প্রথম বাক্সতে কাঁকড়া চাষ করার পরিকল্পনা নিচ্ছে রাজ্য সরকারের রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের । প্রাথমিক পর্যায়ে পরীক্ষামূলকভাবে এই কাজ করা হবে, সফল হলে তা গোটা রাজ্যে মৎস্যজীবীদের কাছে জনপ্রিয় করার চেষ্টা করা হবে। নিগম সূত্রের খবর অনেকদিন আগে থেকেই এই মর্মে পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছিল। সম্প্রতি বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনে হেনরি আইল্যান্ডে এই প্রকল্পটি পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করা হবে।
পশ্চিমবঙ্গে তথা সুন্দরবন অঞ্চলে কাঁকড়া সংগ্রহ করতে মানুষকে জঙ্গলে যেতে হয়, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক। সুন্দরবনের নদী-নালা-খাল-বিল থেকে কাঁকড়া সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রতিবছর বহু মানুষ বাঘ-কুমিরের শিকার হয়। বিকল্প এই ধরণের কাঁকড়া চাষ রাজ্যে তেমন না থাকায় জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বন্যপ্রাণীদের সঙ্গে মানুষের সংঘাত লেগেই থাকে। কয়েকটি জেলায় বেসরকারি উদ্যোগে সম্প্রতি কাকড়া চাষ শুরু হলেও তা খুব একটা লাভজনক হয়নি। কারণ বদ্ধ জলাশয়ে হাজারে হাজারে কাঁকড়া থাকলে, নিজেদের মধ্যে মারামারিতেই অধিকাংশ মারা যায়, ফলে আশানুরূপ উৎপাদন পাওয়া যায় না। পাশাপাশি যে কাঁকড়াগুলি পাওয়া যাচ্ছে, তা অনেক সময়েই রপ্তানির উপযুক্ত হচ্ছে না। ফলে চাষ করেও বিশেষ লাভের মুখ দেখছেন না মৎস্যজীবীরা। ফলে জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে যাওয়ার প্রবণতা এখনও সমানভাবেই চলছে। বাক্সে কাঁকড়া চাষ যদি সফলভাবে করা যায়, তাহলে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে না গিয়ে, অনেক মৎস্যজীবীই বাক্সে কাঁকড়া চাষ করবেন। কারণ, বাক্সে চাষ করা হলে, কাঁকড়ার মৃত্যুর সম্ভাবনাও কমে যায়।
এর ফলে জঙ্গলে মানুষ-বন্যপ্রাণী সংঘাতও এড়ানো সম্ভব হবে । চাহিদা মতো উৎপাদনও করাও সম্ভব হবে । বাংলাদেশে ইদানীংকালে এই চাষ বেশ জনপ্রিয় এবং লাভজনক হয়েছে। সম্প্রতি অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তামিলনাড়ুতে সমুদ্রে বাক্সে কাঁকড়া চাষের পরীক্ষামূলক চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সেই প্রকল্প এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। নিগমের পক্ষ থেকে আপাতত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, হেনরি আইল্যান্ডের দুটি জলাশয়ে মোট ২০০টি বাক্সে পরীক্ষামূলকভাবে এই কাঁকড়া চাষ করা হবে। সফল হলে, আরও বড় আকারে কাঁকড়া চাষ করা হবে।
রুনা নাথ।