ধান পশ্চিমবঙ্গের এক প্রধান ফসল। আমাদের রাজ্যে বহু জায়গায় ধান চাষ হয়। ভারতবর্ষে ফসলের মোট সম্ভাব্য উৎপাদনের ১৫-২৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয় কীটশত্রুর কারণে। আর সাধারণভাবে আমরা কীটশত্রু বলতে রোগ এবং পোকাকেই গুরুত্ব দিয়ে থাকি কারণ তার আক্রমণের স্পষ্ট চিহ্ন আমরা খালি চোখে দেখতে পাই আক্রান্ত গাছের মধ্যে দিয়ে। কীটশত্রুর দ্বারা আমাদের ফসলের মোট যে ক্ষতিসাধন হয়, তার বেশীরভাগটাই সংঘটিত হয় আগাছার দ্বারা প্রায় ৩৩ শতাংশ, যেখানে পোকার দ্বারা ২৬ শতাংশ, রোগের জন্য ২০ শতাংশ এবং অন্যান্যর জন্য ২১ শতাংশ - Directorate of Weed Science Research (DWSR) এর এই তথ্যই স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, রোগ নিয়ন্ত্রণ কে আমাদের কতটা গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
ধানের খোলা পচা রোগের লক্ষণ (Symptoms of rot disease in paddy) -
ধানে থোড় আসার সময় এ রোগের আক্রমণ দেখা যায়। প্রথমে শেষ পাতার/ শীষ আবতকারী পাতার/ডিগ পাতার খোলের ওপর গোলাকার বা অনিয়মিত বা এবেড়ো খেবেড়ো লম্বা লম্বা দাগ দেখা যায়। দাগের কেন্দ্র ধূসর ও কিনারা বাদামি রঙ বা ধূসর বাদামি হয়। দাগগুলো একত্রে বড় হয়ে সম্পূর্ণ খোলেই ছড়াতে পারে। থোড়ের মুখ বা শীষ পচে যায় এবং গুঁড়া ছত্রাংশ খোলের ভেতর প্রচুর দেখা যায়। রোগের আক্রমণ বেশি হলে অনেক সময় শীষ আংশিক বের হয় বা মোটেই বের হতে পারেনা এবং ধান কাল ও চিটে হয়ে যায়।
রোগের প্রতিকার করবেন কীভাবে (How to management) -
১) কৃষি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী, সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করুন।
২) এই রোগে ধানের চারা আক্রান্ত হলেই প্রথম পদক্ষেপ হল আক্রান্ত ক্ষেতের জল বের করে
দিয়ে জমি ভেদে ৭ থেকে ১০ দিন শুকানো।
৩) মনে রাখবেন, আক্রান্ত ক্ষেতে নাইট্রোজেন সার প্রয়োগ করবেন না।
৪) আক্রান্ত ক্ষেতে বিঘা প্রতি ৫ থেকে ৭ কেজি পটাশ সার প্রয়োগ করলে এ রোগের
তীব্রতা কমে।
এছাড়া খোলা পচা রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রোপিকোনাজোল ০.৭৫ মিলি/ ট্রাইসাইক্লাজোল ০.৫ গ্রাম/ ভ্যালিডামাইসিন ২ মিলি – এগুলির মধ্যে যে কোনও একটি ওষুধ প্রতি
লিটার জলে গুলে স্প্রে করতে পারেন।
Image source - Google
Related link - (Panama Wilt) কলা গাছের ছত্রাকজনিত রোগ পানামা উইল্ট প্রতিরোধ করবেন কীভাবে? জেনে নিন সম্পূর্ণ পদ্ধতি