গত দু'বছরের করোনা পরিস্থিতি পেরিয়ে এসেছে রাজ্য ৷ ফলে চলতি বছরের দুর্গাপুজো ঘিরে উৎসাহ অনেকটাই বেশি পুজো কর্তাদের। এমনই পরিস্থিতির মধ্যে আজ, সোমবার পুজো নিয়ে বৈঠক ডেকেছে রাজ্য সরকার। বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে কারণে এদিনের বৈঠক থেকে এবারের পুজো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী ঘোষণা করেন সেটাই দেখার। গতবার ক্লাবগুলিকে বিশেষ অনুদান দেওয়া হয়েছিল পুজোর জন্য। এবারে সেই অনুদানের পরিমাণ বাড়বে কী না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে জল্পনা।
নবান্ন সূত্রে খবর, প্রতিটি জেলা সদরে জেলার মন্ত্রী ছাড়াও জেলা পরিষদের সভাধিপতি, জেলাশাসক, পুলিশ সুপার বা পুলিশ কমিশনার। বৈঠকে আমন্ত্রিত থাকবেন জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এ ব্যাপারে জেলায় আমন্ত্রণ জানানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলাশাসককে। এই বৈঠকের জন্য উপযুক্ত ইন্টারনেট স্পিড যাতে থাকে , ছবি ভাল আসে এবং মাইক্রোফোন ব্যবস্থা ভাল থাকে সেদিকে জেলাগুলিকে বিশেষ নজর দিতে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। পুর এলাকায় পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে পুরসভার চেয়ারম্যান, এসডিও, পুলিশ কমিশনার বা ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসাররা থাকবেন।
আরও পড়ুনঃ অন্তঃসত্ত্বার পেটে লাথি, কাঠগড়ায় বিধায়ক পরেশ পাল
করোনা পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, প্যান্ডেল ও প্রতিমার উচ্চতা খুব বেশি না করাই ভাল, কারণ উদ্যোক্তাদের চেষ্টা করতে হবে রাজ্য সরকার বা পুরসভা কে অনুরোধ করে তাঁদের সাহায্যে প্রতিদিন অন্ততঃ একবার পুরো প্যান্ডেল ও প্রতিমা স্যানিটাইজ করার । সেক্ষেত্রে উচ্চতা বেশি হলে স্যানিটাইজ করতে সমস্যা হবে শিল্পীদের ও কর্মকর্তাদের অনুরোধ করা হয়েছিল তাঁরা এমন একটি মণ্ডপ তৈরি করুন যাতে দর্শক বাইরে থেকেই ভালভাবে প্রতিমা দর্শন করতে পারেন মণ্ডপে না ঢুকেই ৷ অর্থাৎ প্যান্ডেলের ভেতরের কাজ যথাসম্ভব কম করে বাইরের দিকে কাজের চাকচিক্য বেশি করলে দর্শক সেইদিকেই বেশি দৃষ্টি দেবেন ভিতরে না ঢুকে ৷
প্যান্ডেলের প্রবেশ পথ ব্যারিকেড দিয়ে যতটা সম্ভব দীর্ঘ করতে হবে, তাতে প্রতিটি মানুষকে অনেকটা পথ অতিক্রম করতে হবে, এর ফলে স্বাভাবিক ভাবেই সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং বাড়বে। ক্লাবের স্বেচ্ছাসেবকদের খেয়াল রাখতে হবে যাতে প্রতিটা দর্শক যাতে মাস্ক পরে ঢোকেন ও প্রবেশ করার সময় তাঁদের হাতে স্যানিটাইজার দেওয়ার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে ।মূল প্রবেশ পথে একাধিক থার্মাল গান রাখতে হবে। জ্বর নিয়ে কোন ব্যক্তিকে প্যান্ডেলে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। মূল প্রবেশ পথে ও প্যান্ডেলের ভিতর দায়িত্বরত প্রতিটি স্বেচ্ছাসেবকের সঠিক ভাবে নিরাপত্তার ব্যাবস্থা করতে হবে। যাতে তারা কোনওভাবেই সংক্রমিত না হয়ে পড়ে। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে দফায় দফার লোক ঢোকাতে হবে একসঙ্গে বহু লোক প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না।
আরও পড়ুনঃ ৮ মাসে প্রায় ৬০০ কৃষকের আত্মহত্যা, দেশ কি কৃষি-সঙ্কটের মুখোমুখি হচ্ছে?
এক বারে ২৫ জনের বেশি লোক প্যান্ডেলে প্রবেশ করানো যাবে না। ফোরামের পক্ষ থেকেও পুজোর আগে থেকে প্রচার করা হবে যাতে দর্শক সারাদিন ধরে ঠাকুর দেখে। শুধু রাত্রের কয়েক ঘণ্টা ঠাকুর দেখার জন্যে বেছে না নেয়। প্রয়োজনে আলোর চাকচিক্য একটু কম করতে হবে যাতে দর্শকরা ওই আলোর চমক দেখার জন্যে শুধুমাত্র রাতে ভিড় না করেন । যাদের পক্ষে সম্ভব, তাঁরা ট্যাংকার এনে স্যানিটাইজার স্প্রে করতে পারেন দর্শকদের লাইনের ওপর সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমীর দিনগুলোতে । করোনা পরিস্থিতিতে একাধিক নিয়ম ছিল। পুজো উদ্যোক্তরা মনে করছেন এই সব নিয়মের একাধিক বদল আসবে।