কুমড়ো, আমাদের পছন্দের বিভিন্ন সবজির মধ্যে অন্যতম৷ যা সারাবছরই পাওয়া যায়৷ এই ফল জাতীয় সবজির উৎপত্তিস্থল মধ্য আমেরিকা৷ তবে সারা বিশ্বেই নানা জাতের কুমড়োর চাষ (Pumpkin Farming) হয়৷ এর বৈজ্ঞানিক নাম Cucurbita moschata.
এটি সবজি হিসেবে খাওয়া হলেও, মিষ্টি কুমড়ো (Pumpkin) দিয়ে স্ন্যাক্স তৈরি করা যেতে পারে, আবার মিষ্টিও তৈরি করা হয়৷ হ্যালোউইনে এই কুমড়োর প্রচুর চাহিদা (Usage of Pumpkin) থাকে ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে৷ আবার বাদ্যযন্ত্রও তৈরি করা হয় এই কুমড়ো দিয়েই৷
চলুন জেনে নেওয়া যাক, কুমড়োর রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে -
কচি ফল পচে যাওয়া / হলুদ হয়ে যাওয়া – কুমড়ো গোত্রীয় প্রায় সব ফসলে দেখা যায় কচি ফল হলুদ হয়ে ঝরে পড়ে যায়। এই সমস্যাতে ফলনে ব্যপক ক্ষতি হয়। ফুলের পরাগমিলন ঠিক মত না হলে এই সমস্যা হয় আবার ফলের মাছির আক্রমণেও এই সমস্যা হয়ে থাকে।
নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি :
পরাগ মিলনের সমস্যা দুর করতে জমিতে মৌমাছির বাক্স রাখা যেতে পারে ( বিঘা প্রতি ২ – ৩ টে )।
সকালবেলা টাটকা পুরুষ ফুল তুলে তার পরাগ জলে গুলে (৫০ – ৭০ টি ফুল / লিটার) সেই জলে বোরন ও গ্লুকোজ ( ২ গ্রাম / লি.) মিশিয়ে স্ত্রী ফুলের উপর স্প্রে করতে হবে।
সাদা গুঁড়ো বা পাউডারী মিলডিউ রোগ –
এই ছত্রাক ঘটিত রোগের ফলে কুমড়ো জাতীয় ফসলের ফলন কমে যায়। এই রোগের কারণ হল কম তীব্রতা যুক্ত সুর্যালোক, ঘন ছায়াযুক্ত গাছ, বেশী নাইট্রোজেন যুক্ত মাটি ও ঠান্ডা আবহাওয়া।
নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি :
আক্রমণের শুরুতে আক্রান্ত পাতা সাবধানে তুলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চাষবাস করতে হবে।
নিম্নলিখিত ছত্রাকনাশক গুলি স্প্রে করা যেতে পারে –
সালফার ৮০% ডব্লু. পি. (সালফেক্স) – ৩ গ্রাম/লি.
ক্লোরোথ্যালোনিল ৭৫% ডব্লু.পি. (কবচ) – ২ গ্রাম/লি.
ট্রাইডেমর্ফ ৮০% ই.সি. (ক্যালিক্সিন) – ০.৫ মিলি /লি.
কান্ড ও ফল পচা –
পটলে বেশী হয়। মাটিতে জল জমলে কচি কান্ড ও ফল সহজে আক্রান্ত হয়ে পচে যায়। পটল, ঝিঙে, শশার নিচের দিকের বা মাটি সংলগ্ন আংশে আক্রমণ শুরু হয়। ফলের খোসা বিবর্ণ হয়ে যায় ও ফলের উপর তুলোর মত ছত্রাকের উপস্থিতি দেখা যায়।
নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি :
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চাষবাস।
নিয়ন্ত্রিত জল সেচ।
আক্রান্ত ফল শুরুতেই বিনষ্ট করতে হবে।
মাটির সাথে ফলের প্রত্যক্ষ সংযোগ কমাতে মাচাতে চাষ করতে হবে।
একই জমিতে প্রতি বছর কুমড়ো গোত্রের ফসল চাষ করা যাবে না।
রোগ প্রতিষেধক হিসেবে সপ্তাহে এক বার ম্যানকোজেব (ডাইথেন এম. ৪৫ ) অথবা জিনেব (ডাইথেন জেড ৭৮) ২.৫ গ্রাম / লি. হিসাবে স্প্রে করতে হবে।
আরও পড়ুন -