এই 20টি ব্যবস্থা পোল্ট্রি খামারকে বার্ড ফ্লু থেকে নিরাপদ রাখবে! ভার্মি কম্পোস্ট ইউনিটের জন্য ৫০% পর্যন্ত ভর্তুকি পাওয়া যাবে, শীঘ্রই আবেদন করুন এই হাইব্রিড জাতের টমেটো 900 কুইন্টাল প্রতি হেক্টর ফলন দেবে দুধের সঠিক সময় বেছে নিলে উৎপাদন বাড়বে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
Updated on: 17 February, 2021 2:57 PM IST
Money Plant Cultivation (Image Credit - Google)

মানি প্লান্ট Araceae পরিবারের গাছ ।এরা নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ার সাথে বেশ ভালো খাপ খাইয়ে নিতে পারে। এছাড়াও বর্তমানে আমাদের দেশের আবহাওয়ার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারছে।

আন্তর্জাতিক সংস্থা 'নাসা'র তথ্য অনুসারে  ১০ টি বায়ু শোধনকারী উদ্ভিদ এর মধ্যে মানি প্লান্ট উদ্ভিদ অন্যতম কারণ এটি বায়ুমণ্ডলে থাকা বিষাক্ত পদার্থ নষ্ট করে ফেলে। এছাড়াও এটি সুপ্রসন্ন ভাগ্যর চিহ্ন হিসেবে পরিচিত।মানি প্লান্ট গুড লাক ট্রি, সিলভার ভাইন, ত্যারো ভাইন, হান্টারস রোব, সোলোমন আইল্যান্ড আইভি এবং ডেভিলস আইভি নামে পরিচিত।

এটি বিশ্বাস করা হয় যে,যে ঘরে মানি প্লান্ট আছে সে ঘরের সম্পদ বৃদ্ধি পায়।তাই অনেকে এটি ঘরের টবে লাগিয়ে রাখেন।

বাজার থেকে আপনি এর চারা কিনে আনতে পারেন বা প্রতিবেশীর গাছ হতে কিছু অংশ তুলে নিয়ে রোপণ করলেই এটি গজাবে। মানি প্লান্ট উদ্ভিদ লাগানোর পর এর জন্য উপযুক্ত পরিবেশে এর যত্ন-আত্তি শুরু করতে হবে। এরা এতোই ঘরোয়া যে এদের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য কোনপ্রকার সার লাগবে না!

কৃষকেরা মানি প্লান্ট উদ্ভিদ বায়ু পরিষ্কারক হিসেবে চাষ করেন। ব্যবসায়ে অত্যাধিক লাভ এর আশায়  বাড়িতে, অফিসে, বিপণন কেন্দ্র গুলোতে মানি প্লান্ট রাখা হয়। আপনি যদি এর সঠিক উপায় যত্ন সম্পর্কে জানেন তবে খুব সহজেই এর যত্ন-আত্তি নিতে পারবেন।

বীজের জাত নির্বাচন:

মানি প্লান্ট উদ্ভিদের বীজ বাজার থেকে কিনে পটে লাগাবেন। এছাড়াও আপনার বন্ধুদের থেকে কিংবা আপনার প্রতিবেশীর কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করতে পারবেন.বীজ বপন করার আগে খেয়াল রাখতে হবে যে বীজগুলো যেন ভেজা না হয়, পুরোপুরি শুকনো ও পরিষ্কার হতে হবে। পরিষ্কার করার জন্য উষ্ণ তোয়ালে ব্যবহার করতে হবে। এরপর বীজ পট কিংবা কন্টেইনারে বপন করুন।

মাটি এবং পাত্র নির্বাচন:

এমন একটি পট নির্বাচন করুন যাতে মানি প্লান্ট হেলে  পড়ে না যায়। ঘরোয়া উপায়ে মানি প্লান্ট লাগাতে চাইলে ৬ ইঞ্চির একটি পট নিন। শুরুতে আপনি চাইলে মাটি, সিরামিক বা প্লাস্টিকের পট নিতে পারেন। পরবর্তীতে যখন গাছটি বড় হবে ও তখন বড় পট ব্যবহার করবেন।

Epipremnum aureum গাছটি সাধারনত নিরপেক্ষ পিএইচ এর মাটি পছন্দ করে যার রেঞ্জ ৬-৭.৫ এর মধ্যে হয়। খুবই অল্প সংখ্যক গাছ ৯-১১ পিএইচ এর মাটিতে টিকে থাকতে পারে।আপনি চাইলে অধিক পরিমাণে পটিং মাটি মিশিয়ে নিতে পারেন যাতে পাট মস বা পারলাইটের পরিমাণ বেশি থাকে।

মানিপ্ল্যান্টে জল দেওয়ার নিয়ম - 

যখনি গাছের সামান্য উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে তখনি প্রতিদিন অল্প পরিমাণে গাছে পানি দিন। যখন গাছটি বড় হবে তখন প্রতি সপ্তাহে ২/৩ ইঞ্চি পানি শোষণ করতে পারে যখন মাটি পুরোপুরি শুকনো থাকে।

