এই 20টি ব্যবস্থা পোল্ট্রি খামারকে বার্ড ফ্লু থেকে নিরাপদ রাখবে! ভার্মি কম্পোস্ট ইউনিটের জন্য ৫০% পর্যন্ত ভর্তুকি পাওয়া যাবে, শীঘ্রই আবেদন করুন এই হাইব্রিড জাতের টমেটো 900 কুইন্টাল প্রতি হেক্টর ফলন দেবে দুধের সঠিক সময় বেছে নিলে উৎপাদন বাড়বে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
Updated on: 21 October, 2022 2:01 PM IST

প্রতাপ মুখোপাধ্যায়, শ্রীপর্ণা চক্রবর্তী মজুমদার ও অনীশ দাসঃ কৃষক তাঁর জীবন ও জীবিকার জন্য সারা বছর ধরে নানা ফসল ফলান । সন্তোষজনক ফলন পেতে সব চাষেই দরকার চাষ ব্যবস্থাপনায় নূন্যতম কিছু পরিচর্যা । মাছ চাষের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয় না। পুকুর তৈরীর পর থেকে পরিবেশ সচেতনভাবে মাছ চাষের প্রতিটি পর্বে তাঁর সৃজন –সত্ত্বা অটুট রেখে জল ও মাটির নিয়মিত পরীক্ষা বিষেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী এগিয়ে চলা সত্ত্বেও প্রাথমিক সার প্রযোগ সঠিক ও চারা মাছ ছাড়া,খাবার প্রয়োগ-ইত্যাদি বিষয়ে নিয়মিত লক্ষ্য রাখলেও সাধারন কিছু সমস্যা থেকেই যায়। উপযুক্ত ব্যবস্থা মা নিতে পারলে চাষ থেকে লাভ ওঠানো মুসকিল হয়ে পড়ে। এরকম তিন-চারটি উদ্ভূত সমস্যা ও সহজ পথে, স্থানীয়ভাবে কিভাবে তার সমাধান করা যেতে পারে এই সংক্ষিপ্ত আলোচনায় তার কিছুটা উপায় খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে ।

শিকারী পাখীর নিয়মিত আনাগোনা পুকুরের আশেপাশে বড়-ছোট গাছ থাকুক বা না থাকুক বক,পানকৌড়ী ,মাছরাঙা ইত্যাদি আসা এবং তারা কিন্তু কেউই বিনা শিকারে ফিরে যাবে না অর্থাৎ নিয়মিত ভাবে মাছ কমতে থাকবে যদি না ব্যবস্থা নেওয়া যায় । সূতো দিয়ে একটি ঘেরাটোপও বানানো যায় । অনেকে করেনও কিন্তু কেউ আবার পরিত্যক্ত মাছধরার জাল ব্যবহার করে এমনভাবেই টানা দেন যে পরিবেশবিদদের আপত্তির কারন হয়ে দাঁড়ায় ও কিছু মাছ আছে বিশেষত রুই যারা প্রায়শই পুকুরে লাফালাফি করতে অভ্যস্ত তারা অটকে মারা যেতে পারে ।

আরও পড়ুনঃ Mola Fish Farming: পুকুরে মলা মাছ চাষের সহজ পদ্ধতি শিখে নিন

দ্রবীভূত অক্সিজেন ও জলে র্কাবন-ডাই-অক্সাইড এর ভারসাম্য জলবায়ু জনিত কারনে,সূর্য্যালোকের অনিয়মিত উপস্থিতি ,তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া জলের পিএইচ মান কমে গেলে উৎপাদনশীলতা ব্যহত হতে পারে ফলশ্রুতি জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমান কমে ও মাছ জলের উপরের দিকে উঠে এসে খাবি খায় । এতে বাড়বৃদ্ধিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ই ও সেই সঙ্গে মাছ মরে যেতে পারে বা সহজেই চুরি হয়ে যেতে পারে । নজরদারী ঠিক থাকলে গ্রামীন উপায়ে অক্সিজেন যোগানের বন্দোবস্ত করেই হোক সমস্যার নিরসন তৎক্ষনাৎ সম্ভব-প্রায় নিখরচাতেই পুকুরের বিভিন্ন স্তরে থাকা মাছকে খাবার পৌঁছোনো সাধারন পেলেট খাবার –যেগুলি ফার্মে প্রস্তুত সেমাই চাউমিন আকারে তৈরী করা হয় তৈলবীজের খোল ও চালের পালিশ গুঁড়ো ,ডালের খোসা ইত্যাদি সহয়োগে । সেক্ষেত্রে পুকুরের বিভিন্ন গভীরতায় খুঁটি লাগিয়ে সেখানে পরিত্যক্ত জল কিকে চাষী যদি নিয়মিত ভেলার সাহায্যে পৌঁছে-সেই চিহ্নিত স্থানে খাবার দিয়ে দেন তাহলে উপরের স্তর ,মাঝের স্তর ও নীচের স্তরে থাকা মাছগুলির খাবার প্রাপ্তি নিশ্চিত হয় আর কি ।

