১লা অক্টোবর তারিখটিকে ‘আন্তর্জাতিক কফি দিবস’ হিসেবে সারা পৃথিবীতে উদ্যাপন করা হয়। সরকারিভাবে এই দিবসটিকে আন্তর্জাতিক কফি দিবস হিসাবে প্রথম উদ্যাপন করা শুরু হয়েছিলো ২০১৫ সালে, উদ্দেশ্য ছিলো পানীয় হিসাবে কফির গুরুত্ব সারা পৃথিবীতে প্রসারিত করা। সেই বৎসর থেকেই ধীরে ধীরে এখন বহু দেশই এই বিশেষ দিনটিকে উদযাপন করে চলেছে। ২০১৮তে “উইমেন ইন কফি” নামকরণের মাধ্যমে এই আন্তর্জাতিক কফি দিবসের ৪র্থ বার্ষিকী উদ্যাপিত হয়।
কফি আমাদের কাছে শুধুমাত্র উত্তেজক পানীয়ই নয়, আমাদের অনেকেই এই কফি দিয়েই তাদের দিনটাকে খুব সুন্দর ভাবে শুরু করতে পারেন। ধোঁয়া ওঠা গরম কফি কাপকে ওষ্ঠে ধরলেই এক সুন্দর গন্ধ নাসারন্ধ্রের ভিতর প্রবেশ করে মস্তিষ্কে গিয়ে পৌঁছায় এবং ঘুমন্ত শারীরিক শক্তিগুলিকে জাগিয়ে তোলে। বয়স ও লিঙ্গভেদে সকলেই এই স্বাস্থ্যকর পানীয়টির প্রতি যথেষ্ট আসক্ত। সারা পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরণের কফি পাওয়া যায়। তবে এই কফিকে পানীয় হিসেবে পরিবেশনার ধাঁচ একেক দেশে একেক রকম। কাফে আমেরিকানো, ক্যাপুচিনো, এস্প্রেসো, ফ্ল্যাট হোয়াইট, লঙ ব্ল্যাক, আইরিশ কফি ইত্যাদি কফির বিভিন্ন রকমের পরিবেশন সারা পৃথিবীতে খ্যাতি অর্জন করেছে। এই বিষয়ে, আমাদের মান্ধাতা আমলের কফি সংস্কৃতি খুবই নগণ্য। তবুও আমরা একটু দেখে নিই ভারতের জনমানসে কফির সংস্কৃতিকে।
ভারতে কফি বানানোর একটি নিজস্ব ঘরানা রয়েছে। ফিল্টার কফি-যদিও এই ধরণের পানীয়টি দক্ষিণ ভারতে খুবই প্রসিদ্ধ, বিশেষ করে তামিলনাড়ুতে। এতদিনে এর খ্যাতি দূরদূরান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। কফির, মানুষকে উত্তেজিত করার একটি তাৎক্ষনিক ক্ষমতা রয়েছে।
এই ফিল্টার কফি বানানোর একটি অন্য ধরণের পাত্র রয়েছে। এই বিশেষ পাত্রটির দুইটি চোঙাকৃতি চেম্বার রয়েছে। ওপরের চোঙটির একটি ঢাকনা ও একটি সূচালো পাত রয়েছে, যা হাতলের সাথে যুক্ত রয়েছে। ওপরের চোঙটির নীচের অংশটি ছোটো ছোটো ছিদ্রযুক্ত। নীচের চোঙটি অনেকটা গামলার মতো যার উপর ওপরের চোঙাকৃতি অংশটি খাঁড়াভাবে বসানো থাকে।
উপরের অংশটিকে নীচের গামলার মতো চোঙাকৃতি অংশের উপর বসানোর পর, কফি পাউডার ঢালা হয়, এরপর হাতলসহ সেই ছিদ্রযুক্ত চাকতিটি বসানো হয়, তার উপর গরম জল ঢালা হয় এবং ওপরের চোঙ-এর ঢাকনা বন্ধ করে একঘণ্টা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলে গাঢ় ক্বাথ জমা হয় নীচের চোঙাকৃতি পাত্রে। এই প্রক্রিয়াটি ঘটতে দুই ঘণ্টা সময় লাগে। এই ফিল্টার কফি গন্ধে ও স্বাদে এস্প্রেসোর থেকেও উন্নত এবং খুব শক্তিশালী উত্তেজকও বটে।
ভারতীয় কফির সম্বন্ধে কিছু কথা
- ভারত কফি উৎপাদন ও রপ্তানিতে পৃথিবীতে সপ্তম ও এশিয়াতে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে।
- ২০১৭-১৮ তে কফি উৎপাদনের পরিমাণ ৩১৬ মিলিয়ন কেজি।
- ভারতে উৎপাদিত কফির ৭০% রপ্তানি করা হয় ও ৩০% পানীয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
- প্রদীপ পাল