দীর্ঘ ১৯ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমের Litchi Cultivation পর বীজ ছাড়া লিচু উদ্ভাবন করেছেন অস্ট্রেলিয়ার নর্থ কুইন্সল্যান্ডের এক কৃষক। অস্ট্রেলিয়ার সারিনা বিচে বসবাসকারী এই উদ্ভাবকের নাম টিবি ডিক্সন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, চীন থেকে গাছ এনে তিনি এই গাছের উপর গবেষণা শুরু করেন।
সফল কৃষকের বক্তব্য (Success Story) -
কথা প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, এই প্রকল্পে তার ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার মার্কিন ডলার। তিনি বছরের পর বছর পরিশ্রম করে লিচুর বিভিন্ন জাত উদ্ভাবন করেন। তার সর্বশেষ সফলতা বীজ ছাড়া লিচু। টিবি ডিক্সন বলেছেন, ‘এই লিচু খেতে খুবই সুস্বাদু। স্বাদ কিছুটা আনারসের মতো।’
তিনি আরো বলেন, “কঠোর পরিশ্রমের ফলে তিনি আজ সাফল্য অর্জন করেছেন। এই বীজ ছাড়া লিচু বাণিজ্যিকভাবে ভোক্তাদের কাছে পরিচিতি পাবে বলে তিনি আশা করছেন”।
লিচু চাষে আয় ৩১ হাজার টাকা -
পশ্চিমবঙ্গের লিচুর উৎপাদনশীলতা হেক্টরে প্রায় ১০ মেট্রিকটন। বিশেষজ্ঞ কল্যাণ চক্রবর্তীর বক্তব্য অনুযায়ী, এ রাজ্যে কৃষক এক বিঘাতে লিচু চাষ করে উৎপাদন করেন প্রায় তেরশো কেজি। আমাদের বাজারে লিচু ১০০ টাকা পর্যন্ত প্রতি কেজিতে বিক্রয় হয়, সুতরাং এক বিঘা জমির ফসল বিক্রয় করে চাষীর উপার্জন হতে পারে প্রায় সাড়ে ছাব্বিশ হাজার টাকা। চাষের খরচ বিঘাতে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার টাকা বাদ দিলেও ব্যয় পরবর্তী চাষে লাভ থাকবে বিঘায় কুড়ি হাজার টাকা। এর সঙ্গে যদি সাথী-ফসল হিসাবে কিছু সবজি চাষ করা হয়, তবে তা কৃষকের পক্ষে আরও লাভজনক হবে। আর কৃষক যদি আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে চাষ করেন তবে ফসলের উৎপাদন কমপক্ষে পঁচিশ শতাংশ বাড়তে পারে, স্বাভাবিকভাবে ব্যয় খরচও এতে সামান্য বাড়বে। তৎসত্ত্বেও অনুমান করা যায় সহজেই, পঁচিশ-ত্রিশ শতাংশ ফলন অধিক হলে চাষীর লাভের পরিমাণও বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় একত্রিশ হাজার টাকা।
আমাদের দেশে বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া উত্তরপ্রদেশ লিচু চাষে অগ্রগণ্য। এছাড়া অসম, ওড়িশা, উত্তরাখণ্ড, পাঞ্জাবব এবং অরুণাচল প্রদেশে সম্প্রতি লিচুর চাষ বাড়ছে। ভারতবর্ষ ছাড়া আর যে যে দেশে লিচু চাষ ব্যাপকভাবে হয় তা হল চিন, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইজরায়েল ও অস্ট্রেলিয়া।
পশ্চিমবঙ্গে ২০০৬-০৭ সালে লিচু চাষের এলাকা ছিল প্রায় আট হাজার হেক্টর এবং ফলন প্রায় ৭২ হাজার মেট্রিকটন। অর্থাৎ উৎপাদনশীলতা প্রায় সাড়ে নয় মেট্রিকটন। এখন এলাকাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় নয় হাজার হেক্টর এবং ফলন ৮০ হাজার মেট্রিকটন। অর্থাৎ দিনে দিনে লিচুর চাষ লাভজনক হবার কারণেই এলাকা বাড়ছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে যে পরিমাণ লিচু উৎপাদিত হয় তার মাত্র এক শতাংশ বাইরে রপ্তানি করা হয়, দেশের মোট উৎপাদন অনেক বেশি হওয়ায় ১ শতাংশ রপ্তানি কম না হলেও আগামী দিনে এই পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে। কিন্তু আর্থিক উন্নয়নের লক্ষ্যে অধিক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য ভালো মানের লিচু উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে জাতীয় উৎপাদনের প্রায় ৮ শতাংশ লিচু রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে।
আরও পড়ুন - আইএআরআই বহু পদে নিয়োগ ২০২১, দেখুন আবেদন পদ্ধতি (Job Post- IARI Recruitment 2021,)