করোনার চেন ভাঙতে দেশজুড়ে চলছে লকডাউন৷ স্তব্ধ দেশ, দৈনন্দিন জীবনযাত্রাতেও হয়েছে ছন্দপতন৷ সঙ্কটের মুখে দেশের আর্থিক ব্যবস্থা৷ আর এরই মধ্যে সরকার নানাবিধ প্রকল্পের সূচনা করে জনসাধারণের সমস্যা সুরাহার চেষ্টায়৷ লকডাউনে কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটায় অনেকেই অর্থনৈতিক সঙ্কটে৷ এমতাবস্থায় হঠাৎ করে অর্থের প্রয়োজন হলে সাধারণ মানুষ যাতে অথৈ জলে না পড়ে যায়, তার জন্য আপৎকালীন বা জরুরি সময়ভিত্তিক ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করেছে এসবিআই৷
এই এমারজেন্সি লোন বা আপৎকালীন ঋণ গ্রহণের জন্য ব্যক্তিকে ব্যাঙ্কে যাওয়ার প্রয়োজন নেই৷ বাড়িতে বসেই পেয়ে যাবেন এই লোন৷ তাও আবার বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না৷ মাত্র ৪৫ মিনিটেই পেয়ে যাবেন এই এমারজেন্সি লোন৷ লকডডাউন পিরিয়ডে এমনই সুবিধা প্রদান করছে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া৷
যেহেতু লকডাউনে জনসাধারণের দৈনন্দিন জীবনে ব্যাঘাত ঘটেছে, বন্ধ হয়ে গিয়েছে বহু কাজ, সঙ্গে রয়েছে আর্থিক সঙ্কট, তাই এসব মাথায় রেখেই এসবিআই ঠিক করেছে এই লোন যারা গ্রহণ করবে তাদের ৬ মাস পর্যন্ত কোনও ইএমআই দিতে হবে না৷ অর্থাৎ চলতি মাসে কেউ লোন নিলে তাকে আগামী ৬ মাস কোনও ইএমআই দিতে হবে না, তবে তারপর থেকে শুরু হবে ইএমআই৷ এই লোন নিতে হলে যে কোনও দিন আবেদন করা যাবে৷ গ্রাহকদের জন্য ১০.৫০ শতাংশ হারে সুদ রাখা হয়েছে যা তুলনামূলকভাবে সস্তা৷ তবে এই সমগ্র সুবিধা পাবেন শুধুমাত্র এই ব্যাঙ্কের গ্রাহকেরাই৷
লোনের প্রকারভেদ- বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত এই লোন৷ তার ভিত্তিতে রয়েছে টাকার প্রকারভেদও৷ একনজরে দেখে নেওয়া যাক সেই ভাগগুলি৷
পার্সোনাল লোন- ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত
পেনশন লোন- আড়াই লক্ষ টাকা পর্যন্ত
সার্ভিস ক্লাস- পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত
আবেদন জানানোর পদ্ধতি- এই লোন পেতে হলে কয়েকটি সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে৷ এসবিআই ব্যাঙ্কের গ্রাহককে তার রেজিস্টার্ড নম্বর থেকে PAPL<অ্যাকাউন্ট নম্বরের শেষ চারটি সংখ্যা> লিখে ৫৬৭৬৭৬ নম্বরে পাঠিয়ে দিতে হবে৷ ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে আপনাকে ম্যাসেজ পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে যে আপনি এই লোন পাওয়ার জন্য যোগ্য কিনা৷ যারা লোন পাওয়ার যোগ্য তাদের এসবিআই অ্যাপে Avail Now-তে ক্লিক করতে হবে৷ এবার লোনের সময় এবং টাকার পরিমাণ নির্বাচন করতে হবে৷ এবার আপনার রেজিস্টার্ড নম্বরে ওটিপি আসবে, সেই ওটিপি নির্দিষ্ট স্থানে লিখতে হবে, তারপরেই আপনার লোনের টাকা আপনি পেয়ে যাবেন৷
প্রসঙ্গত, লকডাউন পিরিয়ডে এসবিআই-এর এমন বহু সুবিধা গ্রহণ করেই লোন নেওয়া যেতে পারে৷ কৃষকদের জন্যও রয়েছে এগ্রি গোল্ড লোন স্কিম৷ লকডাউনে কৃষিকাজে ছাড় দেওয়া হলেও অনেকক্ষেত্রে আটকে রয়েছে কৃষক-ব্যবসায়ীদের পেমেন্ট৷ যার প্রভাব ঘুরেফিরে পড়ছে কৃষিকাজের ওপরেই৷ এমতাবস্থায় এসবিআই এগ্রি গোল্ড লোন-এর মাধ্যমে কৃষকেরা তাদের কাছে মজুত থাকা সোনা দিয়ে তার ওপর লোন নিতে পারে৷ যে কৃষক লোন নিতে চান তার নামে চাষের জমি থাকতে হবে, যার প্রমাণপত্রের একটি কপি ব্যাঙ্কে জমা করতে হবে৷ এই স্কিমের সুবিধা শুধুমাত্র কৃষকদের দিতেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ তবে যে কৃষকের নামে চাষের জমি নেই , কিন্তু তার নামে ট্রাক্টর রয়েছে, সেক্ষেত্রেও ওই কৃষক সোনার গয়না জমা করে এই লোন নিতে পারবেন৷ এতে বার্ষিক ৯.৯৫ শতাংশ সুদের হার ধার্য করা হয়েছে৷ যে কোনও গ্রামীণ শাখা থেকে এই লোন নিতে পারবেন কৃষকেরা৷
বর্ষা চ্যাটার্জি