
বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মণ্ডৌরি খামারে গত খরিফ মরশুমে ‘রাজেন্দ্র ভাগবতী’ নামে নতুন ধরনের এক ধানের বীজ উৎপাদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খামার অধিকর্তা ড. সুধীব্রত মৈত্র। ২০১৬ সাল থেকে বিহারে এই ধানের কিছুটা চাষ হচ্ছে। এ রাজ্যেও কিছু কৃষক ওই ধানের কম-বেশি চাষ করতেন। কিন্তু কয়েকটি সরকারি কৃষি খামারে এই ধানের বীজ উৎপাদন হলেও তার পরিমাণ খুব একটা বেশি ছিল না। ফলে চাহিদা থাকলেও তা রাজ্যের সব প্রান্তের কৃষকের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে জানা গিয়েছে। এবার বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রাজেন্দ্র ভাগবতী ধানের বীজ উৎপাদন করায় আরও বেশি কৃষকের হাতে ওই ধানের বীজ তুলে দেওয়া যাবে বলে মনে করছেন কৃষিবিদরা।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, রাজেন্দ্র ভাগবতী প্রজাতির ধান উচ্চ ফলনশীল। হাল্কা সুগন্ধী। এই ধানটি দেখতে শতাব্দী ধানের মতো। তবে শতাব্দীর চেয়ে এই ধানের গাছ বড় হয়। খরিফ মরশুমে ১১২-১১৫ দিনের ফসল। শতাব্দী ধানের চেয়ে এই ধানের উৎপাদন বেশি। কিন্তু বেশি সেদ্ধ হয়ে গেলে ভাত একটু দলা পাকিয়ে যেতে পারে। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মণ্ডৌরি খামারে শতাব্দী প্রজাতির ধানের ১২০ টন বীজ উৎপাদিত হয়েছে। এর মধ্যে ৬৩ টন বীজ সরাসরি কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। এটাও খরিফ মরশুমে চাষ করতে হবে। ১১৫ দিনের ধান। এছাড়া গোটরা বিধান ১ ও ৩ নামে দু’টি ধানের ব্রিডার সিড উৎপাদন শুরু হয়েছে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মণ্ডৌরি খামারে। এই প্রজাতির ধান দেখতে একটু মোটা ও লম্বা। বিশ্ববিদ্যালয়ের খামার অধিকর্তা জানিয়েছেন, ২০১৭ সালে তাঁরা প্রথম রাজেন্দ্র ভাগবতী ধানের বীজ উৎপাদন করেন। কিন্তু সেবছর খুবই অল্প পরিমাণে হয়েছিল। পরের বছর খরিফ মরশুমে অনেকটাই বেশি পরিমাণে বীজ উৎপাদন হয়েছে। এবারও খরিফ মরশুমে তাঁরা চাষের এলাকার পরিমাণ বাড়িয়ে ওই ধানের বীজ উৎপাদন করবেন।
ধানের পাশাপাশি বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মণ্ডৌরি খামারে ডালের উন্নত প্রজাতির ৩২ টন বীজ উৎপাদন হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে মুগ, মুসুর, কলাই, অড়হর ও ছোলা। ৪৫০ বিঘায় চাষ করে ওই পরিমাণ ডালের বীজ উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন খামার অধিকর্তা। তিনি বলেছেন, রাজ্যের কৃষকদের পাশাপাশি উৎপাদিত ডালের বীজ বিহার, ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ডকে দেওয়া হয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে এই খামারে ডালের হাব গড়ে তুলতে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ওই প্রকল্পের আওতাতেই জোর দেওয়া হয়েছে ডাল বীজ উৎপাদনে।
তথ্যসূত্র: বর্তমান পত্রিকা
রুনা নাথ( runa@krishijagran.com)
Share your comments