এই 20টি ব্যবস্থা পোল্ট্রি খামারকে বার্ড ফ্লু থেকে নিরাপদ রাখবে! ভার্মি কম্পোস্ট ইউনিটের জন্য ৫০% পর্যন্ত ভর্তুকি পাওয়া যাবে, শীঘ্রই আবেদন করুন এই হাইব্রিড জাতের টমেটো 900 কুইন্টাল প্রতি হেক্টর ফলন দেবে দুধের সঠিক সময় বেছে নিলে উৎপাদন বাড়বে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
Updated on: 25 March, 2021 3:46 PM IST
Azolla Farming (Image Credit - Google)

অ্যাজোলা ফার্ন জাতীয় এক ধরণের ক্ষুদ্র জলজ উদ্ভিদ যা গ্রাম বাংলায় তেঁতুলিয়া পানা, ক্ষুদিপানা, বুটি পানা, কুটিপানা ইত্যাদি নামেও পরিচিত। এটি সাধারণতঃ ধান ক্ষেত, পুকুর, ডোবা, খাল, বদ্ধ জলাশয় ও নদীর জলে জন্মায় এবং জলের উপরিতলে সবুজ মাদুরের মতো বৃদ্ধি পায়।

অ্যাজোলা অ্যানাবিনা নামক এক প্রকার নীলাভ সবুজ শৈবালের সাথে মিথোজীবিতায় অবস্থান করে। এই শৈবাল বায়বীয় নাইট্রোজেন আবদ্ধ করতে সক্ষম এবং এর ফলে অ্যাজোলাও নাইট্রোজেন সম্বৃদ্ধ হয়ে ওঠে। তাই রাসায়নিক সারের বিকল্প হিসেবে পুকুরে সবুজ সার অ্যাজোলার ব্যবহার সার্বিক ভাবে চাষের খরচ অনেকাংশে কমিয়ে আনতে পারে। রাসায়নিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে অ্যাজোলাতে শতকরা ৩-৪ ভাগ নাইট্রোজেন, ০.২৫-৫.৫ ভাগ পটাশিয়াম, ০.৪৫-১.২৫ ভাগ ক্যালসিয়াম, ০.১৫-১.২৫ ভাগ সিলিকা, ০.১৫-১ ভাগ সোডিয়াম, ০.১৫-১ ভাগ ফসফরাস, ০.৫-০.৭৫ ভাগ ক্লোরিন, ০.২ -০.৭৫ ভাগ সালফার, ০.২৫-০.৫ ভাগ ম্যাগনেসিয়াম, ০.০৪-০.৫ ভাগ অ্যালুমিনিয়াম, ০.০৫-০.৫ ভাগ আয়রন, ৬০-২৫০০ পিপিএম ম্যাঙ্গানিজ, ২-২৫০ পিপিএম কপার ও ২৫-৭৫০ পিপিএম জিংক বর্তমান। তাই শুকনো ও কম্পোস্ট অ্যাজোলা জৈব সার হিসেবে খুবই কার্যকরী এবং লাভজনক হতে পারে।

দেখা গেছে, অ্যাজোলা প্রতিদিন প্রতি হেক্টরে এক টন কাঁচা জৈবসার তৈরি করতে পারে এবং একই সঙ্গে বাতাস থেকে ২ কেজি নাইট্রোজেন আহরণ করতে পারে যা ৫ কেজি ইউরিয়া সারের সমান। গবাদি পশু, হাঁস, মুরগির পাশাপাশি মাছের খাদ্য প্রস্তুতিতেও প্রোটিন সমৃদ্ধ অতি উত্তম উপাদান হিসেবে অ্যাজোলা ব্যবহার করা যায়। অ্যাজোলাতে ২০-২৫% প্রোটিন, ১০% অ্যাশ, ৬-৬.৫% শ্বেতসার, ৪.১-৫.৮% ফ্যাট, ৩-৩.৫% দ্রবীভূত সুগার ও ১১-২১% ফাইবার থাকায় এদেরকে শুকিয়ে গুঁড়ো করে মাছের খাবারের সাথে মিশিয়ে প্রয়োগ করা যেতে পারে। 

লাভজনক মৎস্যচাষে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা যেমন অ্যাজোলাকে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় করে তুলছে, তেমনি বিকল্প চাষ থেকে আয়ের অন্যতম উপায় হিসাবে উঠে আসছে অ্যাজোলা চাষ। অ্যাজোলা খুব দ্রুত বংশ বিস্তার করে তাই চাষ করাও খুব সহজ। অনুকূল পরিস্থিতিতে অ্যাজোলার দ্বিগুণ হতে সময় লাগে প্রায় তিন দিন। যে কোনো আকারের প্লাস্টিক বা ধাতব আধার, ড্রাম, ব্যারেল ও ট্যাঙ্কে জল পূর্ণ করে স্বল্প জায়গায় চাষ করা যায়। মাছ চাষের পুকুরের যেকোনো এক পাশে ঘের এর মতো তৈরি করে অথবা সম্ভব হলে মাছের পুকুরের পাশাপাশি ছোট কোনো পুকুরেও অ্যাজোলা চাষ করা যায়। 

আরও পড়ুন - অল্প মূলধন বিনিয়োগের মাধ্যমে গ্রামীণ যুবকরা তিলাপিয়া মাছের চাষ করে আয় করুন অতিরিক্ত

অ্যাজোলার চাষ পদ্ধতি (Azolla Farming) :

আড়াই মিটার লম্বা ও দেড় মিটার চওড়া একটি চৌবাচ্চা তৈরি করতে হবে, যার গভীরতা হবে ২৫ সেমি। প্রথমে তাতে একটি পলিথিন পেতে বেড তৈরি করতে হবে। সেখানে ৩-৪ সেন্টিমিটার পুরু করে জমির মাটি ছড়িয়ে ধীরে ধীরে জল ভর্তি করতে হবে ১০ সেমি পর্যন্ত। এর পরে ৪-৫ দিনের পুরনো গোবর ও ২০-২৫ গ্রাম সিঙ্গল সুপার ফসফেট ওই জলের সঙ্গে গুলে রাখতে হবে। পরের দিন ২০০ গ্রামের মতো অ্যাজোলা বেডের উপরে ছড়িয়ে দিতে হবে। দিন সাতেকের মধ্যে বেড ভরে যাবে অ্যাজোলায়।  অ্যাজোলা সংগ্রহ শুরু করার পর সাত দিন অন্তর বেডে ৫০০ গ্রাম পুরনো গোবর ও ১০ গ্রাম সিঙ্গল সুপার ফসফেট দিতে হবে। ছ’মাস পরে নতুন বেড তৈরি করতে হবে ও প্রতি মাসে নতুন জল ভরতে হবে।

সুতরাং, পরিবেশবান্ধব চাষ আবাদ ও স্বল্প ব্যয়ে স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে কৃষকেরা বেছে নিতেই পারেন অ্যাজোলার চাষ।

আরও পড়ুন - জলকৃষি থেকে স্থানীয় যুবক/যুবতী ব্যবসা করে খুঁজে পেতে পারেন আয়ের পথ

English Summary: Azolla farming for low cost self-Self-reliance
Published on: 25 March 2021, 03:46 IST