অন্যান্য ই-কমার্স থেকে একদমই আলাদা। উদ্দেশ্যও মহৎ। জৈব চাষে উৎপন্ন পুষ্টিকর সঠিক খাবার সবার কাছে পৌঁছে দিতে 'ভিলেজ অর্গানিকা'-র ভূমিকা এখন মানুষের মুখে মুখে। একদা আইটি প্রফেশনাল কাঞ্চন কুমারের উদ্যোগে জন্ম নিয়েছে এই বিশেষ ই-কমার্স সংস্থার।
স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারে 'ভিলেজ অর্গানিকা’ (Village Organica in restoring health):
বর্তমান সময়ে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি গত শতাব্দীগুলির তুলনায় অনেকাংশে উন্নত। চিকিৎসা বিজ্ঞান প্রসারে মানব সভ্যতার অগ্ৰগতি একথায় নজিরবিহীন। মানুষ আগের থেকে এখন অনেক বেশি স্বাস্থ্য সচেতন। পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ ও স্বাস্থ্যকর অভ্যাস বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের জীবনযাত্রাও বদলেছে। তবুও, কোথাও যেন রয়ে গেছে এক শূন্যস্থান। বহু মানুষ স্বাস্থ্যবান শরীরের অধিকারী হয়েও বিভিন্ন রোগের কবলে পড়ছেন। জীবনে নেমে আসছে মারণ অসুখ ক্যান্সারের মতন রোগ। আইটি- পেশার সঙ্গে যুক্ত কাঞ্চন কুমারকে কিছু মানুষের এই পরিণামের কথা ভাবিয়ে তুলেছিল। বেশিদিন লাগেনি, কাঞ্চনের গবেষণাই শেষে ঠিক প্রমাণিত হল। সঠিক ডায়েটের অভাবে বহু মানুষের জীবনে নেমে আসছে এই সব মারণ রোগ-ব্যাধি। হঠাৎ করে একদিন কাঞ্চন তার চাকরি ছেড়ে দিলেন। তাঁর চোখে তখন এক সুদূরপ্রসারী স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার অভিপ্রায়। যে করেই হোক ভারতের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে বিনা কীটনাশকের, পুষ্টিকর খাদ্য। তারই সঙ্গে নিজের ব্যবসায়িক বৃদ্ধিকেও ত্বরান্বিত করার প্রয়াস ছিল তাঁর মধ্যে।
দীর্ঘ দু' বছর ধরে গোটা ভারত চষে ফেললেন দেশজ জৈব পদ্ধতিতে প্রস্তুত খাদ্য সামগ্রীর সন্ধানে। মানুষের কাছে শুধু সঠিক খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়াই নয়, তাঁর লক্ষ্য ছিল জৈব পদ্ধতিতে চাষের হালহকিকত খুঁজে বার করা। জৈব চাষ করার বিভিন্ন অন্তরায় অথবা এই চাষের ভবিষ্যৎ সব নিয়েই তাঁর অন্বেষণ ছিল ভীষণই গভীর।
চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ (Contacts with Farmers):
দেশ জুড়ে বিভিন্ন চাষিদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগও তৈরী হতে থাকে ধীরে ধীরে। জৈব চাষের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন চাষিদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠায়, সহজেই তিনি চাষবাসের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে একাত্ম হয়ে পড়েন। কাঞ্চন কুমারের মুখ্য উদ্দেশ্যই ছিল পুষ্টিকর খাদ্য সামগ্রী মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া, এর সাথে তিনি লক্ষ্য রেখেছিলেন যাতে জৈব চাষের সঙ্গে যুক্ত কৃষকরা তাঁদের উৎপাদনের সঠিক দাম পায়। জৈব চাষের মাধ্যমে উৎপন্ন খাদ্যসামগ্রী ও তার বিপণন এবং ব্যবসা, এভাবেই কাঞ্চন কুমারের হাত ধরে গড়ে ওঠে ভিলেজ অর্গানিকা-র মতন অর্গানিক ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম। এই ই-কমার্সের ওয়েবসাইট House of Village ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে কৃষকদের উৎপন্ন সঠিক পুষ্টিকর খাদ্য সামগ্রী। দেশের ১২ টি রাজ্যের শতাধিক কৃষক পরিবারের দিকে ভিলেজ অর্গানিকা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। করোনা অতিমারীর তীব্রতম সময়টাতেও এই কৃষকদের কাজহারা হতে হয়নি।
এগোনোর নামই জীবন (Going Forward):
দেশ জুড়ে মানুষের ভালোবাসা কাঞ্চন কুমারের এখন চলার পাথেয়। মানুষের ঘরে ঘরে ভিলেজ অর্গানিকা বহুলাংশে পৌঁছে গেলেও, কাঞ্চন কুমার মনে করেন এখনও অনেক কাজ বাকি। স্বপ্ন পূরণ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু স্বপ্নের ব্যাপ্তি বাড়াতে তাঁদের আরও খাটতে হবে। দেশ জুড়ে আরও বেশি মানুষের কাছে সঠিক গুণমানের খাদ্যসামগ্রী নিয়ে পৌঁছে যেতে মরিয়া কাঞ্চন ও তাঁর ভিলেজ অর্গানিকা, একথা অস্বীকারের কোনও জায়গায় নেই।
আরও পড়ুন:Rural women empowerment: কৃষির বিকাশে নারীদের ভূমিকা ও অবদান