অ্যাসপি এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট ফাইন্ডেশনের (অ্যাসপি ফাইন্ডেশন) অ্যাসপি এল. এম. প্যাটেল পুরস্কার ভারতের অসামান্য কৃষকদের উৎকর্ষ কাজের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন উদ্দ্যানপালন, বৃষ্টি নির্ভর কৃষি এবং মহিলা কৃষক বিভাগে, বিগত ২২ বছর ধরে প্রদান করে আসছে। এই পুরস্কার প্রদানের উৎপত্তি বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল পাঠকদের জন্য।
শ্রীঁ এল. এম. প্যাটেল ছিলেন অ্যামেরিকান স্প্রিঙ্গ অ্যান্ড প্রেসিং ওয়ার্কস প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানীর প্রতিষ্ঠাতা, পরামর্শদাতা ও অনুপ্রেরণাদাতা যা আমাদের দেশের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে পুরাতন কৃষি সুরক্ষার যন্ত্রাদি প্রস্তুতকারক কোম্পানী। তিনি ৯০ বছর বয়সে ১২-০৩-১৯৯৬ তারিখে ইহলোক ত্যাগ করেন। তিনি ১৯১৩ সালে তাঁর নিজের ১৭ হেক্টর জমিতে অ্যাসপি এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট ফাইন্ডেশনের প্রতিষ্ঠা করেন যা কৃষিশিক্ষা, গবেষণা এবং সম্প্রসারণ কার্যক্রম চালানোর জন্য, যাতে কৃষকরা আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে পারে বিশেষ করে মুম্বাই থেকে ৭০ কিমি দূরে টেনসা ফার্ম অঞ্চলের কৃষকদের উন্নতিকল্পে। তাঁর পরলোক গমনের পর অ্যাসপি গ্রুপ অফ কোম্পানী তাঁর স্মরণে ভারতের প্রগতিশীল কৃষকদের জন্য এল. এম. প্যাটেল পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা করে। প্রতিবছর এইরূপ তিনটি পুরস্কার প্রদান করা হয় মনোগ্রাহী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।
নির্বাচিত শীর্ষস্থানীয় কৃষকদের উৎকর্ষতার পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই করা হয় সারা বছর ধরে। অনন্যসাধরণ কৃষিবিজ্ঞানীরা কৃষকদের নির্বাচন করেন। চূড়ান্ত নির্বাচন সম্পন্ন হয় অ্যাসপি গ্রুপের পরিচালন পরিষদের পদ্মবিভূষণ প্রাপ্ত প্রফেসর ড: এম. এস. সামিনাথনের সুযোগ্য নেতৃত্বে।
২০১৭ সালের পুরস্কার দেওয়া হল – শুক্রবার, ২২ মার্চ ২০১৯, অ্যাসপি অডিটোরিয়াম, মালাদে উদ্দ্যানপালন বিভাগে (ক্ষুদ্র চা উৎপাদক) এবং মহিলা কৃষকদের কিচেন গার্ডেনিং এর জন্য। এই বিভাগগুলির পুরস্কার প্রাপকদের নাম দেওয়া হল।
(১) উদ্দ্যানপালন বিভাগে (ক্ষুদ্র চা উৎপাদক) – পুরস্কারটি যৌথভাবে লাভ করেছেন আসামের ডিব্রুগড় জেলার রাজ্যের শ্রী ভবেন্দ্র মোহন বরগোহেইন এবং আসামের শিবসাগর জেলা থেকে শ্রী রাজেশ কুমার দত্ত।
(২) মহিলা কৃষকদের বিভাগে ( কিচেন গার্ডেনিং) - পুরস্কারটি যৌথভাবে পেয়েছেন কর্ণাটক রাজ্যের ব্যাঙ্গালুরুর ড: মৈত্রি শঙ্কর এবং মাহারাষ্ট্রের থানে জেলার শ্রীমতি মাধুরী মহাদেব ভৌর।
উপরের ৪ জন কৃষককে ৫০,০০০ টাকার সম্মানিক পুরস্কার, প্রশংশাপত্র এবং ট্রফি দেওয়া হয়।
উদ্যম বিশেষজ্ঞ ও অনুপ্রেরণাদায়ক বক্তা শ্রী সুরেশ শ্রিনিবাসন ছিলেন এই অনুষ্ঠানের মুখ্য অতিথি। জুনাগর ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড: এ. আর. পাঠক ছিলেন এই অনুষ্ঠানের সম্মানিয় অতিথি।
অ্যাসপি গ্রুপ অফ কোম্পানীর মুখ্য নির্দেশক শ্রী শরদ প্যাটেল অতিথিবৃন্দদের স্বাগত জানালেন এবং অ্যাসপি ফাউন্ডেশনের কর্মকান্ডের একটি প্রেশেন্টেশন দেখালেন।
মুখ্য অতিথি শ্রী সুরেশ শ্রিনিবাসন অনুষ্ঠানটিকে উজ্জিবীত করে তুললেন তাঁর স্ট্রেসহীন জীবনযাপন পদ্ধতির একটি দার্শনিক প্রেশেন্টেশনের মাধ্যমে। তিনি তার হাস্যরসাত্মক আলোচনার মাধ্যমে আমাদের জীবনের নানা অভিজ্ঞতার কথা আলোচনার মাধ্যমে ব্যাক্ষা করে শোনালেন। তার বক্তব্য চলাকালিন দর্শকেরা হাসিতে ফেটে পড়ে তাঁকে অভিনন্দন জানালেন। এই উপস্থাপনা দর্শকদের অন্তর্মুখি ও চিন্তাশিল করে তুলেছিল অল্প সংস্থানে সুখি জীবনযাপন করার কথা অনুধাবন করে।
অনুষ্ঠানের এই বক্তৃতাটি একটি আদর্শ পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া তৈরি করেছিল বক্তা ও শ্রোতার মধ্যে।
মুম্বাইয়ের বিশিষ্ট নাগরিকগণ, উদ্যোগী কৃষক, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের অ্যাসপির ডিলার, এল. এম প্যাটেল পুরস্কারপ্রাপকরা এই অনুষ্ঠানটিকে শ্রীমন্ডিত করে তুলেছিলেন।
Share your comments