মাছের ডিমপোনা উৎপাদনে এবার কম খরচে ভ্রাম্যমাণ মিনি হ্যাচারি তৈরি করে নজর কেড়েছে উত্তর ২৪ পরগণা জেলা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র। ড্রাম দিয়ে তৈরি ৬ ফুট চওড়া ৩ ফুট উচ্চতার এই মিনি হ্যাচারিতে আলাদা করে ব্রিডিং পুল ও হ্যাচিং পুল নেই। একটি চেম্বারে প্রয়োজনমতো পুল তৈরি করে নেওয়ার বিশেষ সুবিধা সহ তৈরি করা হয়েছে হ্যাচারিটি। ডিম নষ্ট হওয়ার পরিমাণ অনেকটাই কম হওয়ায় মৎস্যচাষিদের কাছে ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে এই হ্যাচারি।
একসময় মৎস্যচাষিরা পুকুরে হাপা টাঙিয়ে ডিমপোনা উৎপাদন করতেন। কিন্তু, তাতে ডিমপোনার মৃত্যুর হার অনেক বেশি থাকত। এর পর দেশি পোনার উৎপাদন বাড়াতে চাইনিজ হ্যাচারি আসে। এতে ডিম থেকে মাছের চারা উৎপাদন বাড়ে। কিন্তু, ওই হ্যাচারিতে ব্রিডিং পুল থেকে ডিম তুলে হ্যাচিং পুলে ফেলতে যাওয়ার সময় ২০-২৫% ডিম নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া একটি চাইনিজ হ্যাচারি তৈরি করতে খরচ পড়ে প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। আকারে অনেকটাই বড় হওয়ায় ওই হ্যাচারি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া কার্যত অসম্ভব।
কিন্তু, নয়া প্রযুক্তিতে তৈরি মিনি হ্যাচারিতে একাধিক সুবিধা রয়েছে -
-
মিনি হ্যাচারিতে মাত্র ৫ শতাংশ ডিম নষ্ট হয়।
-
৫০ হাজার টাকাতেই এই হ্যাচারি তৈরি করা যায়।
-
একটি মিনি হ্যাচারিতে দুই কেজি ওজনের ৬ পিস স্ত্রী মাছ ও একই ওজনের ১২পিস পুরুষ মাছ রাখা যাবে। এর থেকে একটি চক্রে (সময়কাল ৪ দিন) ৫ লক্ষ ডিম পাওয়া যায়।
বর্ধমানের মেমারির চন্দ্রনারায়ণ বৈরাগ্য নামে এক শিক্ষক প্রথম এই মিনি হ্যাচারির মডেল তৈরি করেন। সেটিতেই উন্নত প্রযুক্তির সংযোজন ঘটিয়ে বাস্তব রূপ দেওয়া হয়েছে। চাইনিজ হ্যাচারিতে দু’টি চেম্বারের একটি ব্রিডিং পুল, যেখানে কৃত্রিম পরিবেশে প্রজনন ঘটানোর জন্য পুরুষ ও স্ত্রী মাছ এনে রাখা হয়। এর পর নিষিক্ত করার জন্য হ্যাচিং পুলে ফেলা হয় ডিম। সেখানে জল ঘুরতে থাকে। ওই অবস্থায় ডিম ফুটে চারা তৈরি হতে তিন দিন সময় লাগে।
হ্যাচারিতে ডিম ফুটে মাছের চারা তৈরি হওয়ার সময় অক্সিজেন সরবরাহের মাত্রাটি বিশেষ জরুরি।
রুনা নাথ।