পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এবছর পূর্ব বর্ধমান জেলার রায়না-১ ও ২, খণ্ডঘোষ, আউশগ্রাম-১ ও ২, ভাতার, মঙ্গলকোট সহ বিস্তীর্ণ এলাকার জমির ধান শুকিয়ে যাচ্ছে। রায়না-১ ব্লকে কিষাণ মান্ডির কাছে বেশ কয়েকজন চাষি বর্ধমান-শ্যামসুন্দর রাস্তা অবরোধ করেন। মঙ্গলকোটে শুকিয়ে যাওয়া আমন ধান গোরু দিয়ে খাইয়ে দিচ্ছেন চাষিরা।
চাষের কাজে সেচের জরুরি অবস্থার জন্য ডিভিসি জলাধারে মজুত জল আজ, শুক্রবার থেকে ছাড়া হচ্ছে। তিন দিন ধরে ওই জল পাওয়া যাবে। বৃহস্পতিবার বর্ধমানে বিডিএ হলে সেচ সমস্যা মোকাবিলায় বৈঠক করেন কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন আরেক মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার, সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, সহ সভাধিপতি দেবু টুডু, বর্ধমান পূর্ব লোকসভার সদস্য সুনীল মণ্ডল, জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব ও পুলিস সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। এছাড়াও বেশ কয়েকজন বিধায়ক, বিভিন্ন ব্লকের বিডিও, সেচ ও জলপথ, কৃষি, বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আধিকারিকরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
এরকম অবস্থায় এদিন উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। সেখানে ঠিক হয়েছে, ডিভিসি জলাধারে যেটুকু জল মজুত হয়েছে, তা শুক্রবার সকাল থেকে ছাড়া হবে। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় ওই জল মজুত রাখা ছিল। এই অবস্থায় ভবিষ্যতে জলের সংকট তৈরি হলে হাহাকার শুরু হবে বলে দাবি সেচ ও জলপথ দপ্তরের অফিসারদের। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, জলসম্পদ অনুসন্ধান এবং উন্নয়ন দপ্তরের মাধ্যমে পাম্পের সাহায্যে জমিতে সেচের ব্যবস্থা করা হবে। যেখানে যেটুকু জলের সংস্থান আছে, তাকে কাজে লাগানোর উপর জোর দেওয়া হয়।
তাছাড়া বেশকিছু রাইস মিলে সাবমার্সিবল পাম্প আছে। রাইস মিল মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সেইসব পাম্প চালু করে সেচের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। শুক্রবার সকালে ডিভিসি জলাধার থেকে জল ছাড়ার পর তা সন্ধ্যা নাগাদ বিভিন্ন ক্যানেলে পৌঁছে যাবে। ২৯ তারিখ পর্যন্ত জল পাওয়া যাবে। সেই জল যাতে ক্যানেলে আটকে না রাখা হয়, সেই বিষয়টি দেখার জন্য এদিন বিধায়ককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ক্যানেলের উপরের অংশে বিভিন্ন জায়গায় জল আটকে দেওয়ার ফলে দূরবর্তী (টেল এন্ড) এলাকায় জল পৌঁছয় না। এর জন্যই দক্ষিণ দামোদর কিংবা আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট এবং ভাতারে জল পৌঁছচ্ছে না । জল যাতে কোথাও আটকে না রাখা হয়, সেদিকে প্রত্যেককে নজর রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
- রুনা নাথ
Share your comments