এই ভারতীয় জাতের মুরগি হাঁস-মুরগি পালনের জন্য সেরা, ডিম এবং মাংস থেকে দ্বিগুণ লাভ করুন ভারতে তুলা চাষ: সমস্যা ও সমাধানের সম্পূর্ণ গাইড মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতুন প্রকল্প: সাধারণ মানুষের জন্য কী সুবিধা?
Updated on: 4 February, 2019 3:48 PM IST

২০১৪ -১৫ সাল থেকে পথ চলা শুরু হয়েছিল মাত্র সাত বিঘা জমি নিয়ে, আজ সেই জমির পরিমান ষাট বিঘাতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজ্যের জৈব প্রক্রিয়ায় চাষ এর সবথেকে বড় সাফল্যের নিদর্শন আজ বলাগড় গ্রাম। প্রথমে গ্রামটিতে দু-তিন জন কৃষক মিলে নিয়েছিলেন এই পদক্ষেপ ,কেবলমাত্র বায়ো স্ল্যারি, কেঁচো সার ব্যবহার করে। পরে ধীরে ধীরে বায়ো-গ্যাস প্ল্যান্ট এর সাহায্যে তারা পুরো জমিতে জৈব চাষ শুরু করেন। বর্তমানে গ্রামের বেশিরভাগ চাষি এই পদ্ধতিতে চাষ শুরু করেছেন, ফলে জৈব জমির পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে ষাট বিঘা জমিতে।

এরই সাথে তারা সবুজ গো-খাদ্য চাষ করে প্রায় তিন বছরের গো-পালনের খরচ কমিয়েছেন। বায়ো-গ্যাস প্লাণ্ট এর মাধ্যমে তৈরি বায়োস্ল্যারি জমির উর্বরতা বাড়ায়, সাথে এই সারের ক্ষেত্রে কৃষকদের কোনও খরচা লাগেনা। ফলে কৃষকদের আর অন্য কারও মুখাপেক্ষী থাকতে হচ্ছে না। চাষের খরচ কমানো গিয়েছে প্রায় শতকরা ২০ শতাংশ। জৈব পদ্ধতিতে উৎপাদিত ফসলের গুনমান অনেকটাই বেশি, ফলে তারা দাম পাচ্ছেন আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। চাষের মাধ্যমে নিজের পায়ের জমি টুকু শক্ত করেছেন তারা।

আমাদের দেশে মুধুমেহ, হৃদরোগ, বৃক্কের সমস্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, প্রতিদিনের খাদ্যে রাসায়নিকের পরিমান এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দায়ী। ডাক্তারের কাছে আজ মধ্যবিত্ত বাঙ্গালির খরচের বহরটা লক্ষ করলেই বুঝতে পারবেন সমস্যাটা একক নয় বরং সামগ্রিক। এই সমস্যার প্রধান সমাধান হতে পারে জৈব শাক সব্জি, চাল, গম এর ব্যাবহার। দৈনন্দিন খাদ্যে রাসায়নিকের প্রভাব কমাতে এই বায়ো-গ্যাস প্ল্যান্ট এর মাধ্যমে চাষ হতে পারে উল্লেখযোগ্য সমাধান, কারন এই ফসল গুলির কোণ অবশেষ নেই। গৃহস্থের রান্না ঘরে এই রাসায়নিক মুক্ত খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য।

সারা ভারতের চাষের ক্ষেত্রে আজ প্রধান অন্তরায় মাটি। প্রথম গ্রীন রেভোলিউশন থেকে আমরা রাসায়নিক নির্ভর চাষের মাধ্যমে আমাদের মাটিকে বন্ধপ্রায় করে তুলেছি। রাসায়নিক সার প্রয়োগে বেশিরভাগ সময়েই মাটির স্বাভাবিক অনুখাদ্যের ব্যাল্যান্স নষ্ট হয়,  মাটিতে থাকা কেঁচো, ও অন্যান্য প্রাণীর প্রান সংশয় ঘটে। ফলে মাটির জলধারন ক্ষমতা কমে যায়। গাছের সাধারন পুষ্টিতে বিঘ্ন ঘটে। জৈব চাষের মাধ্যমে  মাটির ক্ষতি কমানো যায়, উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আমাদের মাটিকে রক্ষা করা খুবই দরকারি।এই গুরুত্বপূর্ণ কথাটি বলাগড়ের কৃষকেরা বুঝেছেন, তারা অধিক লাভের দিশাতে দিশেহারা না হয়ে আস্থা রেখেছেন বিজ্ঞানের ওপর।

আরও পড়ুন রুক্ষ জমিকে উৎপাদনশীল করবেন কিভাবে?

বায়ো-গ্যাস প্ল্যান্ট ব্যাবহার করে গোবর থেকে মিথেন নির্গমনের পরিমান কমানো যায় ফলে বিশ্ব উশ্নায়ন কমানোর এটি একটি খুব সহজ সমাধান হতে পারে। রাজ্যের কৃষি আধিকারিক ও সরকারের উচিত চাষিদের এই সফল পদ্ধতি অনুসরনে উদ্বুদ্ধ করে তোলা।

- তন্ময় কর্মকার (tanmay@krishijagran.com)

English Summary: pesticide free farming in Bolagarh
Published on: 04 February 2019, 03:48 IST