কৃষি জাগরণ ডেস্কঃ দিল্লির যন্তর মন্তরে ‘মহাপঞ্চায়েতে’ বসেছেন দেশের কৃষকরা। এই সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য তাঁরা রাজধানীতে ঢোকার চেষ্টা করছেন। কিষান সমাবেশের মোকাবিলা করার জন্য দিল্লি পুলিশ নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করেছে। পুরোনো দাবি আদায়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের কৃষকেরা রাজধানী দিল্লির যন্তরমন্তরে আবার বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। সোমবার সকাল থেকে কয়েক হাজার কৃষক দিনভর এ সমাবেশে যোগ দেন। সমাবেশকে ‘মহা পঞ্চায়েত’ অভিহিত করে কৃষকনেতারা বলেছেন, আগামী ৬ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে সংযুক্ত কিষান মোর্চার বৈঠকে তাঁরা আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করবেন।
কৃষকনেতাদের অভিযোগ, তিন কৃষি আইন বাতিল করা হলেও এখন পর্যন্ত সরকার তাঁদের অন্য দাবিগুলো মেনে নেয়নি। যেমন ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যকে (এমএসপি) আইনি বৈধতা দেওয়া হয়নি।আন্দোলনকারী কৃষকদের বিরুদ্ধে আনা মামলাগুলো তুলে নেওয়া হয়নি, প্রত্যাহার করা হয়নি বিদ্যুৎ বিলও।
আরও পড়ুনঃ বাংলার কৃষকদের আয় বৃদ্ধি হয়েছে ২০০শতাংশ, ICAR-এর রিপোর্টে খুশি তৃণমুল
আন্দোলনরত কৃষকেরা পুরোনো এ দাবির পাশাপাশি নতুন দাবি জানিয়ে বলেছেন, লখিমপুর খেরিতে গাড়িচাপা দিয়ে কৃষক হত্যার ঘটনায় দায়ী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রকে বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার করতে হবে। ওই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে অজয় মিশ্রের ছেলে আশিস মিশ্র এখনো কারাগারে।
সংযুক্ত কিষান মোর্চার বিভিন্ন সংগঠন যৌথভাবে কৃষকদের এ সমাবেশের ডাক দিয়েছিল। মোর্চার অন্যতম শরিক ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের নেতা রাকেশ টিকায়েতকে সমাবেশে আসার পথে রোববার গ্রেপ্তার করা হয়। সমাবেশে কৃষকদের যোগ দেওয়া ঠেকাতে সোমবার সকাল থেকে দিল্লির সীমান্তগুলোতে ব্যারিকেড বসানো হয়। তল্লাশি চালানো হয়েছে সীমান্তে প্রতিটি গাড়িতে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কঠোরতা শিথিল করে পুলিশ। সরিয়ে নেওয়া হয় ব্যারিকেডও।
আরও পড়ুনঃ৮ মাসে প্রায় ৬০০ কৃষকের আত্মহত্যা, দেশ কি কৃষি-সঙ্কটের মুখোমুখি হচ্ছে?
দিল্লি পুলিশের এক সূত্র সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, তাঁরা এমন কিছু করতে চাননি, যাতে গতবারের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। দুই বছর আগে দিল্লি সীমান্তে কৃষকদের অবস্থান ঘিরে এক অসহনীয় অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। এমন পরিস্থিতি এড়াতে আজকের সমাবেশের জন্য দিল্লি পুলিশ আগেই অনুমতি দিয়েছিল। সমাবেশে নিত্যপণ্যের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্ব নিয়েও কৃষকেরা সরব হন। কৃষকনেতারা বলেছেন, এমএসপির আইনি বৈধতা পেতে তাঁরা শেষ দিন পর্যন্ত লড়াই করে যাবেন।
গত বছরের নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নিলেও আইন করে বিভিন্ন ফসলের এমএসপি নির্ধারণের পথে এগোয়নি সরকার। কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমারের দাবি, সরকার এমন কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি। তবে কৃষকেরা বলছেন, তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে সরকার ওই দাবি বিবেচনা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।