ডাঙায় মাছ আর পোস্ত ছাড়া বাঙালি একই জিনিস। পোস্ত বাঁটা, কাঁচা লঙ্কা আর সর্ষের তেলের ঝাঁঝ সঙ্গে গরম ভাত, আহা, এই আনন্দের ভাগ হয় না। এই পোস্তই পাওয়া যায় আফিম থেকে।
আফিমের বীজই হল সকলের প্রিয় পোস্ত। কিন্তু মাদকতার মাত্রায় দুর্নামও আছে আফিমের। আফিমের নেশা এতটাই যে বহু দেশে এর চাষ নিষিদ্ধ। বলছি বাঙালির আবেগ পোস্ত তাহলে চাষে বাধা কেন। কালের পর্যায়ক্রমে এই পোস্ত বাঙালির প্রিয় খাবারের তালিকায় কিভাবে এল, ভারতে চাষ হয় কিভাবে এইসব প্রশ্ন কমবেশি সবার মনে। এবার উত্তরটাও প্রশ্নের সঙ্গে রেখে দিন মনে।
আরও পড়ুনঃ দু’তিন দিনেই আবহাওয়ায় ব্যাপক পরিবর্তন! হবে তুমুল বৃষ্টি
ভারতের সঙ্গে আফিমের পরিচয় যিশুখ্রীস্টের জন্মের প্রায় ৩০০ বছর আগে। আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট পরিচয় করিয়েছিলেন। তবে এই কৃষিপ্রধান দেশে আফিমের ব্যবহার ছিল শুধুমাত্র বিনোদন আর ওষুধের প্রয়োজনে। রানি এলিজাবেথ প্রথমের নির্দেশ ছিল ভারতীয় আফিম কিনে ইংল্যান্ডে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমাদের দেশের মাটির এমনই গুণ। ১৭৫৭ খ্রীস্টাব্দের পর বাংলা বিহার সহ পুরো দেশটা ব্রিটিশের দখলে চলে যায়। সেই সময় চিনেও বাণিজ্য করার চেষ্টা চলে ব্রিটিশদের কিন্তু পেরে ওঠে না।
আরও পড়ুনঃ বিষাক্ত সাপের কামড় থেকে বাঁচাবে এই উদ্ভিদ
কৃষিপ্রধান ধনী চিনের আমদানিতে কোনও আগ্রহই ছিল না। তাই মাদকতার চাহিদায় ব্রিটিশের একটাই পণ্য ছিল চিনে বিক্রি করার সেটা হল আফিম। এই নিয়ে চিনে দুবার আফিম যুদ্ধও হয়। ব্রিটিশ সরকার চিনে আফিমের রপ্তানি বাড়াতে চাপ দেয় আমাদের দেশে। ধানের চাষ ছেড়ে করো আফিম চাষ। সরকার চাষেরপুরো লাভটাই নিয়ে নিত, পড়ে থাকত আফিমের বীজ। গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে সেই আফিমের বীজই হল পোস্ত।
আরও পড়ুনঃ মহাকাশে এবার ফুলের আগমন! অবিশ্বাস্য ছবি শেয়ার করল নাসা
দেশ স্বাধীনের পরও সরকারের কড়া নিয়ন্ত্রণে ঔষধির উদ্দেশ্যে চলতে লাগল আফিমের চাষ। কারণ আফিম থেকে দুটি ক্ষতিকারক নেশাদ্রব্যের উৎপত্তি হেরোইন এবং স্মেক। আর তাই এই চাষের জন্য শর্তসাপেক্ষে লাইসেন্স পেতে হয়। গাম আফিম উৎপাদনের জন্য ভারতই একমাত্র দেশ যা জাতিসংঘের একক কনভেনশন অন নারকোটিক ড্রাগস (1961) দ্বারা অনুমোদিত।