Weather Update: ঝেঁপে নামবে বৃষ্টি! শনিবার থেকেই আবহাওয়ার আমূল পরিবর্তনের পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের “ট্র্যাক্টর কে খিলাড়ি” কৃষকদের 51 হাজার টাকা পর্যন্ত পুরস্কার “মিলিওনেয়ার ফার্মার অফ ইন্ডিয়া অ্যাওয়ার্ডস 2024” এবার জুরির সভাপতিত্বে নীতি আয়োগের সদস্য অধ্যাপক রমেশ চাঁদ
Updated on: 17 August, 2021 9:48 PM IST
Rose Tree (Image Credit - Google)

পৃথিবীর সব দেশেই কমবেশি সারাবছর গোলাপের চাষ হয়ে থাকে। পশ্চিমবঙ্গে বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন জেলাতে গোলাপের চাষ করা হচ্ছে। গোলাপের চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় গোলাপ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। গাছ করতে হলে বছরের যে কোন সময়ই টবে গোলাপের চারা বসানো যায়। তবে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ও জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস চারা লাগানোর উত্তম সময়।  

গোলাপ গাছ বীজ, কাটিং, গুটি কলম এবং চোখ কলমের মাধ্যমে বংশবিস্তার করে থাকে। শুধুমাত্র প্রজনন বা ফসল উন্নয়ন কর্মসূচীর ক্ষেত্রে বীজের মাধ্যমে গোলাপের বংশবিস্তার হয়ে থাকে। তবে নতুন গাছ উৎপন্নের প্রধান পদ্ধতি হলো বাডিং বা চোখ কলম, যার মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে ফুলের উৎপাদন করা হয়ে থাকে।

যে জাতটির বংশবৃদ্ধি করা হয় তার চোখ অপর একটি সুবিধামতো আদিজোড় বা রুটস্টক এর উপর স্থাপন করা হয়ে থাকে। আদিজোড় গাছের সজীবতা, উৎপাদনশীলতা, ফুলের গুনাবলী, ঝোপের স্থায়ীত্ব, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, মাটি ও আবহাওয়ার সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করে থাকে। আদিজোড়ের কাটিংসমূহ (পেন্সিল আকৃতি) গ্রীষ্মের শেষে তৈরি করা হয়ে থাকে এবং নার্সারিতে সারি করে ২৫ -৩০ সেমি দূরত্বে রোপন করা হয়। প্রায় ৬ মাস পর এইসব কাটিংসমূহ বাডিং এর জন্য উপযুক্ত আকৃতির কান্ড তৈরি করে থাকে। 

গোলাপের চাষ (Rose cultivation) -

মাটি তৈরিঃ এঁটেল মাটি গোলাপ চাষের জন্য উপযোগী নয়। টবের জন্য সার মাটি এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে মাটি বেশ ফাঁপা থাকে এবং পানি জমে না থাকে। ১ ভাগ দোআঁশ মাটি, ৩ ভাগ গোবর সার বা কম্পোষ্ট, ১ ভাগ পাতা পচা সার, আধা ভাগ বালি (নদীর সাদা বালি হলে ভাল হয়) দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে তাতে এক মুঠো সরিষার খৈল ও এক চামচ চুন মিশিয়ে ১টি ২০ সেমি (৮ ইঞ্চি) টবে ১ মাস রেখে দিতে হবে। এই ১ মাস টবে জল দিয়ে মাটি উল্টে পাল্টে দিতে হবে। এতে মাটির মিশ্রণ ভালো হবে।

চারা সংগ্রহ (Seedling care) -

চারা সংগ্রহের সময় সুস্থ ও ভালো চারা সংগ্রহ করা উচিত। চারা সংগ্রহের সময় এর গোড়ার মাটির গোল্লাটি অবিকল আছে কিনা তা ভালো করে দেখে নিতে হবে। মাটির গোল্লাসহ চারার গোড়ার শিকড় বেরিয়ে থাকা অবস্থার চারা গাছ না নেওয়াই ভালো। অভিজ্ঞ লোকের পরামর্শ অনুযায়ী বিশ্বস্ত ও পরিচিত নার্সারি থেকে চারা সংগ্রহ করা উত্তম।

চারা বসানো -

চারাগাছ বা কলমচারা মাটির গোল্লাসহ পলিথিন ব্যাগে অথবা ছোট মাটির টবে কিনতে পাওয়া যায়। চারাটি যদি টবের হয়, তাহলে টব থেকে পুরো মাটিসহ চারাটি এমনভাবে নিতে হবে যাতে ভেংগে না যায় বা শিকড়ের কোন ক্ষতি না হয়। ভেজা মাটির গোল্লাসহ চারা সংগ্রহ করলে তা একটু শুকিয়ে নিতে হবে। চারা বসাবার আগেই গাছের অপ্রয়োজনীয় পুরোনো বা মরা ডাল পালা হালকা ভাবে ছেঁটে দিতে হবে। এরপর চারাটি টবের মাঝখানে সোজা করে বসিয়ে টবের ওপরে কিছু কম্পোষ্ট সার দিয়ে গাছের গোড়ারমাটি হালকা চাপ দিয়ে বসিয়ে দিতে হবে। চারা এমনভাবে বসাতে হবে যাতে কুঁড়ি বের হবার গিট/ পর্ব টি মাটির ওপরেই থাকে।

