কালো গম স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, জেনে নিন এর বিশেষত্ব হলুদ চাষের উন্নত পদ্ধতিঃ শিখে নিলেই ইনকাম হবে দ্বীগুন নারী মৎস্যজীবীদের ক্ষমতায়ন: সুন্দরবনের কুলতলীতে মহিলা মৎস্যজীবী দিবস
Updated on: 27 December, 2024 2:54 PM IST
প্রতীকী ছবি।

হলুদ আমাদের অতি পরিচিত নিত্য প্রয়োজনীয় মশলা। সুদূর অতীতকাল থেকে অর্থকরী কন্দ-জাতীয় 'পবিত্র' এই মশলার চান হয়ে আসছে। রান্নার কাজে ব্যবহার করা ছাড়াও রঙ, প্রসাধনী ও ওষুধ শিল্পে হলুদের বহুল ব্যবহার করা হয়। খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণ করার জন্যও এটি ব্যবহার করা হয়।

বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে এবং ঔষধি হিসাবে আমাদের জীবনে হলুদের গুরুত্ব অপরিসীম। সাম্প্রতিক গবেষণার জানা গেত্রে যে, ত্বক ও লিভারের নানা রোগ ছাড়াও রক্ত ক্যাম্পার, অ্যালকাইনার এমনকি সিস্টিক ফ্রাইবোসিস্ এর চিকিৎসাতে হলুদের কার্যকরী ভূমিকা আছে। হলুদ ব্যবহার করে বিস্ফোরক শনাক্তকরণের জন্য এখন গবেষণা চলছে। হলুদের রঙ এবং এর গড়ত্ব 'কারকুনিন' নামক একটি অন্ত্রক পদার্থের উপর নির্ভরশীল।

উফ ও আর্দ্র আবহাওয়া, সামান্য ভেজা ও অল্প ছায়াযুক্ত এলাকা হলুদ চাষের জন্য উপযুক্ত। আম বা নারকেল বাগনের অল্প ছায়াতে সাথী ফসল হিসাবে অনায়াসে হলুদ চাষ করা যায়। আমাদের জেলা ও রাজ্যের কৃষি আবহাওয়া এই ফসল চাষের জন্য আদর্শ। উন্নত জাত ব্যবহার করে বৈজ্ঞানিক প্রথায় এই মশলার চাষ খুবই লাভজনক।

চাষ পদ্ধতি

জমি ও মাটি নির্বাচন: উঁচু ও মাঝারি অবস্থানে জল নিকাশী ব্যবস্থাযুক্ত উর্বর দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ মাটি হলুদ চাষের উপযুক্ত। বোলানেলা অথবা অম্লপ ছায়াযুক্ত (প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছায়া) আয়গাতে এই ফসল চাষ করা যায়। প্রচুর জৈব পদার্থযুক্ত গাভীর ও সামান্য অম্লধর্মী মাটিতে চাষ করে উচ্চ ফলন ও উন্নতমানের হলুদ পাওয়া যায়।

চাষের সময়

সাধারনত চৈত্র মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে জ্যৈষ্ঠ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে (এপ্রিল-জুন) হলুদ লাগানো হয়। কাল- বৈশাখী বা গ্রীষ্মকালীন বৃষ্টিতে নাটি ভিজলে জনি তৈরী করে হলুদ বীজ কন্দ লাগানো হয়।

উন্নত জাত

পাটনাই, কৃষ্ণা, কস্তুরী প্রভৃতি জাতের পরিচিতি আছে। উন্নত ও উচ্চফলনশীল জাতের মধ্যে 'সুরঞ্জনা' জাতটি অন্যতম।

জমি তৈরী

বীজ বোনার অন্তত ১৫-২০ দিন আগে জমি তৈরী করার জন্য একবার লাঙল দিয়ে ৭-৮ দিন জমিটিকে রোদ খাওয়ানোর জন্য ফেলে রাখতে হবে। পরে ৫-৬ বার গভীর ভাবে আড়াআড়ি লাঙল ও মই দিয়ে এবং আগাছা বেছে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে । যেখম চাষের সময় জৈব সার মাটির সঙ্গে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। এরপর মূল জমিটিকে ১২০-১৫০ মিটার (৪-৫ ফুট) চওড়া ও ঢাল অনুযায়ী সুবিধা মতো লম্বা এবং ১৫ সেন্টি মিটার (৬ ইঞ্চি) উচ্চতা বিশিষ্ট কিছু কেয়ারীতে ভাগ করে নিতে হবে। চলাফেরা ও জলনিকাশের সুবিধার জন্য দুটি কেয়ারীর মধ্যে ৪৫ সেমি (১৮ ইঞ্চি) ফাঁকা জারণা রাখতে হয়।

সার প্রয়োগ পদ্ধতি

মূল সার প্রয়োগ: প্রথম চাষ দেওয়ার সময় প্রতি বিঘা জমিতে তিন টন ভালভাবে পচা ছাই মেশানো গোবর সার বা খামার জাত সার এবং কমপক্ষে ১০০ কেজি নিমখোল প্রয়োগ করা দরকার। মূলসার হিসাবে ৮ কেজি ফসফরাস (৫০ কেজি সিঙ্গল সুপার ফসফেট) এবং ৪ কেজি পটাশ (প্রায় ৭ কেজি মিউরিয়েট অব পটাশ) ঘটিত সার শেষ চাষের সময় ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। তবে সর্বদা চাষের আগে মাটি পরীক্ষার ভিত্তিতে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা উচিৎ।

জীবানু সার প্রয়োগ: রাসায়নিক সার প্রয়োগের ৬-৭ দিন পর প্রতি বিঘা জমির জন্য ১২০০ গ্রাম অ্যাজাটোব্যাক্টর ও ফসফেট দ্রাবক জীবানু সার ৮-১০ কেজি ছাই বা কেঁচো সারের সঙ্গে মিশিয়ে বিকাল বেলায় জমিতে সারি বরাবর ছড়িয়ে দিতে হবে। জিবানু সার ব্যবহার করে আগে উল্লেখ করা রাসায়নিক নাইট্রোজেন ও ফসফরাস ঘটিত সার প্রয়োগের পরিমান প্রায় ৩০ শতাংশ কমানো যাবে।

English Summary: Improved method of turmeric cultivation: Income will double if learned
Published on: 27 December 2024, 02:54 IST