দুর্গাপুজোর আগে জেলায় জেলায় তিতলির প্রভাবে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হয়েছে। এর আগে দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় আমনে সেচের প্রয়োজন ছিল। চাষিরা আশায় ছিলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টি হলে আমন ধানে বেশ কিছুটা সুবিধে হবে। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। ধান ফলানো পর্যন্ত আরও বৃষ্টির প্রয়োজন। চড়া দরে কেরোসিন কিনে চাষিরা পাম্পসেট দিয়ে আমনে সেচের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে সর্বত্র সেচের সুযোগ নেই। নদীনালা খালে জলও নেই বললে চলে। এতে বিপত্তিতে পড়েছেন চাষিরা। বাড়ছে চাষের খরচও।
এই মুহূর্তে আমন চাষের পরিস্থিতি কী রকম। মাঠ ঘুরে দেখা গেল কিছু আমন ফলিয়েছে। বেশিরভাগ আমন ফলাবার মুখে। এবারে আমন চাষ হয়েছে নাবি করে। শ্রাবণের শেষ ও ভাদ্র মাসের প্রথম সপ্তাহেও রোয়ার কাজ হয়েছিল। এসব নাবি আমন ফলাতে সময় লাগবে। যেসব জায়গায় সেচ দিয়ে জ্যাঠো করে আবাদ সম্ভব হয়েছিল, সেখানে আমন ফলাতে শুরু করেছে । আমন মূলত বৃষ্টিনির্ভর। সেচের অভাবে বহু ধান পুরুষ্ট হবে না।
এখন আমনে অধিক ফলনশীল জাতের ধান চাষ হচ্ছে। গাছের গোড়ায় জলের অভাব দেখা দিলে ফলনের ক্ষতি হবে। এমনিতে এখন ধানের বাজার দর বেশ চড়া। সুতরাং এবারে আমনের ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছে সব মহলেই। ফলাবার মুখে বৃষ্টি বা সেচের জলের জোগান কম হলে ধান চিটে হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ রাজ্যে আমন এখনও বেশিটাই বৃষ্টিনির্ভর। তবুও যেখানে সেচের ব্যবস্থা আছে, সেখানে জলের ঘাটতিতে সেচ প্রকল্প চালাতে হতে পারে। তবে ফলানো পর্যন্ত মঝে মাঝে একটা করে বৃষ্টি হলেই মঙ্গল। কারণ এবারে বর্ষার শেষ দিকে ভালো বৃষ্টি হয়নি। সে কারণে জলস্তরের অবস্থাও ততটা ভালো নয়। ভূগর্ভের এই জল আমনে সেচের জন্য তুলতে গেলে বিপদ হবে। টান ধরবে জলস্তরে। তখন পরের ফসলে সেচের সংকট দেখা দেবে। আমনের পরেই শুরু হবে রবি চাষ। সেখানেও সেচের জল প্রয়োজন।
এবারে আমন চাষের শুরুতে ঘোর অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল বর্ষা নিয়ে। শ্রাবণ মাসের শেষ দিকে পরপর নিম্নচাপের বৃষ্টিতে আমন রোয়া শুরু হলেও জলের ঘাটতির তকমা থেকে গিয়েছে। আমনকে এখনও অনেকটা পথ যেতে হবে। ততদিনে একটা বৃষ্টির প্রয়োজন।
- Sushmita Kundu