মান্দসোরের পাশের এক গ্রামের এক কৃষক ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে বাড়িতে রাখা প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ দীর্ঘ সংরক্ষণের জন্য বাড়ির মধ্যেই তৈরি করে ফেলেন হিমঘর (Home made Cold Storage). দীর্ঘদিন ধরে পেঁয়াজের সংরক্ষণ সম্ভব হলে অফ সিজনেও কৃষকেরা এর ভালো দাম পেতে পারেন৷
পেঁয়াজ চাষি ঘনশ্যাম-এর মতে, দীর্ঘদিন পেঁয়াজ সংরক্ষণ করার জন্য তিনি বাড়িতেই হিমঘর তৈরি করে নেন৷ এই পেঁয়াজ চাষির প্রচুর পরিমাণ পেঁয়াজ বাড়িতে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল, তাই তিনি বাড়িতে মাটির থেকে কিছুটা উঁচুতে জালি দিয়ে তার ওপর পেঁয়াজ রাখেন৷ এবং জায়গাটি ঠান্ডা রাখারও ব্যবস্থা করেন ফ্যান রেখে৷
এই হিমঘর বা হোমমেড কোল্ড স্টোরেজ (Home made Cold Storage) তৈরির জন্য ১০,০০০-১২,০০০ টাকা ব্যয় হয়৷ তবে উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন হিমঘর যথেষ্ট ব্যয়বহুল হয়৷ এভাবেই তাঁর সংরক্ষিত পেঁয়াজ থেকে ভালো উপার্জনের আশা করছেন এই কৃষক৷ উল্লেখ্য, মান্দাসোরে প্রতিবছর পেঁয়াজের উযপাদন খুব ভালো হয়৷ কিন্তু চলতি বছরে করোনা ভাইরাসের কারণে দেশব্যাপী চলা লকডাউনে পেঁয়াজের দামও পড়ে যায়৷ ফলে বাড়িতেই পেঁয়াজ মজুত করে রাখতে হয় কৃষকদের৷
সারা দেশে, হোটেল, রেস্তোরাঁ, ফাস্ট ফুড, ধাবা সব বন্ধ থাকায় বাজারে পেঁয়াজের চাহিদা ধাক্কা খায়৷ এমতাবস্থায় কেউ পেঁয়াজ কেনার জন্য প্রস্তুত না হওয়ায় উৎপাদিত পেঁয়াজ খারাপ হতে শুরু করে৷ কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদনের পিছনে প্রচুর ব্যয়ও হয় কৃষকদের৷ একদিকে হিমঘরে রাখার খরচ, পেঁয়াজ বিক্রি না হওয়া, সেই সঙ্গে হিমঘরে এতো পরিমাণ পেঁয়াজ রাখার অসুবিধা সব মিলিয়ে পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ার আশহ্কা ক্রমেই বাড়তে থাকে৷
আর এই দুশ্চিন্তার মধ্যেই বাড়িতে এই হিমঘর (Home made Cold Storage) তৈরির প্রচেষ্টা যেন অনেককেই নতুন পথ দেখাচ্ছে৷ ঘনশ্যামের প্রায় ৮০ ক্যুইন্টাল পেঁয়াজ ছিল৷ প্রতি ক্যুইন্টালে পেঁয়াজের দাম ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকার বেশি ওঠেনি৷ এই টাকায় পেঁয়াজ বিক্রির অর্থ ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া৷
বীজ, সার, রোপন, কীটনাশক, পরিশ্রম সব মিলিয়ে এই মূল্য যে যথেষ্ট নয় তা বলাই বাহুল্য৷ আর সেই পেঁয়াজ বিক্রি না করলে তা নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তো রয়েছেই৷ এমতাবস্থায় ঘনশ্যাম বাড়িতেই পেঁয়াজ সংরক্ষমের জন্য কম টাকায় হিমঘরের (Home made Cold Storage) ন্যায় ব্যবস্থাপনা করেন৷ এতে তাঁর পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ার হাত থেকে বাঁচে৷ এই পেঁয়াজ চাষির প্রচেষ্টা বর্তমানের কঠিন পরিস্থিতিতে অনেককেই যে আশার আলো দেখাতে পারবে এমনটা বলাই যায়৷
বর্ষা চ্যাটার্জি