস্থ রাখতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রূপে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, পাশাপাশি রান্নার স্বাদ-গন্ধ বাড়াতেও মেথি কিন্তু অদ্বিতীয়। আয়ুর্বেদশাস্ত্র অনুযায়ী, মেথি জলে ভিজিয়ে খেলে শরীর ঠাণ্ডা থাকে। তবে শুধু শরীর ঠাণ্ডা রাখাই নয়, এই পুষ্টিকর গুণাবলীর এবং এর ঔষধি গুণাবলী মানবদেহে প্লাজমা গ্লুকোজ স্তর হ্রাস করার এবং প্রচলিত লিপিড স্তরের ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষমতা সহ অন্যান্য শারীরবৃত্তীয় সুবিধা প্রদান করে।
আর মেথির চাহিদা বাজারে সারাবছরই ভালো থাকে, তাই মেথি চাষ করা খুবই লাভজনক ও এই চাষের খরচও অস্বাভাবিক রকম কম, এতে রোগ-পোকার আক্রমণও তেমন বড় একটা হয় না। মেথি শাক অতি উপাদেয় ও বেশ জনপ্রিয় খাদ্য। মোটামুটি সব ধরনের মাটিতেই মেথি চাষ করা যায়। বিঘে প্রতি ৫-৬ কুইন্টাল জৈব সার প্রয়োগ করে ৩-৪ বার ভালো করে চাষ ও মই দিয়ে নিতে হবে এবং যথেষ্ট পরিমানে জো না থাকলে হালকা করে সেচ দিয়ে মাটিতে জো আনতে হবে, অতঃপর মাটি তৈরি হয়ে গেলে বীজে ছত্রাকনাশক মিশিয়ে বীজ বুনতে হবে, বীজ বোনার ৩০-৬০ দিন পর জমিকে আগাছামুক্ত করতে হবে ও পাশাপাশি ২ কেজি হারে নাইট্রোজেন চাপান সার হিসাবে প্রয়োগ করে হাল্কা সেচ দিতে হবে। মেথির চাষে রোগপোকার আক্রমণ প্রায় নেই। পাতা শুকোতে আরম্ভ করলে গাছ তুলে খামারে ভালো করে শুকিয়ে ঝাড়াই মাড়াই করে দানা সংগ্রহ করতে হবে।
স্বল্প ব্যয়যুক্ত উচ্চ বাজার মূল্য রয়েছে এমন উদ্ভিদ চাষ দেশের সকল কৃষকদের জন্য উপকারী। এমনকি মেথির শুষ্ক উদ্ভিদ অর্থাৎ কাসৌরি মেথিও বাজারে উচ্চ মূল্য বিক্রয় হয়। সুতরাং, আমাদের কৃষকরা অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত সুবিধার জন্য আবর্তনীয় শস্য হিসাবে ব্যাপকভাবে মেথি চাষ করতে পারেন।
তথ্যসূত্র – ড. প্রতাপ কুমার মুখার্জী
Image source – Google
Related link - (Fenugreek) রোজ সকালে মেথি ভেজানো জল খান আর সমস্যা থেকে পান মুক্তি