ভাসমান খাবার প্রয়োগে ভ্রান্তি বেশী দেখা যায় , ভাসমান খাবার যাঁরা কেনেন ও প্রয়োগ করেন তাঁদের জানা দরকার এই মহার্ঘ্য খাবার মাছ পুরোপুরি খেতে পারছে কিনা প্রায়সই বাতাসের গতির পর নির্ভর করে ভাসমান খাবার অনেক সময়ে পুকুরের প্রান্তে চলে যায় বা বড় জোর উপরিস্তরের মাছের নাগালেই মাত্র যাতে । এইভাবে চললে রুই, বাটা, মৃগেল, কালবৌস ইত্যাদি মাছগুলির বাড় তেমন হবে না ফলে চাষী দাম পাবেন না । ছবিতে যেমন দেখানো হয়েছে এইভাবে  পিভিসি পাইপের টুকরো জোগার করে একটি ঘেরাটোপের ব্যবস্থা করা যায় যেখানেই মাত্র ভাসমান খাবার প্রয়োগ হবে-অন্যত্র নয় ।

আরও পড়ুনঃ Profitable Fish Farming - আধুনিক পদ্ধতিতে পুকুরে শিং মাছ চাষ করে আয় করুন অতিরিক্ত অর্থ

সমস্যা আরও অনেক আছে-যেমন গুগলিও আধিক্য হতে পারে । এক্ষেত্রে কয়েকটি ব্ল্যাক কার্পের উপস্থিতি এই সমস্যায় কার্যকারী হতে পারে । অনেক সময় জৈব পদার্থের কারনে জলের পিএইচ মান কমে যেতে পারে । চুন প্রয়োগ খুবই কার্যকারী। তার আগে সম্ভব হলে রেকার, কাঁটা, হরকা দিয়ে পুকুরের নীচের মাটি আঁচড়ে দিতে পারলে জমাগ্যাসও বেড়িয়ে যায় ও পিএইচ স্বাভাবিক হয়ে চাপমুক্ত হয় জলজ পরিবেশ । চাষী অনেক সময়ে ফসফেট সার প্রয়োগ করে থাকেন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ না নিয়েই। এতে জলের উপরি স্তরে লাল সর এবং তা রোদ উঠলে প্রকট হয় ও সন্ধ্যে নামার আগে আর থাকে না । খাবার প্রয়োগ ও সার প্রয়োগ এই সময়ে বন্ধ রাখার কথা সাময়িক ভাবে জলেও এবং পুরোনো অব্যবহৃত সুতির শাড়ি বা ধুতি খুব সন্তর্পনে এই লাল স্তরের পার রেখেই তুলে নিতে পারলে এবং তা ডাঙায় পারে এসে ধুয়ে নিলে এই উপদ্রব কমে। অনেক সময় ঘোলাভাব বেড়ে যায় জলের । স্বচ্ছতা সেকচি ডিসকের সাহায্যে মেপে নিয়ে যদিতা ৩০ সেমি-এর নীচে চলে আসে সেক্ষেত্রে ফটকিরি জল স্যালাইন বোতলের সাহায্যে ড্রিপ পদ্ধতিতে সারাদিন ধরে(১ লিটার জলে ১০গ্রাম ফটকিরি গুঁড়ো) দিতে পারলে স্বচ্ছতা বাড়বে । কলাগাছের কান্ড কুচিয়ে তা আলুর বস্তায় বেঁদে ডুবিয়ে রাখা যেতে পারে ৪৮ঘন্টাতারপর তা তুলে নিতে হবে ।

আমাদের কয়েকশ প্রজাতির মিষ্টি জলের মাছ আছে । এই সম্পদকে সংরক্ষন ও করতেই হবে। এরা পরিবেশ পরিশোধন কারী স্থল ও জলজ প্রানীর পুষ্টি সুরক্ষায় । আমাদের মাছ চাষের পরম্পরালব্ধ জ্ঞানের সাহায্য নিয়ে চাষের দৈনন্দিন সমস্যার সহজ সমাধন খঁজে নিতে পারি । জলাশয়ের উৎপাদনশীলতা বজায় থাকবে ও চাষীও বিপর্য্যস্ত বোধ করবেন না । রোগবালাই এড়াতেও কিভাবে স্থানীয় উপাদানের সহায়তায় নেওয়া যেতে পারে আগামী কোনো সংখ্যায় তার বিবরন থাকবে আশা করি ।

English Summary: Some problems arising in pond fish farming and their local remedies
Published on: 21 October 2022, 02:00 IST