কৃষিজাগরন ডেস্কঃ বৃষ্টি কম হওয়ার কারনে গাছের বাষ্পমোচনের হার বেড়ে যাচ্ছে। যার ফলে ভূ-গর্ভস্থ্য জল বেরিয়ে গিয়ে শুষ্কতা তৈরি হচ্ছে।এর ফলে চা উৎপাদনে অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছে ডুয়ার্স।এর সাথে যুক্ত হয়েছে শীতকালীন হেলোপেলটিসের মতো রোগপোকার আক্রমণ। প্রাকৃতিক নানা বিরূপ প্রভাবের কারনে ডুয়ার্সে এবছর নভেম্বরের মাসের চা উৎপাদন গতবারের থেকে সাড়ে ৪ শতাংশেরও বেশী হ্রাস পেয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত এই পিছিয়ে থাকার পরিমান গতবারের থেকে প্রায় ২ শতাংশ। উত্তর দিনাজপুরের বাগানগুলিকে বাদ দিলে তরাইয়ের বাগানগুলিতেও একই পরিস্থিতি।
বিশেষজ্ঞদের মতে এই ঘটাতি মেটানো সম্ভব নয়।কারন কয়েকদিনের মধ্যেই শেষ হবে চায়ের মরসুম।বিশেষজ্ঞদের,মতে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার প্রভাব সরাসরি উৎপাদনের ওপর পড়েছে।প্রায় ৫৭ টি বাগানের উপর সমিক্ষা চালিয়ে প্রাপ্ত রিপোর্টের ওপর ভিত্তি বিশ্লেষণটি তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ এই কাজটি না হলে আসবে না আবাস প্লাসের টাকা! রাজ্যকে কড়া নির্দেশ কেন্দ্রের
সার্বিকভাবেও এবার যে উৎপাদন কমে এসেছে তা এই রির্পোট থেকে স্পষ্ট। বিশ্লেষণ সেদিকেই ইঙ্গিত করছে। তবে উৎপাদন যে বাড়াবাড়ি রকমের কমেছে তেমনটা মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
মিডিয়া রির্পোট অনুযায়ী,টিআরএ-র নাগরাকাটা শাখার উত্তরবঙ্গ আঞ্চলিক গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্রের নভেম্বর মাসের উৎপাদনের তথ্য বলছে টিআরএ-র সদস্যভুক্ত ডুয়ার্সের ৮ টি সাব ডিস্ট্রিক্ট এলাকার চা বাগানগুলি মিলিয়ে ২০২১ এর নভেম্বরে উৎপাদন ছিল ৫০ লক্ষ ৪১ হাজার ৬১৭ কিলোগ্রাম। যা এবার কমে দাঁড়িয়েছে ৪৮ লক্ষ ৯ হাজার ৭৭৫ কিলোগ্রামে। উৎপাদনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে চালসা সাব ডিস্ট্রিক্ট এলাকার বাগানগুলি। সদ্য শেষ হওয়া নভেম্বরে সেখানকার বাগানগুলি মিলিয়ে উৎপাদন গতবারের চেয়ে ২৫.২ শতাংশ কম। এরপরই রয়েছে বিন্নাগুড়ি (২৩ শতাংশ), মেখলিগঞ্জ ( ১৪.৮ শতাংশ) ও নাগরাকাটা (৭.২ শতাংশ) সাব ডিস্ট্রিক্ট এলাকা।
আরও পড়ুনঃ পরিবেশ রক্ষায় এই তিনটি গাছের চাষ করুন, হবেন কোটিপতি
চলতি মাসের ১৭ তারিখ থেকে বাগানগুলিতে কাঁচা পাতা তোলা বন্ধ হয়ে যাবে। যার অর্থ এবারের মরসুম প্রায় শেষ। ফলে সার্বিক ঘাটতি আর পূরণ হবে না বলেই ধারনা। টি বোর্ডের খসড়া তথ্যের প্রবণতা অনুযায়ী উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি গোটা দেশের উৎপাদনও গত বারের থেকে কম হতে চলেছে। তবে অর্থনীতির চাহিদা-যোগানের ভারসাম্যের সূত্র মেনে চায়ের দাম বাড়ার কথা থাকলেও তা কিন্ত হয় নি। কাঁচা পাতার দাম তো এখনো কিলো প্রতি ১৪-১৫ টাকা দরেই বিক্রি হচ্ছে বলে খবর।ফলে ক্ষতির মুখে পড়ছে ক্ষুদ্র চাষিরা।