গাছ দ্রুত বৃদ্ধি হয় যদি আপনি ঘরের তাপমাত্রায় এটিকে রাখতে পারেন। মানি প্লান্ট ঠান্ডা আবহাওয়ার চেয়ে গরম আবহাওয়া বেশি সহ্য করতে পারে। ঘরোয়া মানি প্লান্টের জন্য ৭২ফারেনহাইট হল উপযুক্ত তাপমাত্রা। যদি তাপমাত্রা ৫৫ ফারেনহাইটের নিচে নেমে যায় তবে গাছের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়।

রোগ:

পুষ্টি জনিত ঘাটতি

১.ক্যালসিয়াম - অভাবে পাতা কুঁকড়ে হুকের মত হয়ে যায়,পাতার চূড়া মারা যায়।

২.নাইট্রোজেন - পাতা বুড়িয়ে যায়, ফলিয়েজ হালকা সবুজ, হলুদ কান্ড।

৩.ম্যাগনেসিয়াম -ধীর গতিতে বৃদ্ধি হয়,হালকা হলুদ পাতা, পাতায় গাড় দাগ পড়ে।

৪.ফসফরাস - ছোট পাতা,লালাভ বেগুনি রঙের ছাপ, বয়স্ক পাতা কালো হয়ে যায়।

৫.পটাশিয়াম - পাতায় পোড়া ভাব, পাতার শিরার মাঝে হলুদ হয়ে যায়।

৬.সালফার - ধীর গতিতে বৃদ্ধি, হালকা হলুদ রঙের পাতা।

কিছু বিষয় আছে সে জন্য মানি প্লান্ট উদ্ভিদের বৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেমনঃ পর্যাপ্ত পরিমাণে সূর্যালোক না পাওয়া, কম বা বেশি পানি দেয়া, খনিজ পদার্থের ঘাটতি ইত্যাদির জন্য গাছে পাতা হলুদ হয়ে যায়, পাতা অকালে ঝরে পড়ে যায়, পাতার চূড়ায় বাদামী রঙ হয় । এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ভাল জৈব সার ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও পাতাকে নিমের তেল দিয়ে মুছে দিতে হবে।

গাছ কাটছাঁট করা এবং পুনরায় পটিং করা:

মানি প্লান্ট উদ্ভিদ কাটছাঁট করার উপযুক্ত সময় হল শীতকাল, তবে এটি করা আসলে খুব একটা জরুরী না! আপনি যদি দুর্বল ও ছোট পাতা ছেঁটে ফেলে নতুন সতেজ পাতা গজাতে চান তবে বছরে একবার না করে, যেকোনো সময় কাটছাঁট করতে পারেন ।

বসন্ত কিংবা গ্রীষ্মে গাছকে পুনরায় পটিং করুন কারন এ সময়ে গাছ খুবই দ্রুত বৃদ্ধি পায়। যেহেতু গাছ প্রতি বছর বড় হয় তাই আপনাকে প্রতি বছরই বড় পটে স্থানান্তর করতে হবে।

সার প্রয়োগ:

বসন্ত ও গ্রীষ্মে প্রতি ২ সপ্তাহে একবার সার প্রয়োগ করতে হবে। মানি প্লান্টের বৃদ্ধির হার একে যে পটে রাখা হয় সে পটের আকৃতির উপর নির্ভর করে। এছাড়াও তরল NPK সার, জৈব সার বা গোবর দিতে পারেন। তবে ডিমের খোসা, ইপসম লবণ এবং বেকিং সোডা এর বৃদ্ধির জন্য খুবই উপকারী ।

কখনোই এর বৃদ্ধির সময় ব্যতীত সার প্রয়োগ করবেন না এতে করে হিতে বিপরীত হতে পারে। গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। সঠিক পরিমাণে ও সঠিক সময়ে সার প্রয়োগ করতে হবে।

মানিপ্ল্যান্টের পরিচর্যা:

২-৩ বছর পর পর পাত্র বদলাবেন। আগাছা ছেঁটে দিলে গাছ সুন্দর দেখাবে। শীতকালে গাছের অধিক পরিমাণে পানি দরকার নেই তাই কম পানি দিলেও চলবে। গাছ শুকিয়ে গেলে গাছের গোড়ায় ভিজে খড়,পাতা দিবেন ।গাছকে যতোটা সম্ভব সূর্যালোকের কাছে রাখতে হবে। তবে অত্যাধিক গরম বা ঠান্ডা পরিবেশে রাখা যাবে না।

আরও পড়ুন - জানুন উচ্ছে বা করলা চাষের জন্য কি কি করণীয় (Bitter Gourd Farming)

English Summary: Method of planting Money plant plants at home through proper care
Published on: 17 February 2021, 02:46 IST