সেচ -

টবে বসানোর পর অন্তত ২-৩ বার সেচ দিতে হবে। চারা অবস্থায় গাছ যাতে প্রখর রোদ বা বৃষ্টির ঝাপ্টা থেকে রক্ষা পায় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রথম অবস্থায় ৩/৪ ঘণ্টা  এবং ধীরে ধীরে বাড়াতে বাড়াতে ৬-৭ ঘণ্টা রোদ পাওয়ার ব্যবস্থা করলে গোলাপের ফলন ভালো হবে। সেচের সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে গাছের গোড়ায় জল জমে না থাকে।  

সার প্রয়োগ (Fertilizer application) -

টবে বসাবার ১ মাস পর থেকে ১৫-৩০ দিন অন্তর অন্তর সার দিতে হবে। শীতের ঠিক পরেই অর্থাৎ মার্চের শেষে বা এপ্রিলের প্রথম দিকে টবের উপরের ৮/১০ সেমি মাটির স্তর তুলে দিয়ে খালি জায়গায় পচা গোবর সার ও নতুন ফাঁপা মাটি দিয়ে ভরে দিতে হবে। এর পর খড় বা পাতা দিয়ে ঢেকে গ্রীষ্মের প্রখর রোদ থেকে গাছের শিকড়কে রক্ষা করতে হবে।

শীতকালে গাছ ছাটার পর, প্রতি টবে ৩ মুঠা গুঁড়া গোবর সার ও ১ মুঠা স্টিমড হাড়ের গুঁড়া বা স্টেরামিল প্রয়োগ করিতে হইবে। পরবর্তীতে পুরো শীতকালে ১ মাস পর পর ১ মুঠা করে স্টিমড্ বোন মিল বা স্টেরামিল প্রয়োগ করতে হবে।গোলাপ গাছে বেশি ফুল উৎপাদনের জন্য পাতার সার ও ফলিয়ার স্প্রে করা যেতে পারে।  

রোগ-পোকা দমনঃ

শুঁয়ো পোকা বা অনিষ্টকারী অন্য যে কোন পোকা দেখা মাত্র ধরে মেরে ফেলতে হবে। লাল মাকড়সার আক্রমণ ও ডাইব্যাক রোগই বেশ মারাত্মক। গোলাপ গাছের নানা অংশ কালো হয়ে মরে যাওয়া। এ রোগটিকেই ডাইব্যাক বলে। গাছের রোগাক্রান্ত অংশটি কেটে ফেলে ডাইথেন এম-৪৫ ২ গ্রাম/ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

আরও পড়ুন - Tomato Disease Control – জেনে নিন টমেটোর বিভিন্ন রোগ ও তার প্রতিকার পদ্ধতি সম্পর্কে

পরিচর্যাঃ

মৃত ও রোগআক্রান্ত ডাল অপসারনের জন্য, গাছের উপযুক্ত আকৃতি প্রদানের জন্য, প্রতিটি ডালে ফুল আসার জন্য এবং প্রয়োজনীয় রোদ্র পাওয়ার জন্য নিয়মিত গাছ ছাটাই করতে হয়।

গোলাপ হলো প্রচুর শাখা বিস্তারকারী গুল্ম জাতীয় গাছ। গাছের ফুল দেওয়া শেষ হলেই গাছ ছেঁটে দিতে হবে। নিয়মিত গাছ ছাঁটাই করলে বেশি ও বড় আকারের ফুল পাওয়া যায়। 

গাছ ছাঁটাইয়ের পর ডাইব্যাক রোগের আক্রমণ হতে পারে। সুতরাং গাছ ছাঁটাইয়ের আগে ও পরে কীটনাশক ও ছত্রাক নাশক দুটোই প্রয়োগ করতে হবে।

আরও পড়ুন - Climate Smart Agriculture - এই মরসুমে আধুনিক পদ্ধতিতে সবজি চাষ ও তার পরিচর্যা পদ্ধতি

English Summary: Rose cultivation method on rooftop and its management process
Published on: 17 August 2021, 04:47 IST

எங்களுக்கு ஆதரவளியுங்கள்!

প্রিয় অনুগ্রাহক, আমাদের পাঠক হওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার মতো পাঠকরা আমাদের কৃষি সাংবাদিকতা অগ্রগমনের অনুপ্রেরণা। গ্রামীণ ভারতের প্রতিটি কোণে কৃষক এবং অন্যান্য সকলের কাছে মানসম্পন্ন কৃষি সংবাদ বিতরণের জন্যে আমাদের আপনার সমর্থন দরকার। আপনার প্রতিটি অবদান আমাদের ভবিষ্যতের জন্য মূল্যবান।

এখনই অবদান রাখুন (Contribute Now)