মাল্টা লেবু সাইট্রাস জাতীয় একটি ফল। এতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি রয়েছে। মাল্টা লেবু অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি ফল। প্রায় সব স্থানে এর চাষাবাদ করা যায় বলে কমলা লেবুর চেয়ে এর চাহিদা বেশি।
জলবায়ু ও মাটি(Climate& soil):
মাল্টা লেবু চাষের জন্য উষ্ণ জলবায়ু বিশেষ উপযোগী। বৃষ্টিপাতের পরিমান যখন কম থাকে তখন মাল্টা লেবু চাষ ভালো হয়। বেশি বৃষ্টির ফলে মাল্টা লেবুর ফলের গুনগত মান কমে যায়। এর ফলে মাল্টা লেবুর খোসা পাতলা হয় এবং ফল নিম্ন মানের হয়ে থাকে।
প্রায় সব ধরনের মাটিতেই মাল্টা লেবু চাষ করা যায়। তবে জমি সুনিষ্কাশিত হতে হবে এবং মাটি উর্বর হতে হবে। মাল্টা লেবু চাষে মাটি কিছুটা ক্ষারীয় হতে হয়।
বংশবিস্তার:
মাল্টা লেবু গাছ সাধারনত বীজ ও কলমের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করে থাকে। তবে কলম থেকে তৈরি করা চারার গুনগত মান ভালো হয়। বীজ থেকে চারা তৈরি করলে অনেক সময় আবহাওয়ার সাথে খাপ খাওয়াতে পারে না। গাছ বেশি দিন টিকে থাকতে পারে না। কলম থেকে তৈরি করা চারায় মাতৃগাছের গুনাগুন বজায় থাকে।
রোপন পদ্ধতি:
চারা বা কলম রোপন করার সময় জমিতে ষড়ভূজ বা বর্গাকার পদ্ধতিতে রোপন করতে হবে।
আরও পড়ুন - Indian Jujube Farming: দেখে নিন কুল চাষের সঠিক পদ্ধতি
সময়:
বৈশাখ মাসের মাঝামাঝি থেকে ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত মাল্টা লেবুর চারা রোপন করার উপযুক্ত সময়। তবে জমিতে জল নিকাশের সুব্যবস্থা থাকলে সারা বছর ই চারা রোপন করা যায়।
মাদা তৈরি:
চারা রোপন করার ১৫-২০ দিন পর চারা বা কলম গর্তে রোপন করতে হবে। রোপন করার সময় খেয়াল রাখতে হবে চারা যেন গর্তের মাঝখানে থাকে। চারা রোপন করার পর খুটি দিয়ে দিতে হবে। প্রয়োজনে সেচ দিতে হবে।
সার প্রয়োগ:
১-২ বছর বয়সী গাছে ১০-১২ কেজি গোবর সার, ইউরিয়া ২০০-৩০০ গ্রাম, টিএসপি ১০০-১৫০ গ্রাম,এমওপি ১০০-১৫০ গ্রাম দিতে হবে। ৩-৪ বছর বয়সী গাছে ১২-১৫ কেজি সার, ইউরিয়া ৩০০-৪৫০ গ্রাম, টিএসপি ১৫০-২০০ গ্রাম, এমওপি ১৫০-২০০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হবে। গাছের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে সারের পরিমান বাড়বে। সার মোট তিন কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে। বর্ষার শুরুতে ২ বার এবং বর্ষার পরে এক বার সার প্রয়োগ করতে হবে। সার প্রয়োগ করার পর জমিতে সেচ দিতে হবে।
আগাছা দমন:
জমিতে নিয়মিত নিড়ানি দিতে হবে। জমি যেন আগাছা মুক্ত থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।সাধারনত বর্ষাকালের পর জমিতে মালচিং করে দিলে জমির আগাছা দমন হয় এবং মাটিতে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা ও বজায় থাকে।
ফল সংগ্রহ:
ফল পরিপক্ক হলে তা সংগ্রহ করতে হবে। ফলের রঙ যখন গাঢ় সবুজ বর্ণ থেকে হালকা সবুজ বর্ণ ধারন করবে তখন বুঝতে হবে ফল সংগ্রহ করার সময় হয়েছে। প্রতি গাছ থেকে প্রায় ৩০০-৪০০ টি ফল সংগ্রহ করা যায়। প্রতি হেক্টরে ফলন হয় প্রায় ২০ টন।
আরও পড়ুন -Karamcha Farming: এই পদ্ধতিতে করমচা চাষে ফলন হবে দ্বিগুন