রাজস্থান থেকে পঙ্গপালের দল বর্তমানে মধ্য প্রদেশ এবং দক্ষিণে মহারাষ্ট্রে আক্রমণ করেছে। পঙ্গপাল নিয়ন্ত্রণকারী দফতর এখন পর্যন্ত দু'সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে পঙ্গপালদের ক্ষেতে আক্রমণ প্রতিহত করার অবিরত চেষ্টা করে চলেছে।
আম্ফানের প্রভাবে বিধ্বস্ত পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা, এর মধ্যেই রাজস্থান থেকে পঙ্গপালের দল বর্তমানে মধ্য প্রদেশ এবং দক্ষিণে মহারাষ্ট্রে আক্রমণ করেছে। পঙ্গপাল নিয়ন্ত্রণকারী দফতর এখন পর্যন্ত দু'সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে পঙ্গপালদের ক্ষেতে আক্রমণ প্রতিহত করার অবিরত চেষ্টা করে চলেছে। পঙ্গপালের দল একদিনে ৩৫,০০০ জনের মতো খাবার খেতে পারে, অর্থাৎ ভয়াবহ এই পতঙ্গের কৃষিজমিতে আক্রমণে দেশে দেখা দিতে পারে চরম খাদ্যসঙ্কট। রিপোর্ট অনুযায়ী, মহারাষ্ট্র ১৯৯৩ সালের পর এই বছর পুনরায় প্রথম পঙ্গপালের আক্রমণের কবলে। শুধু মহারাষ্ট্রই নয়, ভারতের বেশিরভাগ অংশই পঙ্গপালের আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত। প্রশাসন উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি এবং মথুরায় সতর্কতা জারি করেছে। তথ্য অনুযায়ী, এই পঙ্গপালের দল ২২ টি গ্রামে একত্রে হানা দিয়েছে।
কৃষি বিভাগের যুগ্ম পরিচালক রবীন্দ্র ভোসলে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, ‘অমরাবতী জেলা থেকে পঙ্গপালের দল রাজ্যে প্রবেশ করেছে। এরপর ওয়ার্ধা এবং এখন এটি নাগপুরের কাতল তহসিলে আক্রমণ করেছে’। তবে জেলায় পঙ্গপালের আক্রমণ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে। ক্রমবর্ধমান পঙ্গপালের আক্রমণের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রস্তুতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
পাকিস্তান থেকে, ১১ ই এপ্রিল রাজস্থানের মধ্য দিয়ে পঙ্গপালের ঝাঁক ভারতে প্রবেশ করেছে। বিগত সোমবার, জয়পুর শহরের কয়েকটি আবাসিক এলাকায় এই কীটের দল হানা দেয় এবং সেখানে কৃষিজমির ক্ষতি করে।
এক রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গেছে, মে মাসের প্রথম দিকে জয়সওয়ালমীর, যোধপুর, বিকানের এই স্থানগুলিতে পঙ্গপালদের দল কে প্রথমে দেখা যায়। এখন তারা মহারাষ্ট্রেও আক্রমণ করেছে। পশ্চিমবঙ্গে এই পঙ্গপালের প্রবেশ এখনও না ঘটলেও রয়েছে সতর্কতা। কয়েকজন কৃষিবিদের মতে, এই পঙ্গপালের আক্রমণের সময় জুলাই এবং তার পরবর্তী সময়ে। কিন্তু কৃষকদের সৌভাগ্য যে এখন জমিতে কোন প্রধান ফসল নেই। কারণ মরসুমের ধান, গম জাতীয় প্রধান ফসল জমি থেকে সংগ্রহ করা সম্পূর্ণ এবং খরিফ মরসুমের শস্য এখনও বপন করা হয়নি। তাই কৃষিজমির এবং ফসলের অনেকাংশে ক্ষতি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু কৃষকদের প্রধান ফসল ধ্বংস করে চরমতম সর্বনাশ করতে পারেনি এই পঙ্গপালের দল। সূত্র অনুসারে, খরিফ মরসুমের আগেই LWO চেষ্টা করে চলেছে পঙ্গপাল দমনের। মহারাষ্ট্রের জেলা ও কৃষি বিভাগের কর্মীরা অভিবাসী এই পোকার হাত থেকে কৃষি জমি বাঁচাতে ফসল ও গাছপালায় রাসায়নিক স্প্রে শুরু করেছেন।
সরকার বিশেষায়িত স্প্রে মেশিন ব্যবহার করছে এবং প্রতিক্রিয়া সমন্বয় করতে ১১ টি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করেছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী এবং কীটনাশক সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে তিনটি বৈঠক করেছেন। সরকার কীটনাশক স্প্রে করতে ড্রোন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
স্বপ্নম সেন
https://bengali.krishijagran.com/news/locust-attack-on-indian-agriculture/