কলকাতা মেট্রোতে আগুন লেগে কমপক্ষে ৪৭ জন যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং একজনের পা ভেঙ্গে যায় পালানোর চেষ্টায়। বৃহস্পতিবার বিকেলে সবচেয়ে ব্যস্থবহুল সময়ে শীততাপনিয়ন্ত্রিত কলকাতা মেট্রোর প্রথম বগিটিতে আগুন ধরে।
দক্ষিণ কলকাতার রবীন্দ্রসদন স্টেশন থেকে দমদমে যাওয়ার মেট্রোটি যখন ময়দান স্টেশনে ঢুকছিল তখন কালো ধোঁয়াতে ঢেকে গেছিল মেট্রোর কোচগুলি। আগুনের উজ্জ্বল আলো তখনই নজরে পড়েছিল।
টানেলের মাঝখানেই মেট্রোটি থামিয়ে দেওয়া হয় এবং যাত্রীরা পালিয়ে নিজের প্রাণ বাঁচাতে তৎপর হয়ে পড়ে। কারণ ধোঁয়ার জন্য চোখে কিছু দেখা এবং শ্বাস নেওয়া কঠিন হয়ে গিয়েছিল।
কিছু যাত্রী গ্লাস প্যানগুলি ভেঙে দিয়েছিল যাতে বাইরের বাতাস ভেতরে ঢুকতে পারে। "একটি যাত্রী যিনি জানালা দিয়ে লাফানোর চেষ্টা করেছিলেন, তার হাঁটু ভেঙ্গে যায়", ময়দান স্টেশনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মেট্রো স্টাফ বলেন।
"বেশিরভাগ যাত্রীরা সামনের এমার্জেন্সি দরজা দিয়ে বাইরে বেরোন এবং সুড়ঙ্গ বরাবর হাঁটতে থাকেন। প্রায় ২০ মিনিটের মত কোনো মেট্রো স্টাফের দেখা ছিল না," একজন যাত্রী শারমী চক্রবর্তী জানান। বেশিরভাগ যাত্রী অভিযোগ করে যে তারা যখন মেট্রো হেল্পলাইন নম্বরটি কল করার চেষ্টা করেছিল তখন কোনোরকম উত্তর তারা পায়নি। যাত্রীরা কলকাতা পুলিশের জরুরি নম্বর ডায়াল করে।
কলকাতা মেট্রো রেলওয়ের প্রধান জনসংযোগ কর্মকত্রী ইন্দ্রানী ব্যানার্জী বলেন, "মেট্রোটি বন্ধ হয়ে গেছিল এবং ধোঁয়া শনাক্ত হওয়ার সাথে সাথে পাওয়ার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল। আগুন নিভে যাওয়ার পর যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়। আমরা খুশি যে কোনো হতাহত ঘটেনি। "
ব্যানার্জি অভিযোগ অস্বীকার করে যে, মেট্রো কর্তৃপক্ষ কি ঘটছে তা জানাতে যাত্রীদের সাহায্য করার জন্য কোনো ঘোষণা দেয়নি। "মেট্রোর মোটরম্যান মেট্রোর পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমের মারফত যাত্রীদের জানিয়েছিলেন," তিনি বলেন।
কলকাতা পুলিশের কমিশনার রাজীব কুমার ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছান। ৪২ জন যাত্রীকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় যাদের শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হয়েছিল এবং ৫ জনকে ক্যালকাটা মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে।
মহাপরিচালক (অগ্নিসংযোগ) জগ মোহন জানান যে আগুনটি সম্ভবত কোনো বগির বিদ্যুৎ কানেকশনের বিস্ফোরণের ফলেই ঘটেছিল। "অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, তাই কোন হতাহতের চিহ্ন ছিল না। যাত্রীদের কোনও অবস্থা গুরুতর নয়," বলেছেন তিনি।
তথ্য সংগ্রহ - হিন্দুস্তান টাইমস্ এবং ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
- অভিষেক চক্রবর্তী (abhishek@krishijagran.com)