ধান আমাদের প্রধান খাদ্য শস্য। এ দেশের মোট ফসলি জমির প্রায় ৭৬ শতাংশ জমিতে ধান চাষ হয় এর প্রায় ৭০ শতাংশ আধুনিক জাতের ধান চাষ হয়। স্থানীয় জাতের তুলনায় এসব আধুনিক জাতের ধানে রোগ বালাইয়ের আক্রমণ বেশি হয়ে থাকে। বিভিন্ন রোগের কারণে ধানের ফলন প্রায় ১০-১৫ শতাংশ কমে যায়। সাধারণত ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, কৃমি ইত্যাদি রোগ জীবাণুর আক্রমণে ফসলের রোগ হয়ে থাকে। ধানের বিভিন্ন রোগের মধ্যে খোলাপোড়া, ধানের কান্ড পচা রোগ, ঝলসা রোগ, ব্লাস্ট রোগ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
ধানের ব্লাস্ট রোগ – এর লক্ষণ (Symptoms of rice blast disease) –
ধান গাছের ৩টি অংশে রোগটি আক্রমণ করে থাকে।
গাছের আক্রান্ত অংশের ওপর ভিত্তি করে এ রোগ তিনটি নামে পরিচিত যেমন ১) পাতা ব্লাস্ট, ২) গিট ব্লাস্ট এবং ৩) নেক/শীষ ব্লাস্ট।
১) পাতাব্লাস্ট-
পাতায় প্রথমে ডিম্বাকৃতির ছোট ছোট ধূসর বা সাদা বর্ণের দাগ দেখা যায়। দাগগুলোর চারদিক গাঢ় বাদামি বর্ণের হয়ে থাকে এবং মাঝে সাদা থেকে ধূসর বর্ণের দাগ দেখা যায়। পরবর্তীতে এ দাগ ধীরে ধীরে বড় হয়ে আকৃতি চোখের বা স্পিন্ডল বা উপবৃত্তাকার ধারণ করে। অনেক দাগ একত্রে মিশে পুরো পাতাটাই মেরে ফেলতে পারে। এ রোগে ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হলে জমি মাঝে মাঝে পুড়ে যাওয়ার মতো মনে হয়। অনেক ক্ষেত্রে খোল ও পাতার সংযোগস্থলে কাল দাগের সৃষ্টি হয়। যা পরবর্তীতে পচে যায় এবং পাতা ভেঙে পড়ে ফলন বিনষ্ট হয়।
২) গিট ব্লাস্ট বা নোড ব্লাস্ট -
গাছের থোড় বের হওয়ার পর থেকে এ রোগ দেখা যায়। গিটে কালো রঙের দাগ সৃষ্টি হয়। ধীরে ধীরে এ দাগ বেড়ে গিট পচে যায়, ফলে ধান গাছটি গিট বরাবর ভেঙে পড়ে।
৩) নেক বা শীষ ব্লাস্ট -
এ রোগ হলে শীষের গোড়া অথবা শীষের শাখা প্রশাখার গোড়ায় কাল দাগ হয়ে পচে যায়।
শীষ অথবা শীষের শাখা প্রশাখা ভেঙে পড়ে। ধান চিটা হয়।
(Paddy rot disease management) ধানের খোলা পচা রোগের লক্ষণ ও তার ব্যবস্থাপনা
রোগের প্রতিকার (Disease management) –
-
রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার করতে হবে।
-
মাটিতে জৈব সার সহ সুষম মাত্রায় সব ধরনের সার ব্যবহার করতে হবে।
-
রোগের আক্রমণ হলে জমিতে ইউরিয়া সারের উপপ্রয়োগবন্ধ রাখতে হবে।
-
রোগের শুরুতে বিঘাপ্রতি ৫ কেজি পটাশ সার উপরিপ্রয়োগ প্রয়োগ করতে হবে।
-
ট্রাইসাক্লাজল প্রতি লিটার জলে ১ ঘাম হারে মিশিয়ে ১০-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
Image source - Google
Related link - (Blight disease of rice) ধানের ব্যাকটেরিয়াজনিত পাতা পোড়া/ঝলসা রোগের লক্ষণ ও তার প্রতিকার