কৃষিজাগরন ডেস্কঃ কোন দেশের জলবায়ু বলতে বোঝায় সেই দেশের দীর্ঘদিনের গড় তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত ও জলীয় বাষ্পের অবস্হা। তাপপাত্রা, বৃষ্টিপাত ও জলীয় বাষ্পের দৈনন্দিন পরিবর্তন হল আবহাওয়া ।
ভারতবর্ষকে জলবায়ুর ভিত্তিতে ৩৬ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ইহাদের সাবডিভিশন বলা হয়। গত বৎসর ৩৬ জলবায়ুর সাব ডিভিশনের মধ্যে ২৮ সাবডিভিশন স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয়েছিল। মোট বৃষ্টিপাত ছিল ১২ শতাংশ কম। আনুমানিক ৫৫ শতাংশ জেলায় অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হয়। ২০১৩ সালে হিমাচল প্রদেশে, উত্তরাখণ্ডে পাহাড় ধসে যাওয়া, ২০১৪ সালের মার্চ মাসে উত্তর ও পশ্চিম ভারতে অকালে প্রচুর বৃষ্টিপাত, ২০১৫ সালে তামিলনাড়ুতে নিশেষ করে চাই এরিয়াতে অতি বৃষ্টির তাণ্ডব নৃত্য । এর ফলস্বরূপ ফসল, পশু পক্ষী আর মানুষের প্রচুর ক্ষতি হয়।
জলবায়ু পরিবর্তন কি?
গবেষণার ফলে জানা যায় যে ইণ্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলেশনের (১৭৬০-১৮৫০) পরে কার্বন ডাই-অক্সাইডের (Co.)-র মাত্রা ছিল ১৭০ পিপিএম (PPM) থেকে ২৮০ পিপিএমের মধ্যে। বর্তমানে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা ৩৮৭ পিপিএম। ইহার অর্থ হল এই যে, গত ১৬০ বৎসরে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বেড়েছে ১০০ পিপিএমের মত। গত ৫০ বৎসরে এই বৃদ্ধি দ্রুত হয়েছে। আগামী ২১০০ সাল নাগাদ তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২.৫-৭°C (প্রতি দশকে ০.২০ ০.৩°C হবে। হঠাৎ এই রূপ আবহাওয়ার মাত্রার পরিবর্তনকে বলা হয় জলবায়ু পরিবর্তন ।
আরও পড়ুনঃ তীব্র রোদে মাঠেই পুড়ে যাচ্ছে সব্জি! বাজারে দাম আকাশ ছোঁয়া
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ
জলীয় বাষ্প (Wate Vapour), কার্বন-ডাই -অক্সাইড (Co.), হাইড্রোকার্বন (CH.) সি. এল. এফ. গ্লাস (CLLS) সমূহ, নাইন্ট্রাস অক্সাইড (NO) ইত্যাদিকে বলা হয় গ্রীন হাউস গ্যাস। এরা ইনফ্রা রেড (Infrared) বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়তে বাধার সৃষ্টি করে, পৃথিবীকে গরম করে। সাধারণ ভাবে, এই ন্যাচারাল (Natural) গ্যাস পৃথিবীর তাপমাত্রাকে প্রায় ৩৩°C-তে রাখে। এই তাপ জলকে তরল অবস্হায় রাখে। ফলে ইক্যুয়েটর (equator) হতে পোল পর্যন্ত বসবাসকারী প্রাণী সমূহের জীবন স্বাভাবিক ভাবে অব্যাহত থাকে। ইহার অর্থ হল পৃথিবীর জলবায়ু সূর্য হতে আসা তাপ ও বহিরাগত রেডিয়েটড তাপমাত্রার এবং বায়ুমণ্ডল, ভূখণ্ড, সমুদ্র, বরফ ও প্রাণী সমূহের মধ্যে একচেঞ্জের উপর নির্ভরশীল।
কতিপয় গ্যাস সমূহ ও খুব ক্ষুদ্র কনা (small particles), সূৰ্য্য থেকে আসা তাপ (heat) ও রেডিয়েটেড পরিগত তাপমাত্রাকে প্রভাবিত করে।
আরও পড়ুনঃ তবে কি আমরাই আগামী প্রজন্মকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছি !
জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দ্বায়ী কে?
মানুষই জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য মূলতঃ দায়ী। গত ৫০ বৎসরে প্রতি দশকে প্রায় ০.১°C তাপমাত্রা বৃদ্ধি হয়। সিমেন্ট, ইস্পাত, প্লাস্টিক, ঘর-বাড়ী ঠাণ্ডা করার উপকরণ সমূহ, যানবাহন, বিদ্যুত উৎপাদন ইত্যাদি কার্য্যসমূহ জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণ।
মানুষের দ্বারা ফসিল ফয়েলয়ের দহন ও ডি-ফরেস্টেশন কার্বন-ডাই-অক্সাইড (Co.) গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের মূল কারণ।
কৃষি ও জলবায়ু পরিবর্তন
দুঃখের বিষয় যে, কৃষিকাৰ্য্যও গ্রীনহাউস গ্যাস
গ্রীন হাউস গ্যাসের মোবাল ওয়ার্মিং এ আপেক্ষিক কন্ট্রিবিউশন।
|
নং |
গ্যাসের নাম
|
মাত্রা |
১ |
কার্বন-ডাই-অক্সাইড (CO2)
|
৪৭.০ |
২ |
ক্লোরো ফ্লোরো কার্বন গ্যাস (CFCS) |
২৯.০ |
৩ |
হাইড্রোকার্বন
|
১৪.০ |
৪ |
নাইট্রোঅক্সাইড |
১০.০ |
৫ |
মোট |
১০০ |
কার্বন-ডাই-অক্সাইড (CO2)
বায়ুমণ্ডলে Co, বৃদ্ধিতে কৃষির বিশেষ ভূমিকা নির্ধারন করা কঠিন। কিন্তু মাটির ক্ষয় (Soil Exesion), অগ্যানিক ম্যাটারের ক্ষয়, কৃষিকার্য্যের জন্য বনভূমি পরিস্কার (Cleening of forest for agriculture) বায়ুমণ্ডলের Co পরিমাণ বৃদ্ধি করে। সুতরাং অন্য উপায়ে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি করে (যেমন সারের ব্যবহার করে উৎপাদন বৃদ্ধি) বনভূমিকে রক্ষা করা দরকার ৷