শীতের মরশুমে রসগোল্লা, পায়েস, সন্দেশ কিংবা পিঠে সবেতেই চাই নলেন গুড়ের ছোঁয়া। নয়তো শীতের খাবারের আভিজাত্যে বজায় থাকে না ভোজনবিলাসীদের কাছে। বলা চলে প্রত্যেক বাঙালি সারা বছর মুখিয়ে থাকে নলেন গুড়ের জন্য। নলেন গুড় আসলে কিন্তু খেজুরের গুড় বা খেজুরের রস। তবে চলতি বছরের শীতের মরশুমে নলেন গুড় তৃপ্তি ভরে খাওয়ার কি আশা মিটবে? কারণ এই সময় নলেন গুড়ের তেমন সাপ্লাই নেই। আবার দামও অনেকটা উর্ধ্বমুখী। যে কারনে বাঙালীর রসনা তৃপ্তির ইচ্ছাটায় অনেকটাই ভাট পড়বে।
গত কয়েকবছরে আবহাওয়ার গড়পরতার ধরন পরিবর্তনের ফলে খেজুরের উৎপাদন অনেকটাই কমেছে। ফলে বাজারের চাহিদার তুলনায় জোগান অনেকটাই কম। তাই হয়ত দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে বিক্রেতারা। মূলত নভেম্বর মাস থেকেই পাওয়া যায় নলেন গুড়। কিন্তু এবারে শীতের দেখা না মেলায় খেজুর রসের আকাল দেখা দিয়েছে। বলা চলে এবারে নলেন গুড় পর্যাপ্ত পরিমানে না হওয়ায়, দামও যে বাড়বে, সেটাও স্পষ্ট।
আরও পড়ুনঃ টমেটোর দাম প্রতি কেজি ১ টাকার নিচে, চাষিরা খরচও তুলতে পারছেন না
নলেন গুড় কীভাবে তৈরি হয়?
শীতের মরশুমের কিছুটা আগে থেকেই খেজুর গাছের মাথা দাঁ বা কাস্তে দিয়ে কেটে একটি নল পুঁতে দেওয়া হয়। এবং ওই নলের মুখে একটি মাটিরহাঁড়ি বেঁধে দেওয়া হয়। ওই নলের মাধ্যমে খেজুর রস চুইয়ে চুইয়ে মাটিরহাঁড়ি ভরে ওঠে। এরপর এই হাঁড়ি থেকে রস সংগ্রহ করে নিয়ে তা উনানের উপর কোনো পাত্রের মধ্যে রেখে শুরু হয় জ্বাল দেওয়ার কাজ। এবং খজুরের রস গরম হয়ে ঘন হয়ে গেলেই হয়ে যায় নলেন গুড়। তবে এবারে শীতের প্রভাব খুব কম থাকায় সেভাবে খেজুর রস সংগ্রহ করতে পারেনি শিউলিরা। খেজুরের রস যারা সংগ্রহ করে তাদের শিউলি বলে। খেজুর গাছ থেকে ভালো রস না মেলায় গত কয়েক বছর ধরে শিউলির সংখ্যাও কমছে।