উৎপল রায়, জলপাইগুড়ি, কৃষি জাগরণ: টমেটোর দাম কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন জলপাইগুড়ি'র বিভিন্ন এলাকার চাষিরা। কাঁচা টমেটো ৪ টাকা, পাকা টমেটো ৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এই মৌসুমে জলপাইগুড়িতে বিপুল পরিমাণ টমেটো উৎপাদন হয়। এবারও শুরুর দিক লাভের মুখ দেখলেও মৌসুমের এই সময়ে এসে উৎপাদন খরচ তুলতে অনেকটাই হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকরা।
অন্যদিকে ময়নাগুড়ির মরিচবাড়ি এলাকার টমেটো চাষি যুগল সরকার শ্রমিকের ঘাটতিতে কয়েক বিঘা টমেটো চাষ করে সমস্যায় পড়েছে। তিনি দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে টমেটো চাষ করেন। বিগত বছর গুলোতে সেই রকম সমস্যা হয়নি আর শ্রমিকের মজুরি বেশি একটা ছিল না। এবছর সার এবং বিভিন্ন পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে শ্রমিকদের মজুরি অধিক বেড়ে গেছে। সেই তুলনায় চাষের জমিতে শ্রমিক লাগাতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে টমেটো গাছ। যুগলের দুই বিঘা টমেটো চাষ করতে প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ঐতিহ্যের তাঁত থেমে যাচ্ছে ময়নাগুড়িতে
যুগল সরকার বলেন, “শ্রমিকের মজুরি ৩০০ টাকা এবং সারের অতিরিক্ত দাম। সেই তুলনায় কৃষি কাজ করে কোন লাভ নেই। বর্তমান পরিস্থিতি কৃষকদের পরিস্থিতি একদম ভালো নয়, মাঠে মারা যাওয়ার মত”। টমেটো চাষের জমিতে আগাছা পরিষ্কারের জন্য এবং জমি থেকে টমেটো তোলার জন্য সেই রকম শ্রমিক না পাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের চাষিরা। তাদের দাবি খেত থেকে টমেটো তুলে বিক্রি করার পর যে মূল্য পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়ে শ্রমিকদের মজুরি হচ্ছে না। নিজের পকেট থেকে মজুরি দিতে হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ হাতির হামলায় মৃত্যু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর, বিরাট সিদ্ধান্ত রাজ্য বন দফতরের
চূড়াভান্ডারের আরেক চাষি বিনোদ রায় বলেন, এবার একই সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় টমেটো চাষ হচ্ছে এবং বাইরের রাজ্য গুলোতে টমেটো সেরকম ভাবে যাচ্ছে না। সেই কারণে কৃষকদের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে। এবার ৪০ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করেন। গত বছরের তুলনায় এবারে টমেটোর ফলন ভালো। কিন্তু দাম একেবারেই নেই। গত বছরেও লোকসানে পড়তে হয়েছিল রোগবালাইয়ের জন্য। আর এবারে দাম না পেয়ে লোকসানে পড়তে হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে কৃষকেরা টমেটোর চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।