রাজ্য়ের বিভিন্ন স্থানে বোরো ধান পুরোপুরি পাকার আগেই কাটা শুরু করেছেন কৃষকেরা। ধানে ব্লাস্ট রোগের হানা দেওয়ায় তাঁরা আগে ভাগেই ধান কাটা শুরু করেছেন। কৃষকেরা বলছেন, এখন ধান না কাটলে কিছুদিন পর সব ধান বিচালি হয়ে যাবে। তবু ধানের ব্লাস্টার রোগ নিয়ে কৃষি বিভাগের নেই কোনো মাথা ব্যথা।
চলতি মৌসুমে ধান চাষের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল তাতে আশ্বানুরূপ ফলাফল দেখাদিলেও ব্লাস্ট রোগের প্রকোপ দেখা দেওয়ায় ফসল পাওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে চাষিদের মধ্য়ে।
রাজ্য়ের সব জেলাগুলির ক্ষেত্রে বোরো ধানের চিত্রটা প্রায় একই । ব্লাস্টার রোগে শেষ করে দিয়েছে কৃষকের স্বপ্ন। উচ্চ ফলনশীল ব্রি-২৮ জাতের ধান ব্লাস্টার রোগে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ব্রি-৬৭ ধানের শীষ কাটা রোগ দেখা দিয়েছে।
নাকাসি পাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা তাঁদের জমিতে ধান কাটা শুরু করেছেন। একজন কৃষক তার দুই বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ জাতের বোরো চাষ করেছিলেন । ধান পাকার মুহূর্তে ব্লাস্টার রোগে আক্রমণ করেছে। উপায় না পেয়ে আগেই ধান কাটা শুরু করেছেন তিনি ।
আরও পড়ুনঃ চিচিঙ্গা চাষে এই বিষয়গুলি অবশ্য়ই মাথায় রাখবেন
একজন কৃষক এ বছর আড়াই বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছিলে কিন্তু ব্লাস্টার রোগের আক্রমণে ধানগাছ সাদা হয়ে কুঁকড়ে গেছে। বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক স্প্রে করেও কোনো লাভ পাচ্ছেন না কৃষকরা । এ অবস্থা চলতে থাকলে ধান তো নয়ই, বিচালি পাওয়াও কঠিন হয়ে যাবে।
এই রকম শত শত কৃষকের পরিস্থিতি কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে । কৃষকরা এখন কিভাবে তাদের সার ও কীটনাশকের ঋন শোধ করবেন তাই নিয়ে চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন ।
কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনে গরম ও রাতে ঠান্ডা পড়ার কারণেই বোরো ধানে বিশেষ করে ব্রি-২৮ জাতের ধানে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ ঘটছে। কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের এ জাতের ধান রোপণ করতে নিষেধ করা হয় তবু কৃষকেরা ব্রি-২৮ জাতের ধান রোপণ করেন।
আরও পড়ুনঃ উচ্ছে চাষে আশার আলো দেখছেন রাজ্য়ের কৃষকরা
ধানের জন্য ব্লাস্ট একটি ছত্রাকজনিত মারাত্মক ক্ষতিকারক রোগ। `পাইরিকুলারিয়া ওরাইজি’ নামক ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে। অনুকূল আবহাওয়ায় রোগটি দ্রুত বিস্তার লাভ করে এবং ব্যাপক ক্ষতি করে থাকে। রোগপ্রবণ জাতের ধানে রোগ সংক্রমণ হলে ফলন শতভাগ পর্যন্ত কমে যেতে পারে।