কৃষিজাগরন ডেস্কঃ অদম্য ইচ্ছা আর হার না মানার জেদ থেকেই অসাধ্য সাধন করল বেলিয়াপুকুরের সবুজ বিপ্লব কৃষক সংগঠন।এখনও গুগল ম্যাপ পৌঁছতে পারেনি বেলিয়াপুকুরে।নেই ব্যাঙ্কের সুযোগ সুবিধেও।তা বলে কি পথ চলা থমকে যাবে?।একদমই না! বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় লিখেছিলেন,"রাস্তা কারও একার নয়”,।তাই গ্রামের ১০০ জন কৃষক মিলে তৈরি করলেন এমন এক রাস্তা যা পথ দেখাতে পারে গোটা দেশকে।
মুর্শিদাবাদ জেলার জিয়াগঞ্জ ব্লকের অর্ন্তগত বেলিয়াপুকুরে বসবাস করেন কয়েক হাজার পরিবার।জীবিকা বলতে মুলত কৃষিকাজ।অর্থিক অনটন যেন নিত্য দিনের সঙ্গী।এই আর্থিক দুরবস্থা থেকে নিজেদের বেড় করে আনতে গ্রামের কৃষকরা মিলে তৈরি করেন সবুজ বিপ্লব কৃষক সংগঠন।সংগঠন শুরু হয় ২০১৪ সালে।এই সংগঠনের মুল কাজ হল আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পরা কৃষকদের আর্থিক ভাবে মজবুজ করা। বর্তমানে ১০০ জন কৃষক এই সংগঠনের সদস্য। কৃষকরা তাদের আয়ের থেকে ৫০০ টাকা প্রতিমাসে সংগঠনের অ্যাকাউন্টে জমা করেন। এরপর যখন কোনো কৃষকের টাকার প্রয়োজন হয় তখন ওই কৃষক সংগঠনের ফান্ড থেকে ১টাকা হারে ঋণ নিতে পারেন।
এখনও পর্যন্ত অনেক কৃষক এই ফান্ডের সুবিধা গ্রহন করেছেন।সবুজ বিপ্লব কৃষক সংগঠনের সভাপতি নন্দলাল মন্ডল কৃষিজাগরনকে বলেন, “ আমরা খুব ছোট কৃষক,টাকার অভাবে অনেকেই মেয়ের বিয়ে পর্যন্ত দিতে পারে না। তাই আমরা এই সংগঠন তৈরি করেছি।আমরা আগে প্রতিমাসে ১০০ টাকা করে দিতাম।এখন ৫০০ টাকা করে দিই।আগে হঠাৎ টাকার প্রয়োজন হলে বাজারে যারা সুদের ব্যবসা করেন তাদের থেকে চড়া সুদে ঋণ নিতে হত ।তাতে ক্ষতির মুখে পরতে হত কৃষকদের।কিন্তু এখন সেই সমস্যা মিটেছে। তিনি আরও বলেন,আগে যদি কোন কৃষক মনে করত একটা ফার্ম তৈরি করবে তবে টাকার অভাবে সে পারত না।এই সমস্ত সমস্যা এই সংগঠন করে মিটেছে ”।
আরও পড়ুনঃ মৎস্যমন্ত্রীর নিরলস পরিশ্রমে সুরক্ষিত হতে চলেছে ১৫ লক্ষ মৎস্যজীবীর জীবন
এছাড়াও তিনি বলেন,কৃষকদের বিভিন্ন রকমের ট্রেনিং এবং সংগঠন তৈরিতে মুর্শিদাবাদ কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছে।
এবিষয়ে মুর্শিদাবাদ কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের,কৃষি আধিকারিক সাগ্নিক দাস বলেন, “....আমরা ওদের প্রতি মঙ্গল বার এবং শুক্রবার করে ট্রেনিং দিয়েছি, আবহাওয়া কেমন থাকবে সে বিষয়ে তাদের সতর্ক করেছি।রাসায়নিক সার ব্যবহার সর্ম্পকেও কৃষকদের ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে”।
সংগঠনের সম্পাদক জয়চাঁদ মন্ডল বলেন, “কৃষকদের উন্নতি করার জন্যই এই সংগঠন করা।ভালই চলে আমাদের,সবাই সহযোগিতা করে।....কৃষকরা খুবই পিছিয়ে পরেছিল,কোন কিছুতেই তাদের আগ্রহ ছিল না।আমরা এইটা করার পর কিছুটা ডেভেলপ পেয়েছে”।