Green House Farming: কৃষিক্ষেত্রে প্রায় নতুন নতুন পদ্ধতির উদ্ভাবন হয়ে আসছে | বর্তমানে চাষাবাদের নয়া এবং উন্নত এক পদ্ধতি হলো গ্রিন হাউজ | এই পদ্ধতিতে চাষ করতে কৃষকদের মধ্যে আগ্রহও বাড়ছে বেশ ব্যাপকভাবে | কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, অসময়েও সব্জির জোগান বেশি রাখতে ‘গ্রিন হাউস’ (Green house) পদ্ধতিতে চাষ করা শ্রেয় | তবে, অনেকের কাছে এখনো এই পদ্ধতি অধরা | তবে, জেনে নেওয়া যাক গ্রিন হাউজ পদ্ধতির বিস্তারিত |
শীতপ্রধান দেশের জলবায়ু গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের গাছপালা ও শাকসবজি জন্মানোর উপযোগী নয়। তাই সেসব দেশে গ্রীন হাউজ এর কৃত্রিম-উষ্ণ পরিবেশে শাকসবজি ও বিভিন্ন ফলের চাষ করা হয়। ভিতরের সবুজ গাছপালার কারনেই এর নাম গ্রীন হাউস। সারা বছর ধরে উন্নতমানের উদ্ভিদ ফলনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরী করাই গ্রীন-হাউস প্রযুক্তির উদ্দেশ্য। উন্নত দেশে গ্রীনহাউসে ফল, ফুল ও সবজির চাষ খুব সাধারণ বিষয়। গ্রীণ-হাউসের ফলে সারা বছর ধরে ফল, সবজি এবং ফুলের যোগান অব্যাহত থাকে।
গ্রিন হাউজ কি (Green House Farming)
গ্রিন হাউজে লোহার কাঠামোর চারিদিকে ও ছাদে স্বচ্ছ আবরণ থাকে। ১০০০ স্কোয়ার মিটার আয়তনের ‘গ্রিন হাউজ’ বানতে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা খরচ। একবার ‘গ্রিন হাউজ “ বানালে ৮-১০ বছর সহজেই চাষ করা যাবে। গ্রিন হাউজে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো ঢুকতে পারে। আবার অতিরিক্ত উত্তাপ সব্জির ক্ষতিও করতে পারে না। ফলে গরমেও সহজেই গ্রিন হাউসে সব্জি চাষ করা যেতে পারে। এই পদ্ধতিতে সব্জি চাষ করলে লাভ ভাল হবে বলেই বিশেষজ্ঞদের অভিমত। এই কাঠামোয় আলো, তাপ, কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং জলীয়-বাষ্প প্রভৃতি বিভিন্ন উপাদান, যা উদ্ভিদের বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আবদ্ধ অবস্থায় জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে গেলে উদ্ভিদের শ্বসন ও প্রস্বেদনের হার কমে যায়, ফলে উদ্ভিদের বৃদ্ধি থমকে যায়। এ অসুবিধার কথা মাথায় রেখে গ্রীন হাউজের ছাদে একাধিক জানালার ব্যবস্থা করা হয় যাতে অতিরিক্ত তাপ ও জলীয় বাষ্প বেরিয়ে যেতে পারে |
গ্রিন হাউজে উৎপাদিত সব্জি (Vegetables cultivating)
গ্রীন-হাউজে উৎপাদিত শাক-সবজির পুষ্টি মূল্য প্রাকৃতিক পরিবেশে উৎপন্ন শাক-সবজির মতো হলেও, কীটনাশক ও অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে তুলনামূলক অনেক কম আসে বলে গ্রিন-হাউজের শাক-সবজি বেশি স্বাস্থ্যকর হতে পারে। নিঃসন্দেহে গ্রীন হাউজে উৎপাদিত শাক-সবজি প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদিত শাক-সবজির পরিপূরক হতে পারে।
গ্রিন হাউজ তৈরীর খরচ
গ্রীন হাউসের প্রাথমিক কাঠামো তৈরীর খরচ নির্ভর করে যে পদার্থ কাঠামো তৈরীর জন্য ব্যবহৃত হয় যেমন জি.আই পাইপ, এম.এস অ্যাংগেল, ফাইবার গ্লাস দ্বারা দৃঢ়বদ্ধ পলিয়েস্টার, কাঁচ, অ্যাক্রিলিক প্রভৃতির উপর। এছাড়াও গ্রীন হাউজ তৈরীর খরচ নির্ভর করে আস্তরণে ব্যবহৃত পদার্থের উপর।
আরও পড়ুন - Successful farming tips: সফল কৃষিকাজের চাবিকাঠি কি? জেনে নিন কিছু টিপস
দামী পদার্থ দ্বারা গ্রীন-হাউজ তৈরী করা খরচ-সাপেক্ষ। এই সমস্যার সমাধান হিসাবে কৃষকের আর্থিক অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কম-খরচ সাপেক্ষ কাঠের তৈরী কাঠামো এবং পরীক্ষিত গ্রীন-হাউজ ব্যবহার করা যেতে পারে।
প্লাস্টিক গ্রীন-হাউজের ন্যায় প্রযুক্তি কৃষি উন্নয়নের ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরী, বিশেষ করে আমাদের দেশের বিচিত্র এবং ব্যাপ্ত কৃষি-আবহাওয়ার অবস্থার নিরিখে। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীদের ক্ষেত্রে একে সম্ভাব্য প্রযুক্তি হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে, যেহেতু এতে অনেক বেশী ফলন পাওয়া যায় এবং অসময়ের শস্য চাষ করা যায়।
আরও পড়ুন - Intercropping Agriculture: কৃষিক্ষেত্রে মিশ্র চাষের গুরুত্ব ও সুবিধা