উৎপল রায়, জলপাইগুড়ি, কৃষি জাগরণ: আবহাওয়া অনুকূল। ফলনও হয়েছে কর্ম। দুশ্চিন্তায় চোখে ঘুম নেই জলপাইগুড়ির আলু চাষিদের। আলুর দাম ক্রমশই কমছে ৷ বিঘার পর বিঘা জমিতে বৃষ্টিতে ভিজে রয়েছে আলুর বস্তাবন্দী প্যাকেট গুলি। বৃষ্টির কারণে বাজারের বিপুল পরিবর্তন এখন জমিতে ৩-৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে তাও আবার ক্রেতার দেখা নেই ৷ লাভ তো দূরের কথা, চাষের খরচ তুলতেই হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকরা।
জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ও ধুপগুড়ি এলাকার বিঘার পর বিঘা জমিতে বৃষ্টিতে ভিজে বস্তাবন্দী আলুর প্যাকেট পড়ে রয়েছে। এই বৃষ্টির মধ্যে জমিতে পড়ে থাকলে আলু পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৷ একদিকে আলুর বন্ড না পেয়ে রাস্তা অবরোধ, আবার কোথাও কোল্ড স্টোরেজের সামনে বিক্ষোভ আলু চাষিদের। এখন আবহাওয়ার নিম্নমুখী হওয়ার কারণে আলু চাষিদের মাথায় হাত। আলু তোলার আগেই দুবার বৃষ্টিপাত। আলুচাষিরা মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে আলু চাষ করে যেটুকু আশা করেছেন এবার সেইটুকু নিয়েও বিপাকে।
আলু ব্যবসায়ী বিনোদ রায় বলেন, বৃষ্টি হওয়ার ফলে আলুর পচন দেখা দেবে এটা নিশ্চিত। পচন দেখা দিলে ব্যবসায়ীরা আলু কেনার ক্ষেত্রে নারাজ হবেন। অন্যদিকে বৃষ্টি ভেজা বস্তাবন্দী আলুগুলি হিমঘরে রাখলে অধিকাংশ প্যাকেটেই পচন দেখা দেবে। এরফলে আলুর দাম যেটুকু ছিল তার থেকে অধিক দাম কমবে। তাই আলু চাষিরা দ্রুত বিক্রি করার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করলেও ব্যবসায়ীরা দাম কমিয়ে আলু কেনার ক্ষেত্রে নারাজ। যদি দাম কম হয় তাহলে যেটুকু খরচ হয়েছে সেটুকু খরচও তুলতে পারবেন না অধিকাংশ কৃষকরা।
চূড়াভান্ডারের আলু চাষি ক্ষিতীশ চন্দ্র রায় বলেন, এই বৃষ্টির কারণে আলুর জমিতে জল জমে রয়েছে। এভাবে বৃষ্টি হতে থাকলে আলু পচন দেখা দেবে। আলু চাষ করতে যে পরিমাণ খরচ হয়েছে সেই খরচটুকু উঠবে না। বরং ঘরের থেকেই অর্থকরী চলে যাবে। এখনও পর্যন্ত চার বিঘা আলু তোলা হয়নি। আলু জমিতে পড়ে রয়েছে। শ্রমিক আসলেও বৃষ্টির কারণে জল জমে থাকায় আলু তোলা সম্ভব নয়, তার কারণে শ্রমিকদেরও ঘুরে যেতে হয়।
আরও পড়ুনঃ নেই পর্যাপ্ত হিমঘর অন্যদিকে ঝোরো বৃষ্টি, দুইয়ের সাড়াশি চাপে বিপাকে কৃষকরা
আরেক আলু চাষি তপন রায় বলেন, আলু তোলার জন্য সকালবেলা জমিতে চাষ দিয়েছি তখন আকাশের অবস্থা ভালোই ছিল হঠাৎ করে বৃষ্টি হওয়ায় আলু তোলা একদমই সম্ভব হয়ে ওঠেনি। আলু তোলার আগেই দুইবার বৃষ্টি হয়েছে এই বৃষ্টি হওয়াতে অধিকাংশ আলুতে পচন দেখা দেবে। এই বৃষ্টির কারণে আলুর দাম একদমই থাকবে না। এক বিঘা আলু চাষ করতে যে পরিমাণ অর্থ খরচ হয়েছে সেই পরিমাণ অর্থ এবার উঠবে কিনা সেটা নিয়েও দুশ্চিন্তা।