Weather Update: ঝেঁপে নামবে বৃষ্টি! শনিবার থেকেই আবহাওয়ার আমূল পরিবর্তনের পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের “ট্র্যাক্টর কে খিলাড়ি” কৃষকদের 51 হাজার টাকা পর্যন্ত পুরস্কার “মিলিওনেয়ার ফার্মার অফ ইন্ডিয়া অ্যাওয়ার্ডস 2024” এবার জুরির সভাপতিত্বে নীতি আয়োগের সদস্য অধ্যাপক রমেশ চাঁদ
Updated on: 18 June, 2020 12:46 PM IST

আমাদের পশ্চিমবঙ্গ ধান উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও বর্তমান সময়ে বিঘা প্রতি ফলন একদম স্থিতিশীল কোথাও বা নিম্নমুখী। এর কারণ একাধিক। অবৈজ্ঞানিক ভাবে সার প্রয়োগের, জৈবিক ক্রিয়ার অবক্ষয়, মাটির উর্বরতা হ্রাস, ক্রমবর্ধমান গৌণ খাদ্য ও অনুখাদ্যের ঘাটতি এবং একই ফসল চক্র ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে ফসলের ফলন হ্রাস পাচ্ছে। তবে সঠিক পদ্ধতিতে চাষ করলে কৃষকের লাভ অবশ্যম্ভাবী। গুণমানের ফলন পেতে চারা রোয়া ও সার প্রয়োগ গুরুত্বপূর্ণ একটি পর্যায়। ধান চাষে কৃষকদের লাভের দিশা দেখাচ্ছেন কৃষি বৈজ্ঞানিক।

চারা রোয়া -

মূল জমিতে চারা রোয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে চারার বয়স বেশী না হয়ে যায়। কারণ যত চারার বয়স বেশী হবে তত ফলনে ঘাটতি হবে। তাই যত মাসের ধান তত সপ্তাহের চারা মূল জমিতে রোয়া করা উচিত। আর পূর্ব- পশ্চিম বরাবর চারা রোয়া করতে হবে যাতে সূর্যের আলোকে বেশী করে কাজে লাগানো যায়। রোয়ার দূরত্ব সাধারণভাবে

২০ সেমি * ১৫ সেমি। আর গুছিতে চারার সংখ্যা ২-৪টির বেশী দেওয়া উচিত নয়।

সার প্রয়োগ (Fertilization)-

শেষ চাষের সময় বিঘা প্রতি ৭০০ কুইন্টাল পচা গোবর সার বা কম্পোষ্ট সার ভালোভাবে মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে। অন্যথায় চারা রোয়ার ১৫-২০ দিন আগে খোলজাতীয় সার প্রয়োগ করা যেতে পারে। স্বল্প ব্যয়ে জমির দীর্ঘস্থায়ী উর্বরতা বজায় রাখার জন্য সবুজ সার হিসাবে ধইঞ্চা, কলাই, মুগ, বরবটি ইত্যাদি ধান চাষের ৫-৬ সপ্তাহ আগে চাষ করে নরম ও সবুজ অবস্থায় ধানের জমিতে প্রাথমিক চাষ দেওয়ার সময় ভালোভাবে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া যেতে পারে।

সবুজ সার প্রয়োগ করা সম্ভব না হলে, আমন ধান রোয়ার পর বিঘা প্রতি ৩ কেজি হারে ধইঞ্চা বীজ ধানের জমিতে সরাসরি বুনে, ধইঞ্চা বোনার ২৫-৩০ দিনের মাথায় ২, ৪-ডি সোডিয়াম লবণ ৮০ শতাংশ ডব্লু. পি. বিঘা প্রতি ০.১ কেজি সক্রিয় হিসাবে ২৫০ লিটার জলে গুলে স্প্রে করলে ধইঞ্চা সহ অন্যান্য চওড়া পাতা ও মুথা জাতীয় আগাছাগুলি ওষুধ ছেটানোর ১০-১৫ দিনের মধ্যে ঝলসে বাদামী হয়ে মরে যায় ও পরবর্তীতে তা মাটিতে বাদামী সার হিসাবে যুক্ত হয়,যার

ফলে একর প্রতি প্রায় ৪-৫ কেজি নাইন্রোজেন মাটিতে যোগ হতে পারে। সবুজ বা বাদামী সার প্রয়োগ করলে বিঘা প্রতি ১ কুইন্ট্যাল ও না করলে বিঘা প্রতি ৩ কুইন্টাল ভার্মিকম্পোষ্ট বা কেঁচোসার জমিতে প্রয়োগ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। জমির গুনগত মান বাড়ানোর জন্য জমিতে অ্যাজোটোব্যাক্টর বা অ্যাজোস্পিরিলাম জাতীয় জীবাণুসার প্রয়োগ করতে হবে। সবুজ সার হিসাবে ও সাথী ফসল হিসাবে অ্যাজোলা ব্যবহার করা যায়। মাঝারি উর্বর ধরনের জমির জন্য

বিঘা প্রতি আমন ধানের রাসায়নিক সার প্রয়োগের সুপারিশ নিম্নরূপ ।

প্রচলিত, দেশী, উন্নত জাত – ৭:৩:৩ (নাঃ ফঃ পঃ)

