নয়নতারার বৈজ্ঞানিক নাম Vinca rosea (Catharanthus roseus ) | নয়নতারা এক জনপ্রিয় ফুল | এটি দেখতেও বেশ সুন্দর | এর ইংরেজি নাম Peri Winkle | কটি বহুবর্ষজীবী, বীরুৎ শ্রেণীর উদ্ভিদ। গাছটি উচ্চতায় প্রায় দুই থেকে তিন সেন্টি মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। পাতা কিছুটা লম্বাটে, তবে ডিম্বাকার। পাতার মধ্য শিরা মোটা ও উজ্জ্বল বর্ণের। ফুল গোলাপি, বেগুনি রঙের হয়ে থাকে। ফল লম্বা ও চ্যাপ্টা। সারা বছরই ফুল ফল হয়। একটি পরিণত ফল থেকে অনেক গুলি বীজ পাওয়া যায়। ফুল গন্ধহীন। গাছের পাতা ও ফুল ডায়াবেটিস এবং রক্তচাপ জনিত রোগের উপশমে ব্যবহৃত হয়।সাধারণত জুলাই মাসে (July month) এই ফুলের চাষ ভালোভাবে করা যেতে পারে |
মাটি ও জলবায়ু(Soil and climate):
যেকোনো মাটিতেই নয়নতারা (Vinca) চাষ করা যায়। এটি গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের উদ্ভিদ। বেলে-দোআঁশ বা এঁটেল-দোআঁশ মাটি নয়নতারা চাষের জন্য আদর্শ। গাছের গোড়ায় জল জমলে গাছ মারা যাবে। সুতরাং জল দাঁড়ায় না এমন উঁচু জায়গায় নয়নতারার চাষ করা উচিত।
বংশবিস্তার:
বীজ এবং কাটিং এর মাধ্যমে বংশবিস্তার হয়।
চারা তৈরী:
বীজ থেকে চারা তৈরি করার জন্য খুব ভালোভাবে বীজতলা প্রস্তুত করতে হয়। বছরের যেকোনো সময়ই চারা তৈরি করা যায়। তবে বর্ষায় গাছের বৃদ্ধি খুব ভালো হয় বলে বর্ষা শুরুর আগে চারা তৈরি করে নেওয়া উচিত।
আরও পড়ুন -Cardamom Cultivation: জেনে নিন এলাচ চাষের দুর্দান্ত কৌশল
বর্ষা শুরুর ঠিক আগে অথবা বর্ষার শুরুতেই মূল জমিতে চারা বসানোর ব্যবস্থা করতে হবে। কাটিং এর মাধ্যমেও চারা তৈরি করা যায়। তবে বেশিরভাগ সময়ে দেখা গেছে যে বীজের থেকে তৈরি চারার ভেষজ গুণ অনেক বেশি। তবে,কাটিং এর গাছে ফুল খুব তাড়াতাড়ি ফোটে। তাই বীজ সংগ্রহের জন্য কাটিং এর চারা লাগানো উচিত।
রোপণ পদ্ধতি(Plantation):
বারবার চাষ ও মই দিয়ে জমির মাটি তৈরি ভালো করে তৈরী করতে হবে। শেষ চাষের সঙ্গে ৫০ থেকে ৬০ কুইন্টাল পচা জৈব সার প্রতি হেক্টর জমিতে ছড়িয়ে দিতে হবে। ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি লম্বা চারা জমিতে ১.৫ ফুট × ১.৫ ফুট দূরত্বে সারিবদ্ধ ভাবে চারা লাগাতে হবে | সরাসরি মূল জমিতে বীজ বপন করে ও চারা তৈরির পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে |
পরিচর্যা:
চারা লাগানোর ১৫ দিন পরে ১ বার এবং ফুল ফোটার আগে আরেক বার নিড়ানি দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করা উচিত। প্রয়োজন মতো জল সেচ দিতে হবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে গাছের গোড়ায় যেন জল জমে
ফুল সংগ্রহ:
গাছের পাতা মোট ২ বার সংগ্রহ করা যায়। গাছ লাগানোর ৬ মাসের মাথায় ১ বার এবং ৯ মাসের মাথায় দ্বিতীয় বার পাতা সংগ্রহ করা হয়। গাছের বয়স যখন ১২ থেকে ১৫ মাস হবে তখন মূল সংগ্রহ করা উচিত। প্রতি হেক্টর থেকে বছরে ১০ থেকে ১৫ কুইন্টাল শুকনো গাছ পাওয়া যায়। ১০০ কেজি কাঁচা গাছ থেকে প্রায় ২৫ কেজি শুকনো গাছ পাওয়া যায়।
প্রতি কেজি শুকনো গাছের বাজার দর কম-বেশি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। বছরে হেক্টর প্রতি আয় আনুমানিক ৬০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা। সুতরাং হেক্টর প্রতি বাৎসরিক মোট আয় ৪৫ হাজার টাকা থেকে ৭০ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন -Malabar Spinach Farming: এইভাবে পুঁইশাক চাষে আপনিও হতে পারেন লাভবান