দেশব্যাপী চলছে লকডাউন, এই পরিস্থিতিতে আর্থিক অনটনের মধ্যে রয়েছেন অনেকেই৷ একদিকে কৃষিকাজে ছন্দপতন এবং অন্যদিকে উৎপাদিত ফসলের বিক্রিতে মন্দা, এই দুই নিয়ে কার্যত নাজেহাল কৃষকেরা৷ পুরুষ থেকে মহিলা অনেকেই তাই মাঠ ছেড়ে এখন ঘরবন্দি জীবন কাটাচ্ছেন৷ এই কঠিন পরিস্থিতিতে এবার মহিলাদের জন্য রয়েছে সুখবর৷ এই লকডাউন পরিস্থিতিতে মহিলাদের অর্থোপার্জনের উদ্দেশ্যে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান প্রচলন করলেন ‘জীবন শক্তি যোজনা’ প্রকল্প- যার মাধ্যমে বাড়িতে বসেই কাজ করে টাকা উপার্জন করতে পারবেন মহিলারা৷
কী এই ‘জীবন শক্তি যোজনা’?
এই জীবন শক্তি যোজনায় কীভাবে উপার্জনের সুযোগ রয়েছে, চলুন জেনে নেওয়া যাক৷ এই যোজনার মাধ্যমে মহিলারা বাড়িতে বসে মাস্ক তৈরি করবেন এবং সরকার প্রতিটি মাস্ক ১১ টাকা মূল্যে ক্রয় করবে৷ বর্তমান পরিস্থিতিতে সবথেকে বেশি প্রয়োজনীয় মাস্ক এবং বাড়িতে বসে খুব সহজেই এই প্রয়োজনীয় জিনিসটি তৈরি করতে পারবেন মহিলারা৷ আর তা সরকারকে বিক্রি করে টাকাও উপার্জন করতে পারবেন তারা৷ টাকা যাতে দ্রুত মহিলাদের হাতে আসে সেই বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী৷
করোনা সংক্রমণের হাত থেকে দেশবাসীকে রক্ষা করতে লকডাউন চলছে, বর্তমানে যার দ্বিতীয় পর্যায় চলছে৷ আগামী ৩ রা মে পর্যন্ত রয়েছে এর মেয়াদ৷ এই লকডাউনে খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না সাধারণ মানুষ৷ ফলে অনেকের রুজি রোজগার প্রায় বন্ধ বা বন্ধের মুখে৷ বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে মাস্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয় জিনিস৷ আর তাই এই মাস্ক বাড়িতে বসে তৈরি করেই মহিলারা যাতে রোজগার করতে পারেন, সেই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে৷
জানা গিয়েছে, সরকার মহিলাদের একবারে ২০০ মাস্ক তৈরির অর্ডার দেবে৷ এই মাস্ক সূতির কাপড় দিয়ে তৈরি করতে হবে৷ সরকারী উদ্যোগেই সেই মাস্ক সংগ্রহ করে নেওয়া হবে৷ যেদিন মাস্ক জমা করা হবে, সেদিন বা তার পরের দিন ওই মহিলা কর্মীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তরিত করা হবে বলেও জানা গিয়েছে৷
বাড়িতে মাস্ক তৈরি করতে যারা ইচ্ছুক সেইসব মহিলাদের ০৭৫৫-২৭০০৮০০ এই নম্বরে ফোন করে নাম নথিভুক্ত করতে হবে৷ তারপরেই তাদের মাস্ক তৈরির অর্ডার দেওয়া হবে৷
জানা যাচ্ছে, মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন জেলার বহু মহিলা ইতিমধ্যেই এই কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন৷ দেওয়াস জেলার গ্রামগুলি থেকে প্রায় ১৫০ মহিলা প্রতিদিন ২০০০-এর ওপর মাস্ক তৈরি করছে৷ মির্জাপুর, রতেড়ি, আকবরপুর, খটাম্বা, মহুখেড়া, দত্তোর, খোখরিয়া, বোরখেড়া, সকতলি প্রভৃতি বিভিন্ন গ্রামের মহিলারা সক্রিয়ভাবে এই মাস্ক তৈরির কাজ করছেন৷ তাদের এই মাস্ক চিকিৎসালয়, গ্রাম পঞ্চায়েত, মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন প্রভৃতি বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হয়৷
জীবন শক্তি যোজনা ঘোষণা করার প্রথম ঘন্টায় ৩২৫ জন মহিলা নাম তালিকাভুক্ত করান বলে জানা যায় এবং প্রথমদিনেই এই সংখ্যা দাঁড়ায় ৪২০০-এ৷ রেজিস্ট্রেশন এখনও চলছে, এই প্রকল্পে দুই স্তরযুক্ত মাস্ক তৈরি করা হচ্ছে সুতির কাপড়ের দ্বারা৷ দুটি স্তর থাকায় এটি জীবাণু প্রতিহত করতে অন্যান্য সাধারণ মাস্কের থেকে বেশি প্রভাবশালী এবং এটি বাড়িতে সহজেই তৈরি করা সম্ভব৷ মধ্যপ্রদেশে সরকারের উদ্যোগে বহু মহিলাই সক্রিয়ভাবে এই কাজ করছেন৷
বর্ষা চ্যাটার্জ্জী