উচ্চফলনশীল স্বল্পমেয়াদী (১১৫-১২৫ দিনের) – ৮:8:৪

উচ্চফলনশীল মধ্যমেয়াদী (১২৫-১৩৫ দিনের) - ৯.৫:৪.৫:৪.৫

উচ্চফলনশীল দীর্ঘমেয়াদী (১৪০-১৫০ দিনের) – ১০:৫:৫

সংকর বা হাইব্রীড – ১০:৫:৫

সুগন্ধী - ৮:8:৪

এক্ষেত্রে উপরোক্ত তালিকায় নাইট্রোজেন, ফসফেট, পটাশ -এর হিসাব দেওয়া হয়েছে। একে ইউরিয়া, সিঙ্গেল সুপার ফসফেট, পটাশ এর পরিমাণে রুপান্তরিত করতে গেলে যথাক্রমে ২.২, ৬.২৫, ১.৬ দিয়ে গুন করতে হবে। সারের কার্যকারিতা যথাযথ পেতে গেলে এর পরিমাণের সাথে সাথে ব্যবহারিক পদ্ধতির দিকে নজর রাখতে হবে। অকারণে একসাথে অতিরিক্ত সার ব্যবহার অনুচিত। আমন মরশুমে ধানে মূলসার হিসাবে ১/৪ অংশ নাইট্রোজেন, সম্পূর্ণ ফসফেট

এবং ৩/৪ অংশ পটাশ মূলজমি তৈরীর সময় দিতে হবে। এরপরে প্রথম চাপান সার হিসেবে ৩ সপ্তাহ পর ২/৪ অংশ নাইট্রোজেন এবং দ্বিতীয় চাপান হিসেবে রোয়ার ৬ সপ্তাহের মাথায় ১/৪ অংশ নাইট্রোজেন এবং ৩/৪ অংশ পটাশ প্রয়োগ করতে হবে। অম্ল জমিতে জমি তৈরীর এক মাস আগে একর প্রতি ৪-৮ কুইন্টাল হিসাবে ডলোমাইট বা চুন প্রতি তিন বৎসর অন্তর প্রয়োগ করা উচিত। ক্ষারীয় মাটি এলাকায় জমি তৈরীর এক মাস আগে একর প্রতি ১০০-১২০ কেজি

হিসাবে জিপসাম প্রয়োগ করা যেতে পারে। অনুখান্যের ঘাটতি হলে অবশ্যই তা মাটি পরীক্ষার ভিত্তিতে প্রয়োগ করা উচিত। দস্তার ঘাটতি হলে বিঘা প্রতি ৩ কেজি হারে জিঙ্ক সালফেট হেপ্টাহাইড্রেট মূলসার হিসাবে অথবা ০.৫ শতাংশ জিঙ্ক সালফেট ও ০.২৫ শতাংশ চুন দ্রবণ একত্রে মিশিয়ে রোয়ার যথাক্রমে ২৫-৩০ ও ৪৫-৫০ দিনের মাথায় স্প্রে করলে ভালো হয়। বোরনের ঘাটতি হলে বিঘা প্রতি ১.৩ কেজি বোরাক্স (১০.৫ শতাংশ বোরন) মুলসার হিসাবে অথবা ০.৫ শতাংশ বোরাক্স দ্রবণ রোয়ার যথাক্রমে ২৫-৩০ ও ৪৫-৫০ দিনের মাথায় স্প্রে করা যেতে পারে। ঘাটতি এলাকায় ৩-৪ টি মরশুম অন্তর দস্তা বা বোরন প্রয়োগ করা উচিত। কোন সময়েই দস্তা ও ফসফরাস একত্রে প্রয়োগ করা যাবে না এবং ফসফেট সার প্রয়োগের এক বা দু' দিন আগে দস্তা প্রয়োগ করতে হয়।

(ড. কিরনময় বাড়ৈ, বরিষ্ঠ বিজ্ঞানী ও প্রধান, হাওড়া কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র, বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জগৎবল্লভপুর, হাওড়া)

Related link - শ্রী পদ্ধতিতে (Sri Method- aman paddy) আমন ধান চাষে দ্বিগুণ লাভ

#বর্ষা ২০২০, উন্নত ফলন পেতে আমন ধানের রোগপোকা (DISEASE & PEST MANAGEMENT OF AMAN PADDY) নিয়ন্ত্রণ

#বর্ষা ২০২০, আমন ধানের বীজ বাছাই, বীজ শোধন ও বীজতলা (Aman paddy seedbed preparation) তৈরী

English Summary: #Monsoon 2020, method of seedling weeding and fertilizer application in aman paddy cultivation
Published on: 18 June 2020, 12:46 IST

எங்களுக்கு ஆதரவளியுங்கள்!

প্রিয় অনুগ্রাহক, আমাদের পাঠক হওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার মতো পাঠকরা আমাদের কৃষি সাংবাদিকতা অগ্রগমনের অনুপ্রেরণা। গ্রামীণ ভারতের প্রতিটি কোণে কৃষক এবং অন্যান্য সকলের কাছে মানসম্পন্ন কৃষি সংবাদ বিতরণের জন্যে আমাদের আপনার সমর্থন দরকার। আপনার প্রতিটি অবদান আমাদের ভবিষ্যতের জন্য মূল্যবান।

এখনই অবদান রাখুন (Contribute Now)