ধান চাষে পশ্চিমবঙ্গ আত্মনির্ভর৷ বিভিন্ন ধরণের ধান চাষ হয় এখানে৷ রবি, খারিফ এই দুই সময়েই আউস, আমন, বোরো এই তিন ধরণের ধানই চাষ হয়ে থাকে৷ আর সেই সঙ্গে উন্নতমানের প্রোটিনযুক্ত ধান চাষেও এবার আগ্রহ প্রকাশ করা হচ্ছে৷ প্রোটিনযুক্ত ধান চাষ (High Protein Rice) রাজ্যকে অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ সাধারণ ধানের থেকে নতুন প্রজাতির ধানে প্রোটিনের মাত্রা অনেকটাই বেশি বলে দাবি করা হচ্ছে৷
উল্লেখ্য, প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়ার বা কেনার মতো আর্থিক অবস্থা অনেকেরই থাকে না৷ বিভিন্ন বিধি নিষেধের কারণেও অনেকের পক্ষে মাছ, মাংস, ডিম খাওয়া সম্ভবপর হয় না৷ কিন্তু ভাত কমবেশি প্রায় সকলেই খান৷ আর এই ভাত থেকেই যদি প্রোটিনের রসদ পাওয়া সম্ভব হয় তাহলে অনেক সমস্যার যেমন সমাধান হবে তেমনই ছোট থেকে বড় সকলেরই প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হবে সহজেই৷
প্রসঙ্গত, কটকের ন্যাশনাল রাইস রিসার্চ ইন্সটিটিউট (NRRI) মঙ্গলবার চার ধরণের ধানের বিষয়ে তুলে ধরেছে, যার মধ্যে দুটি হল উচ্চমাত্রায় প্রোটিনযুক্ত এবং দুটি ক্লাইমেট স্মার্ট প্রজাতির৷ প্রোটিনযুক্ত দু ধরণের ধান হল সিআর ধান ৩১০ এবং সিআর ধান ৩১১৷ এবং ক্লাইমেট স্মার্ট ধান হল সিআর ধান ৮০১ এবং সিআর ধান ৮০২, দ্বিতীয় প্রকারের এই ধান প্রতিকূল পরিবেশেও ভালো ফলন দিতে সক্ষম৷
রাজ্যে মাটি, জলবায়ু, ধান চাষের পক্ষ সহায়ক এবং অনুকূল৷ তাই আশা করা হচ্ছে, এই ধরণের ধান চাষে সাফল্য মিলতে পারে৷ তবে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে৷ জাতীয় ধান গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীদের মতে উচ্চমাত্রায় প্রোটিনে ভরপুর (High Protein Rice) এই শরীরে প্রোটিনের ঘাটতিও দূর করতে পারে৷
সাধারণ ধানে প্রোটিনের মাত্রা ৬-৮ শতাংশ থাকে, কিন্তু সিআর-৩১০ নয়া প্রজাতির, এতে প্রোটিনের মাত্রা ১১ শতাংশ৷ নবীন নামক এই ধানের সঙ্গে অসমের এনআরসি-১১৫ মিশ্রণে শঙ্কর পদ্ধতিতে তৈরি এই নতুন ধান৷
শুষ্ক এবং আর্দ্র, বিভিন্ন পরিবেশেই এই ধান চাষ করা যাবে বলে জানা যাচ্ছে৷ কৃষি বিজ্ঞানীদের মতে, এই ধান সঠিক পদ্ধতিতে চাষ করতে পারলে এর ফলন যেমন ভালো হবে, তেমনই আমাদের শরীরের জন্যও এটি লাভজনক হবে৷ এবং এগুলি সম্ভব হলে এর চাহিদাও বাজারে ভালো হবে৷
বর্ষা চ্যাটার্জি
আরও পড়ুন- শ্রী পদ্ধতিতে (Sri Method- aman paddy) আমন ধান চাষে দ্বিগুণ লাভ