বাংলাদেশের ভোলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে নদী ও খালে খাঁচায় মাছ চাষ পদ্ধতি। কম পুঁজিতে বেশি লাভজনক হওয়ায় ভাসমান এ পদ্ধতিতে মাছ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা। ফলে দিন দিনই বাড়ছে চাষিদের সংখ্যা। এতে করে জেলায় বেকারত্ব দূরীকরণের পাশাপাশি মৎস্য উৎপাদনও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে অনেকের।
ভোলা সদরের চর সেমাইয়া, ভেদুরিয়া, ভেলুমিয়া, ধনিয়াসহ সাত উপজেলার নদী ও খালের মুক্ত জলাশয়ে প্রায় ১ হাজার ভূমিহীনসহ বিভিন্ন মৎস্যজীবী খাঁচায় মাছ চাষ করছেন। এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে জিআই পাইপ, ড্রাম, নেট দিয়ে তৈরি করেন খাঁচা। আর প্রতিটি খাঁচা তৈরিতে খরচ প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। প্রতিটি খাঁচায় সর্ব্বোচ ১ হাজারের মত মাছ চাষ করা যায়।
কৃষকের সাফল্যের কাহিনী:
ভোলা সদর উপজেলার চর সামাইয়া ইউনিয়নের শান্তিরহাট গ্রামের মো. হারুন অর রশিদ ও মো. সোহাগ জানান, ওই এলাকার নদীতে প্রায় ৪ বছর ধরে তারা খাঁচায় মাছ চাষ করছেন। বছরের খাঁচায় দুইবার মাছ চাষ করা যায়। প্রতিটি খাঁচায় বছরে ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকা লাভ হয়। এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে তারা বেশ লাভবান হয়েছেন। একই এলাকার মো. আবু তাহের জানান, খাঁচায় মনোসেক্স তেলাপিয়া, পাঙ্গাস, সরপুঁটি ও কার্প জাতীয় মাছ চাষ করেন করছেন তারা।
আরও পড়ুন -Govindabhog paddy farming: গোবিন্দভোগ চাষে ব্যাপক সাফল্য কালনার কৃষকদের
মো. আকতার হোসেন জানান, প্রায় ৪ বছর আগে আমরা দুইজন শান্তিহাট নদীতে কাঁচায় মাছ চাষ শুরু করি। আমাদের লাভ দেখে বর্তমানে ওই এলাকার ১০০ থেকে ১৫০ জন খাঁচায় মাছ চাষ করছেন। আমরাও লাভবান হয়েছে এবং যারা করছেন তারাও লাভবান হচ্ছেন।
মো. শাহিন জানান, তার মাছ চাষ করার অনেক বছরের ইচ্ছা। কিন্তু তার নিজের জমি ও পুকুর না থাকার কারণে সে স্বপ্ন পূরণ করতে পারছিলেন না। পরে গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার তার স্বপ্ন পূরণ করতে সহযোগীতা করেছে। তাকে খাঁচায় মাছ চাষ করার জন্য বিনা মূল্যে খাঁচা ও প্রশিক্ষণ এবং প্রাথমিক পর্যায়ে মাছের পোনা দেয়।তারপর থেকে এখন খাঁচায় মাছ চাষ করে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন। নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন।
মো. আইয়ুব আলী জানান, তার এলাকার অনেক লোক খাঁচায় মাছ চাষ করে লাভবান হয়েছেন। এজন্য তিনিও আগামী বছর থেকে খাঁচায় মাছ চাষ করার জন্য প্রায় ১২ হাজার টাকা খরচ করে জিআই পাইপ, ড্রাম, নেট দিয়ে তৈরি খাঁচা তৈরি করছেন।
গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা, পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন পিকেএসএফ এর অর্থায়নে গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা বেকারত্ব দূরীকরণ ও দেশের মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ভূমিহীন মৎস্যজীবীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বিনা মূল্যে খাঁচা বিতরণ করেছেন | এছাড়াও প্রথম পর্যায়ে তাদের ২ হাজার মনোসেক্স তেলাপিয়ার পোনা দিয়েছেন | এতে কৃষকদের প্রাথমিক পর্যায়ে খুবই সুবিধা হয়েছে এবং তাদের সাফল্য দেখে এগিয়ে এসেছেন বহু বেকার যুবক এবং অন্যান্য কৃষকরা |
আরও পড়ুন - Red ladies finger farming: লাল ঢেঁড়শ চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন মধ্যপ্রদেশের কৃষক